অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

৪ মাস ধরে নেই খাবার স্যালাইন, অনেক ঔষুধের মেয়াদ শেষ

0
unnamed
.

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী পৌরসভার পূর্ব গোমদন্ডী দত্তপাড়া থেকে ৫মাস তিনদিন বয়সের শিশু সুতপা শংকর সেনকে নিয়ে ১৯ অক্টোবর বুধবার দুপুরে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে আসেন।

বাচ্চার পাতলা পায়খানা হচ্ছে এমন সমস্যা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্হি বিভাগের টিকেট কাউন্টার থেকে ৫টাকা দিয়ে টিকেট কাটেন সুতপার মা প্রেমা।

dscn3692
.

যথারীতি লাইনে দাঁড়িয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে যান। চিকিৎসক মেট্রো সিরাপ ও খাবার স্যালাইন (ওআরএস) চিকিৎসাপত্রে লিখে দেন সাথে তা হাসপাতাল থেকে সরবারাহের জন্য দুটি টোকেনও দেন।

টোকেন নিয়ে হাসপাতালের ঔষধ কাউন্টারে গেলে ভদ্র মহিলা জানান, মেট্রো সিরাপের মেয়াদ শেষ তাই দেয়া যাবে না। এতে সুতপার মা খাবার স্যালাইন চাইলে বলা হয় তা ৪মাস ধরে সাপ্লাই(সরবরাহ) নেই। অগত্যা বাইরের ফার্মেসী থেকে কিনে বাড়ি ফিরেন সুতপার মা -এমনটাই জানালেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে ঔষধ কাউন্টারে গেলে ফার্মাসিস্ট জান্নাতুন নুর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মেট্রো সিরাপের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া গত একমাস ধরে তা রোগীদের দেয়া যাচ্ছে না। এছাড়া খাবার স্যালাইন রমজানের আগে থেকেই নেই।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রূহ্ আফরোজা সালমা বলেন, খাবার স্যালাইন সরবরাহ না থাকায় রোগীদের দেয়া যাচ্ছে না। এছাড়া অনেক ঔষুধের মেয়াদ পূর্তি ঠিক কিছুদিন আগে হসপাতালে সরবরাহ হয়। ফলেও তা হিসাবে বুঝে নিলে প্রকৃতভাবে কাজে লাগছে না।

তিনি জানান, সরকারি ঔষুধ সরবরাহে জটিলতার কারণে অনেক ঔষুধের মেয়াদ ফুরিয়ে যাচ্ছে। এব্যাপারে তিনি জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে চহিদাপত্র দিয়েছেন বলেও জানান।

তিনি আরো বলেন, হাসপাতালে বর্তমানে ডাক্তার সংকট না থাকলেও লোকবলের অভাব রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট এক্সরে মেশিন সচলের ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য-৫০ শয্যা বিশিষ্ট বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল উদ্দেশ্য-‘স্বাস্থ্য সেবা প্রদান’ হলেও অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে এলানে অনিয়ম অব্যবস্থা বাসা বেধেঁছে।

সরকারী ওয়েব সাইটে গিয়ে দেখা যায় সেখানে বোয়ালখালী স্বাস্থ্য কেন্দ্র সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য উপাত্য দেয়া হয়েছে তাতে বলা হয়-হাসপাতালের বহির্বিভাগে (ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৮-৩০ হতে ২-৩০ পর্যন্ত), জরুরী বিভাগে এবং অন্তঃবিভাগে (সব দিন এবং সবসময়)। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের চিকিৎসা পরামর্শ ছাড়া ও রোগীদেরকে কোন ফি ছাড়াই প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা যেমন রক্ত, প্রস্রাব, মল পরীক্ষা, ক্সরে, ইসিজি করা হয়।চিকিৎসার নিমিত্তে রোগীকে হাসপাতালের ওয়ার্ডে বা অন্তঃবিভাগে ভর্তি করা হয়। সব বিভাগের পরামর্শকৃত বা ভর্তিকৃত সকল রোগীকে ওষুধ সরবরাহ করা হয়।নার্স বা সেবিকার তত্ত্বাবধানে ওয়ার্ডে বা অন্তঃবিভাগে রোগীদেরকে চিকিৎসা দেয়া হয় এবং প্রতি রোগীকে দৈনিক ৭৫ টাকার পথ্য খেতে দেয়া হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিয়ন্ত্রণাধিনে ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে, ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডাক্তার ও প্যারামেডিক্স এর তত্ত্বাবধানে বহিঃবিভাগিও রোগীর চিকিৎসা সেবা দেয়া হয় এবং সীমিত পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়া ও এখানে সীমিত ওষুধ সরবরাহ ও দেয়া হয়।

ওয়ার্ড পর্যায়ে কমুনিটি ক্লিনিক গুলো থেকে সাধারণ রোগগুলোতে আক্রান্তদেরকে সীমিত চিকিৎসা সেবা দেয়া হয় এবং ওষুধ সরবরাহ করা হয়।সব পর্যায়ই থেকে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন বিবেচিত হলে উচ্চতর পর্যায়ে বা হাসপাতালে রেফার করা হয়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ কাগজে কলমে এসব উল্লেখ্য এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকলে এখানকার বাস্তব চিত্র ঠিক উল্টো।