অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

বাংলাদেশ থেকে মধু আমদানি করবে স্লোভেনিয়া

0
images
.

বাংলাদেশ থেকে মধু আমদানি করবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশ স্লোভেনিয়া। এ লক্ষ্যে দেশটি বাংলাদেশকে উন্নত প্রজাতির মৌমাছি সরবরাহের পাশাপাশি মধু উৎপাদনের জন্য প্রশিক্ষণ এবং মৌচাষিদের কারিগরি ও প্রযুক্তি সহায়তা দেবে।

বাংলাদেশ সফররত স্লোভেনিয়ার কৃষি, বন ও খাদ্য উপমন্ত্রী তানজা নিশা বুধবার শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর সঙ্গে বৈঠককালে এ কথা বলেন। শিল্প মন্ত্রণালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

আশা করা হচ্ছে, এর ফলে বাংলাদেশে উৎপাদিত বিশ্বমানের মধু স্লোভেনিয়াসহ ইউরোপের অন্য দেশগুলোতেও রপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে।

বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বেগম পরাগ, বিসিক চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখার, নয়াদিল্লীতে নিযুক্ত স্লোভেনিয়ার রাষ্ট্রদূত জোসেফ ড্রফিনিক, বাংলাদেশে স্লোভেনিয়ার অনারারি কনসাল ওয়াহিদ সালাম, বিসিকের মৌচাষ প্রকল্পের পরিচালক খোন্দকার আমিনুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে তানজা নিশা বলেন, ‘স্লোভেনিয়ায় প্রতিবছর ৩০ হাজার মেট্রিক টন মধুর চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে স্থানীয়ভাবে প্রতিবছর মাত্র ২ হাজার মেট্রিক টন মধু উৎপাদিত হয়। অবশিষ্ট চাহিদা মেটাতে স্লোভেনিয়া বাংলাদেশ থেকে মধু আমদানি করতে আগ্রহী। মৌচাষ করে বাংলাদেশের চাষিরা মধু উৎপাদনের পাশাপাশি ফসলের উৎপাদনশীলতা ক্ষেত্র বিশেষে শতকরা ১০ ভাগ থেকে ২০ ভাগ বাড়াতে পারে।’

বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে তানজা নিশা বলেন, ‘ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত স্লোভেনিয়ায় বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে আগ্রহী।’ তিনি বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক ও ওষুধ আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেন।

তিনি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে দুদেশের মধ্যে ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদলের সফর বিনিময়ের ওপর গুরুত্ব দেন। পর্যটন ও কৃষিখাতে পারস্পরিক সহায়তার ভিত্তিতে কাজ করে উভয় দেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে বলে তিনি জানান।

বৈঠকে শিল্পমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে স্লোভেনিয়ার মধু আমদানির প্রস্তাবকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্য বৈচিত্রকরণের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’

মন্ত্রী স্লোভেনিয়ার সহায়তায় মধু উৎপাদনের লক্ষ্যে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে উপস্থিত বিসিক কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন।

আমির হোসেন আমু বলেন, ‘তৈরি পোশাক শিল্পখাতে বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশের নির্মিত জাহাজ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে এবং ওষুধ বিশ্বের শতাধিক দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এ ছাড়া, বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চামড়া ও চামড়াজাতপণ্য, পাট, পাটজাত দ্রব্য, প্লাস্টিক, সিরামিক, বাইসাইকেল, সবজি, চিংড়ি, কাঁকড়াসহ হিমায়িত মৎস্য রপ্তানি হচ্ছে।’ তিনি বাংলাদেশ থেকে এসব পণ্য আমদানি করতে স্লোভেনিয়ার উপমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশে বছরে ৪ হাজার মেট্রিক টন মধু উৎপাদিত হয়। উন্নত প্রযুক্তির প্রয়োগ ও মৌচাষির সংখ্যার বাড়ালে বছরে ১ লাখ মেট্রিক টন মধু উৎপাদন সম্ভব। এ ছাড়া, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা ও রোগ-বালাই প্রতিরোধে মৌচাষের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।