অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

কলকাতায় নিঃসঙ্গ জীবন কাটাচ্ছেন বেদের মেয়ে জোসনা!

0
.

‘বেদের মেয়ে জোছনা’ খ্যাত চিত্রনায়িকা অঞ্জু ঘোষ দীর্ঘদিন ধরে পর্দার আঁড়ালে। জনসমক্ষে তাকে পাওয়া যায় না। মাঝে-মধ্যে সংবাদ শিরোনামে উঠে আসে পরবাসী এই শিল্পীর নাম। অঞ্জু ভারতের কলকাতায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন এমন খবরটি সত্যি নয়। এসব খবরের অধিকাংশই থাকে কিংবদন্তি এই অভিনেত্রীর দৃষ্টির অগোচরে। তবে কিছু কিছু খবরে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অঞ্জু ঘোষ। ১ মার্চ কলকাতায় সল্টলেক রোডের বাসায় অঞ্জু ঘোষ দেখা দিলেন নির্মাতা সাইদুর রহমান সাইদকে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন চিত্রনায়ক পলাশ।

গতকাল শুক্রবার পলাশ বলেন, ‘অঞ্জু ম্যাডামের সল্টলেক রোডের বাসাটা খুব সুন্দর আর পরিপাটি। দেখে মনে হলো না যে, তিনি কষ্টে আছেন। তিনি ভালো আছেন। সাইদ স্যারকে পেয়ে ম্যাডাম যেন পুরো বাংলাদেশকে কাছে পেয়েছিলেন! এমনই আতিথেয়তা দেখেছি তার।’

পলাশ জানান, জন্মভূমির জন্য প্রায়ই মন খারাপ করেন অঞ্জু ঘোষ। অভিমান করে দেশ ছেড়েছিলেন। সেই অভিমান নিয়েই নিঃসঙ্গ জীবন-যাপন করছেন। এ ছাড়া তার আর কোনো আক্ষেপ নেই। তবে চলচ্চিত্রের সোনালি দিনগুলির কথা মনে পড়ে তার। তাদের সঙ্গে এসব নিয়ে আলোচনাও করেছেন অঞ্জু। পলাশ জানান, সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ হোক, এমনটাও চান না আলোচিত এই অভিনেত্রী। খুব ঘনিষ্ঠজন না হলে কারো সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন না অঞ্জু ঘোষ।

.

কী কারণে দেশ বা চলচ্চিত্র ছেড়েছিলেন অঞ্জু ঘোষ? স্বল্প সময়ে ক্যারিয়ারের রমরমা অবস্থা দেখে অনেকেই নাকি তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়ে। ফিল্মি পলেটিক্সের শিকার হয়েছিলেন। এক সময় বাধ্য হয়ে কলকাতায় চলে যান এমনটাই জানিয়েছেন অঞ্জু। ১৯৯৬ সালে কলকাতায় পাড়ি জমানোর পর সেখানকার মঞ্চ ও ছবিতে নিয়মিত হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখানেও ‘বাংলাদেশের শিল্পী’ বলে বাঁকা চোখে দেখা হতো তাকে। এরপরও হাল ছাড়েননি। কিন্তু এভাবে আর কতোদিন? কলকাতায় প্রায় দু’ডজন ছবিতে কাজ করেন অঞ্জু। ২০০৮ সাল পর্যন্ত যাত্রাপালায় তার ব্যাপক চাহিদা ছিলো।

২০০৪ সালের পর থেকে কলকাতার ছবিতেও চাহিদা কমলে যাত্রামঞ্চেই নিয়মিত হন তিনি। এর মধ্যে ২০০২ সালে ফের বিয়ে করেন যাত্রাশিল্পী সঞ্জীবকে। ২০০৬ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। শোনা যায়, এর আগে ১৯৮৫ সালে তার প্রেমিক চিত্রনায়ক অন্যত্র বিয়ে করলে ভেঙে পড়েন অঞ্জু। ওই বছরেই জেদের বশে বিয়ে করেন চিত্রপরিচালক এফ কবির চৌধুরীকে। সে বিয়ে টিকেছিলো মাত্র চার মাস।

১৯৮৯ সালে ‘বেদের মেয়ে জোছনা’ মুক্তি পেয়ে ব্যবসা সফল হলে আবার আশার আলো দেখতে থাকেন তিনি। মাত্র কয়েকটি ছবি ব্যবসা করলেও আগের মতো ক্রেজ ছিলো না তার। প্রেমঘটিত স্ক্যান্ডালে জড়িয়ে তার ফিল্মি ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সাইদুর রহমান সাইদ অঞ্জুকে নিয়ে ৬-৭টি ছবি তৈরি করেন। ১৯৯৫ সালে ‘নেশা’ ছবি নির্মাণ শুরু করেন। কিন্তু কাজ অসমাপ্ত রেখেই পরের বছর কলকাতা চলে যান অঞ্জু। এরপর হাতেগোনা মাত্র কয়েকবার দেশে আসেন তিনি। আসা-যাওয়ার ওই সময়টাতে তিনি সাইদের বাসাতেই থাকতেন। এই নির্মাতার স্ত্রীর সঙ্গে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক।