অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

লোহাগাড়ায় গৃহায়ন কর্মসূচীতে ইউএনও’র পুকুর চুরি

0
.

লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ

জেলার লোহাগাড়ার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবু আসলামের বিরুদ্ধে প্রায় গৃহায়ন প্রকল্পে ১৬৪ টি ঘরে অর্ধকোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গৃহায়ন প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি ঘরে সরকার ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দিলেও ইউএনও ঘরপ্রতি ৬০ হাজার টাকা থেকে ৬৫ হাজার খরচ করে বাকী টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ করেছেন গৃহায়ন প্রকল্পে ঘর পাওয়া একাধিক লোকজন। আবার অনেকের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে ঘর প্রতি ২০ হাজার টাকা থেকে ২১ হাজার টাকা পর্যন্ত। সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ করেছেন কলাউজানের বাসিন্দা ও মুক্তিযোদ্ধা ব্রজেন্দ্র নাথ।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাকে দেয়া হয়েছে একটি টিনের রুম, একটি বারান্দা ও একটি যেনতেন বাথরুম। ঘরে ব্যবহার করা হয়েছে ২১ টি পাকা পিলার। এসব পিলারের আনুমানিক মুল্য ১২ হাজার টাকা, বাড়িতে লাগানো হয়েছে ৩২ মিলিমিটারের টিন। এসব টিনের মধ্যে ১২ পিচ ৬ ফুট ও ৪১ পিচ ৯ ফুট উচ্চতার টিন যার বাজার মুল্য মোট ২২ হাজার টাকা, চিরাই কাঠের সামগ্রী প্রায় ২০ হাজার টাকা, ঘরে নিচ তলা পাকা করণে ইট, সিমেন্ট, বালু ও অন্যান্য মিলে প্রায় ১০ হাজার টাকা এবং নির্মান শ্রমিকের দাম আনুমানিক ১০ হাজার টাকাসহ সব মিলিয়ে ৭০-৭৫ হাজার টাকা হতে পারে বলে জানিয়েছেন পরিদর্শনে যাওয়া একাদিক স্থানীয় টিনের ঘর নির্মান শ্রমিক।

মুক্তিযোদ্ধা ব্রজেন্দ্র দেবনাথ আরও বলেন, এই ঘরটি বেধে দেয়া পর্যন্ত তার নিজ পকেট থেকে গাছ ও পেরেকের জন্য দিতে হয় ১০ হাজার টাকা, লোহাগাড়া উপজেলা থেকে মালামাল আনতে গাড়িভাড়া দিতে হয়েছে ৩ হাজার টাকা, লেবার খরচ ২ হাজার টাকা, নির্মান শ্রমিকদের ৪ দিনের খাবার বাবত ৮শ’ টাকা, বালু, কংক্রিট ও সিমেন্টের জন্য ৫ হাজার টাকা। সবমিলিয়ে তার খরচ হয়েছে প্রায় ২১ হাজার টাকা।

শুনেছি সরকার প্রতিটি বাড়ির জন্য ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। অথচ আমার বাড়িতে সবমিলিয়ে খরচ করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। বাকীগুলো নিজ পকেট থেকে আমাকে খরচ করতে হয়েছে। একই এলাকার রেজিয়া বেগম বলেন, তাকে নিজের পকেট থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে, মমতাজ উদ্দীন বলেন তার খরচ হয়ে ৯ হাজার টাকা অথচ এখনও তার ঘরের কাজ অর্ধেক বাকী রয়েছে। কংক্রীট, বালু ও সিমেন্ট না থাকায় পরে করে দেবে বলে কাজ ফেলে রেখে চলে গিয়েছিল। চুনতি ইউপি চেয়ারম্যান ও চুনতি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি জয়নাল আবেদীন জনু বলেন, তার এলাকায় ১৮ টি ঘর দেওয়া হয়েছে। প্রতিটিতে ৬০-৬৫ হাজার টাকা খরচ করেছে বলে তিনি জানান।

এ প্রকল্পের অধীনে উপজেলায় নির্মিত অধিকাংশ ঘরের চিত্রই এমন। জানা গেছে, তিনি ঘর নির্মানের সবকিছু উপজেলা চত্বরেই জমায়েত করেন। সেখান থেকে যাদের ঘর দেয়া হয়েছে তাদের গাড়ী ভাড়া ও লেবার খরচ দিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছে। খোজ নিয়ে জানা গেছে, ঘর তৈরির জন্য ব্যবহৃত ইট ও বালুগুলো বিনা পয়সায় ইটভাটা ও বালু ব্যবসায়ী থেকে আদায় করেছেন।

এসব তদারকি করেছেন কক্সবাজার জেলার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কনক নামের এক ব্যক্তি।

এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু আসলাম বলেন এটা সত্য নয়। এ প্রকল্পে কোন অনিয়ম হয়নি। সরকারি বরাদ্দ অনুযায়ী যেভাবে করতে বলা হয়েছে সে ভাবে করা হয়েছে।