অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস

0
.

সবাই মিলে ভাবো, নতুন কিছু করো নারী-পুরুষ সমতার নতুন বিশ্ব গড়ো’-এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ শুক্রবার যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হচ্ছে।

দিবসটি উপলক্ষে সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৯ মার্চ শনিবার সকাল ৯ টার সময় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ ৫ জন জয়িতাকে পুরষ্কৃত করা হবে।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এক সমাবেশের আয়োজন করে ‘আমরাই পারি’ পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট। ৮ মার্চ প্রথম প্রহর ১২টা ১ মিনিটে মোমবাতি প্রজ্বালনের মাধ্যমে আমাদের আঁধার ভাঙার এ শপথে সকলের সংহতি প্রত্যাশা করে সংগঠনটি। আজ ৬৭টি নারী ও মানবাধিকার সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি বেলা আড়াইটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। ৫৮টি জেলা শহরে সহযোগী সংগঠন ও নারী সংগঠনসমূহের নেটওয়ার্ক ‘দুর্বার’ এর মাধ্যমে দিবসটি পালন করছে নারীপক্ষ। তাদের এবারের প্রতিপাদ্য ‘নারীর নাগরিক অধিকার।’

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় নারীপক্ষ কার্যালয়ের সামনে থেকে রোডশো শুরু হয়ে সকাল ১০টায় মানিক মিয়া এভিনিউতে গিয়ে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করবে। মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে রোডশো কালসী পর্যন্ত গিয়ে ফের একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে এবং রোডশোটি আশুলিয়ায় গিয়ে আরও একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত করবে। এছাড়া জাতীয় প্রেসক্লাবে বিকাল ৫টায় এক সাংবাদিক সম্মাননা ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি সকাল ১০টায় শোভাযাত্রা ও বিকাল ৩টায় আলোচনা সভা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। দিবসটি উপলক্ষে ড্যান কেক এক কনসার্টের আয়োজন করেছে। বিকাল ৪টায় রবীন্দ্র সরোবরে অনুষ্ঠিত হবে এই কনসার্ট।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দিবসটি উপলক্ষে আজ এবং আগামীকাল দেশের সব জেলা শহরে নারী উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শনী, মেলা এবং জনসচেতনতামূলক ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হবে। কর্মসূচিতে সরকারি ও বেসরকারি সংগঠন এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করবেন। দিবসটির প্রতিপাদ্য তুলে ধরে প্রদর্শন করা হবে বিল বোর্ড, ফেস্টুন ও পোস্টার। সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে।

জাতিসংঘ ১৯৭৫ সাল থেকে প্রতিবছর ৮ মার্চ তারিখে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করে আসছে। দিবসটি উদযাপনের পেছনে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ে সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মজুরি বৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কেও রাস্তায় আন্দোলনে নেমেছিলেন তৎকালীন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকরা।

পরে, ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯১০ সালে ডেনমার্কে অনুষ্ঠিত নারীদের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ৮ মার্চকে নারী দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

১৯৭৫ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসাবে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয় । জাতিসংঘ দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায়। এরপর থেকে সারা পৃথিবী জুড়েই এই দিনটি নারী দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।