অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

ওয়াসার পানির দাম বৃদ্ধি প্রতিবাদ: গণশুনানীর দাবী ক্যাবের 

0
water
.

ঢাকা ও চট্টগ্রামে ওয়াসার পানির মূল্য আগামী ১ জানুয়ারি থেকে আবাসিকে প্রতি ইউনিটে ১ টাকা ৫১ পয়সা এবং শিল্প ও বানিজ্যের ক্ষেত্রে ৩ টাকা ৭২ পয়সা বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন করার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষনকারী সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) নেতৃবৃন্দ।

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন, ওয়াসা প্রতিবছর ৫ শতাংশ হারে বাড়ানোর বিধান থাকলেও এবার আবাসিক ও শিল্প-বানিজ্যিক খাতে যথাক্রমে ১৭ ও ১৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। বৎসরে একবার দাম বাড়ানোর বিধান থাকলেও দুই দফায় বাড়ানোর কারনে আবাসিকে ২২ শতাংশ এবং শিল্প বানিজ্যে ১৮ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।

অন্যদিকে দাম বাড়ানোর আগে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পূর্বে গ্রাহকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞদের মতামত নেবার জন্য গণশুনানীর আয়োজন করা হলেও ওয়াসা গ্রাহকদের কোন প্রকার মতামত না নিয়ে একতরফা ভাবে দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া অন্যায্য ও ভোক্তা স্বার্থ বিরোধী এবং অগ্রহনযোগ্য। ওয়াসার পানির দাম বাড়ানোর খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন ওয়াসার সরবরহকৃত পানির ৮৮% গ্রাহক হচ্ছেন আবাসিক গ্রাহক।

আর ওয়াসা দিনে চাহিদার মাত্র ৪২ শতাংশ পানি সরবরাহ করতে পারে। যার কারনে নগরীর অধিকাংশ এলাকায় পানির জন্য হাহাকার। আর চট্টগ্রাম ওয়াসা পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত না করে নতুন নতুন প্রকল্পের কথা বলে নগরবাসীকে বারবার বিভ্রান্ত করছে এবং দাম বাড়ানোর কথা বলে প্রকারান্তরে ওয়াসার অভ্যন্তরে পানি চুরি, অপচয় ও মিটার রিডারদের অনিয়মকে পোয়া বারো করে দিচ্ছে। কিন্তু নগরীর অধিকাংশ এলাকায় পানির জন্য হাহাকার।

চট্টগ্রাম ওয়াসা নগরবাসীর পানির সমস্যা সমাধান না করে নতুন করে পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব কোন ভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন ক্যাব থেকে প্রতিনিয়তই দাবী করে আসছিল যে, পানি অপচয় রোধ, সরবরাহ লাইনে ত্রুটি, লিকেজ, পানির চুরি বন্ধ, বিলিং ব্যবস্থার ত্রুটি দূর না করে, সিস্টেম লস বন্ধ না করে উৎপাদন খরচ বেড়েছে বলে অজুহাতে ভোক্তাদের উপর পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব কোন ভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়। ওয়াসার অধিকাংশ গ্রাহকই সাধারন মধ্যবিত্ত ও নিন্ম আয়ের আয়ের মানুষ। আর এ শ্রেনীর মানুষ বিদ্যুৎ, গ্যাস, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবা সার্ভিসের মুল্য বৃদ্ধির যন্ত্রনায় কাতর, সেখানে নতুন করে পানির দাম বাড়ায় সাধারন মানুষের জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির মাত্রাকে আরো বাড়িয়ে দিবে। বিষয়টি কোন ভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়।

ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন, ক্যাব পানির অপচয় রোধ, সেবা সার্ভিসের অব্যবস্থাপনা রোধে গ্রাহকদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্ঠি, গ্রাহক সেবার মান ও অনিয়ম রোধে গণশুণাণীর আয়োজন করা, গ্রাহক হয়রানি রোধে তাৎক্ষনিক প্রতিকারের জন্য ডিজিটাল হেলপ ডেস্ক ও হেলপ ডেস্ক আধুনিকায়ন, দাম বাড়ানোসহ সেবার মান উন্নয়নে নীতিমালায় ভোক্তাদের অংশগ্রহন নিশ্চিতকরার দাবী করে আসলেও ওয়াসা কর্তৃপক্ষ এ পর্যন্ত কোন উদ্যোগ গ্রহন করেনি। যা বর্তমান আধুনিক বিশ্বে সুশাসন ও ন্যায্য ব্যবসার পরিপন্থি এবং একটি আদর্শ সেবা সংস্থার মডেলের বিপরীত।

নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন চট্টগ্রাম ওয়াসার পরিচালনা পর্ষদ সম্প্রতি পুনঃগঠন হয়েছে। নতুন পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্ব নিয়ে গ্রাহকদের সাথে কোন প্রকার সৌজন্যমুলক ভাবেও মতবিনিময় করার প্রয়োজন অনুভব করেনি। যা সত্যিই দুঃখজনক ও অনাকাংখিত। আর ওয়াসার পরিচালনা পর্ষদে ভোক্তাদের সত্যিকারের প্রতিনিধিত্ব না হওয়ায় পরিচালনা পর্ষদ ভোক্তাদের যন্ত্রনা, মর্ম ব্যাথা বেদনা ও আর্তনাদের ভাষা বুঝতে অক্ষম। তাই অনতিবিলম্বে ওয়াসাসহ সকল সরকারী সেবা প্রদানকারী সংস্থায় জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক ভাবে স্বীকৃত ভোক্তা সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবী জানান।

বিবৃতিতে যারা স্বাক্ষর করেন তারা হলেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসসিন সুলতানা পারু, সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা সভাপতি আবদুল মান্নান।