অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

জেএসএস-ইউপিডিএফ’র সন্ত্রাসীরাই ৮ জনকে গুলি করে হত্যা করেছে

0
.

রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধিঃ
পার্বত্য চুক্তি বিরোধী সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এবং সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি জেএসএস এর সশস্ত্র সন্ত্রাসরাই পার্বত্য জেলা রাঙামাটির দুই উপজেলায় পৃথক সশস্ত্র হামলার ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগ।

দলটির প্রথমসারির নেতারা আজ মঙ্গলবার বেলা এগারোটার সময় দলীয় কার্যালয় সম্মুখে এই গণমাধ্যমে বক্তব্যদানকালে এই অভিযোগ করেন।

পাহাড়ের সাধারণ মানুষজনকে জেএসএস-ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত করতে শীঘ্রই পাহাগে হরতাল-অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচীর হুশিয়ারী দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের রাঙামাটি জেলার শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।

.

এদিকে বেলা সাড়ে এগারোটার সময় বিলাইছড়ি থেকে স্প্রীডবোটযোগে বিলাইছড়িতে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সুরেশ কুমার তংচঙ্গ্যার লাশ জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ের সামনে আনা হয়।  সেখান থেকে মরদেহটি এ্যাম্বুলেন্সযোগে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরন করা হয়।  এসময় কয়েকশো বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মী তাদের প্রিয় নেতাকে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক অবরোধ করে রাস্তায় বিক্ষোভ সমাবেশ করে। সমাবেশ থেকে আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, সোমবার সন্ধ্যায় সরকারী দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় বাঘাইছড়ির ফেরার পথে পার্বত্য চুক্তি বিরোধী সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র হামলা চালিয়ে অন্তত ২৭জন মানুষকে গুলিবিদ্ধ করে।

এতে সাতজন নীরিহ লোক নিহত হয়। আরো অন্তত ১৮জন গুলিবিদ্ধ হয়ে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। এই ঘটনার ২৪ ঘন্টা নাপেরোতেই আবারো সশস্ত্র হামলা চালিয়ে বিলাইছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সুরেশকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। নির্বাচনী ভোটানুষ্ঠান শেষ করে ফারুয়া থেকে বিলাইছড়ি উপজেলা সদরে ফেরার পথে মঙ্গলবার সকাল নয়টার সময় আলিখিয়ং থেকে ২শ অদূরে তিন কোনিয়া পাড়া এলাকায় এই হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা।

.

সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা এই হামলা চালিয়েছে বলে স্পষ্টভাবেই মন্তব্য করেছেন রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মূছা মাতব্বর, সহ-সভাপতি হাজী কামাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি নিখিল কুমার চাকমা।

আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ মিডিয়ার সমালোচনা করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে কারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত এটা দিনের আলোর মতো ষ্পষ্ট হলেও বারংবার মিডিয়ায় বলা হচ্ছে এটা দূর্বৃত্তদের কাজ। কেন জেএসএস-ইউপিডিএফ এর নাম লেখেন না এমন প্রশ্ন করে মূছা বলেন, সাংবাদিকরা ভয় পাচ্ছে কেন সত্য তুলে ধরতে এমন মন্তব্যও করেছেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। আ:লীগ সহ-সভাপতি নিখিল কুমার চাকমা বলেছেন, পার্বত্য এলাকায় আঞ্চলিক দলের সন্ত্রাসীরা কারা কোথায় থাকে এটা প্রশাসনসহ সকলেই জানে। আমরা বারবার অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের কথা বললেও কেউ অস্ত্র উদ্ধারে এগিয়ে আসেনা, একারনেই মাত্র ১৫ ঘন্টার ব্যবধানে পরপর দুইবার সশস্ত্র হামলা চালিয়ে বিলাইছড়ি আ’লীগ সভাপতিসহ আটজন মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে জেএসএস-ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা না নিলে শীঘ্রই হরতালসহ কঠোর কর্মসূচী দেওয়ার হুশিয়ারীও দিয়েছেন ক্ষমতাসীনদলের নেতৃবৃন্দ।

এদিকে বাঘাইছড়ি ও বিলাইছড়ির ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন, রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ছুপি উল্লাহ। তিনি জানিয়েছেন, আমরা উভয় ঘটনায় নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। কারা কারা এই ঘটনাগুলোর জড়িত এটা খতিয়ে দেখে আইনানুগ প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে বলেও জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।