অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

কর্ণফুলী নদীর পাড়ে তৃতীয় দিনের মত উচ্ছেদ চলছে

0
.

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অব্যাহত রয়েছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় তৃতীয় দিনের মতো নগরীর সদরঘাট লাইটারেজ জেটি থেকে এ অভিযান শুরু হয়েছে। উচ্ছেদ চলবে মাঝিরঘাট এলাকা পর্যন্ত।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনে উচ্ছেদ অভিযানে ৭০টি অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

.

অভিযানে নেতৃত্ব দেন পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার নোবেল চাকমা ও র‌্যাব-৭-এর সহকারী পুলিশ সুপার কাজী মোহাম্মদ তারেক আজিজের নেতৃত্বে দুই শতাধিক পুলিশ ও র‌্যাব সদস্য অংশ নেন অভিযানে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন এতে।

জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ, কর্ণফুলী গ্যাস কর্তৃপক্ষ, বিআইডব্লিউটিএ ও র‌্যাব-পুলিশ-আনসার।

উচ্ছেদ অভিযানের প্রথম দিনে সোমবার ৮০টি অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়া হয় ৪ একর ভূমি। এতে দখলমুক্ত করা হয় প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা।

গত ২দিনে উচ্ছেদ করা স্থাপনার মধ্যে চাল, চিনি, লবনসহ কয়েকটি ভোগ্য পণ্যের গুদাম রয়েছে। এছাড়াও একটি উপখালের প্রবেশমুখ দখলমুক্ত করা হয়েছে।

.

উল্লেখ্য ২০১০ সালের ১৮ জুলাই পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ কর্ণফুলী নদী দখল, মাটি ভরাট ও নদীতে সব ধরনের স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনকে পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে নদীর প্রকৃত সীমানা নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। সীমানা নির্ধারণ করে ২০১৫ সালের ৯ নভেম্বর উচ্চ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে জেলা প্রশাসন। এরপর ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ কর্ণফুলী নদীর দুই তীরে গড়ে ওঠা স্থাপনা সরাতে ৯০ দিনের সময় বেঁধে দেয়।

২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এক কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। দুই বছর পরও আদালতের রায়ের কোন বাস্তবায়ন হচ্ছিল না। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বর্তমান মহাজোট সরকার নিরঙ্কুশভাবে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসলে সাবেক ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদকে একই মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী করা হয়। দায়িত্ব নেওয়ার পরই তিনি কর্ণফুলীর সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে আদালতের রায় বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তাঁর সরাসরি হস্তক্ষেপে অবশেষে দখলমুক্ত হতে চলেছে কর্ণফুলীর তীর।