সীতাকুণ্ড মীরসরাইবাসী পাবেন ওয়াসার পানি!
চট্টগ্রাম নগরবাসীর পানির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এবার নগরীর বাহিরের বাণিজ্যিক ও শিল্পাঞ্চলগুলোতে পানি সরবরাহের টার্গেট নিয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। আর এই টার্গেটে রয়েছে নদীর ওপারের আনোয়ারায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং সীতাকুণ্ডের শিল্পাঞ্চল ও মিরসরাইয়ের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে পানি সরবরাহ করা। বলা যায়. ওয়াসার পানি এবার মিরসরাই পর্যন্ত যাবে।
১৯৮৭ সালে গড়ে তোলা হালদা নদীর পানি পরিশোধন করে মোহরা পানি সরবরাহ প্রকল্প স্থাপনের পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিদিন নয় কোটি লিটার পানি উৎপাদিত হচ্ছে প্রকল্পটিতে। বাকি সাত থেকে আট কোটি লিটার পানি আসতো গভীর নলকূপ থেকে। এতোদিন পর্যন্ত দিনে ১৬ থেকে ১৭ কোটি লিটার পানি নগরীতে সরবরাহ করতো ওয়াসা, যা নগরবাসীর চাহিদার মাত্র এক তৃতীয়াংশ পূরণ হতো।
গত মাস থেকে কর্ণফুলী নদীর পানি পরিশোধন করে রাঙ্গুনিয়ার পোমরায় কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের অধীনে দিনে ১২ কোটি লিটার পানি সরবরাহ শুরুর পর থেকে নগরীতে পানির সমস্যা নেই। পাম্প ছাড়াই পানি রিজার্ভ ট্যাঙ্কে চলে যাচ্ছে। তবে পানির প্রেসারে ৪০ থেকে ৫০ বছরের পুরনো পাইপগুলো ফেটে যাচ্ছে। এখনো পুরোদমে পানি সরবরাহ শুরু হয়নি।
কর্ণফুলীর প্রথম পর্যায়ের ১৪ কোটি লিটারের পর ২০২২ সালে আসছে দ্বিতীয় পর্যায় থেকে আরো ১৪ কোটি লিটার। হালদা নদীর পানি পরিশোধন করে মদুনাঘাট প্রকল্প থেকে ২০১৮ সালে আসছে আরো নয় কোটি লিটার, কর্ণফুলী নদীর পানি পরিশোধন করে ২০১৯ সালে বোয়ালখালীর ভাণ্ডারজুড়ি প্রকল্প থেকে আসছে আরো ছয় কোটি লিটার। গভীর নলকূপের পানি বাদ দিলে শুধু হালদা ও কর্ণফুলীর পানি পরিশোধন করে ওয়াসা ২০২২ সালে দিনে উৎপাদন করবে ৫২ কোটি লিটার।
বর্তমানে নগরীতে প্রায় ২৫ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হয়। তাহলে আগামীতে এতো পানি কোথায় যাবে এমন প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে নগরীর কিছু কিছু ওয়ার্ডে এখনো ওয়াসার পানির লাইন নেই। আগামীতে এসব ওয়ার্ডে পানির সংযোগ লাইন দেয়া হবে। তবে নগরবাসীর চাহিদা অনুযায়ী পানি সরবরাহের পর নগরীর বাইরের এলাকাগুলোতে পানি সরবরাহ করা হবে।’
নগরীর বাইরের কোথায় কোথায় পানি যাবে এমন প্রশ্নের জবাবে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ বলেন, ‘আনোয়ারা ও মিরসরাইয়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে। আনোয়ারায় পানি দেয়ার জন্য নদীর অপর পাড়ের বোয়ালখালীর ভাণ্ডারজুড়ি প্রকল্প হচ্ছে। সেই প্রকল্প থেকে পটিয়ার শিল্পাঞ্চল, আনোয়ারার কাফকো, সিইউএফএল এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে পানি দেয়া হবে।’
সীতাকুণ্ড ও মিরসরাইয়ে কোথা থেকে পানি দেবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, কর্ণফুলী ও মদুনাঘাট প্রকল্পের পানি শহরের চাহিদা মিটিয়ে সীতাকুণ্ড ও মিরসরাইয়ে নেয়া যাবে।
কিভাবে নেবেন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, নতুন পাইপ লাইন স্থাপন প্রকল্পের মাধ্যমে সহজেই সীতাকুণ্ডের শিল্পাঞ্চল ও মিরসরাইয়ে পানি দেয়া যাবে। আমরা সেভাবেই ওয়াসাকে তৈরি করছি।
চলেন ভাই মীরসরাই চলে যাই।
নগরীতে শতভাগ পানি নিশ্চিত করা যায়নি। মীরসরাইতে পানি! রাঙ্গুনীয়ায় ওয়াসার যে প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়ে পানি দেয়ার অপেক্ষায় রয়েছে সেটিও পানি আসলেও নগরীতে শতভাগ চাহিদা নিশ্চিত করতে পারবে না।