অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চট্টগ্রামে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড শেষ ওয়ানডে’র টিকিট নিয়ে তেলেসমাতি!

0
14600603_1154732407951116_427915585_o
টিকেট না পেয়ে হতাশ এসব ক্রীড়ামোদি।

বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের ওয়ানডে ম্যাচ আগামীকাল ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হবে। এ ম্যাচের টিকেট অনলাইনে সহজ ডট কম নামে একটি কোম্পানীকে বিক্রির স্বত্ব দেওয়া হয়েছে। অথচ অনলাইন এখন অফলাইনে। টিকেটতো দূরে থাক সে সাইটের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে না নেটে এমন অভিযোগ সাধারণ দশর্কদের।

সচারচর টিকেট পাওয়া না গেলেও টিকেট চলে গেছে কালো বাজারিদের হাতে। কতিপয় নেতা এবং ক্রীড়া সংশ্লিষ্টারাই টিকেটে ভাগ ভাগভাটোয়ারা করে ফেলেছেন। সাধারণ ক্রীড়ামোদীরা এই টিকেট নামের সোনার হরিণের নাগাল পাচ্ছেন না।
অভিযোগ উঠেছে ঢাকা ও চট্টগ্রামের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট টিকেট কালোবাজারীর সাথে জড়িত। ঢাকা থেকে একদল লোক এসে চট্টগ্রামে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছে কেবল টিকেট কালো বাজারীর জন্য।

বিসিবির কিছু অসাধু কর্মকর্তারাও টিকেট কালোবাজারীর সাথে জড়িত বলে জানা গেছে।

চট্টগ্রাম সাগরিকা জহুর আহমদ স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণ ক্ষমতানুসারে এবার টিকেট ছাড়া হয়েছে ১৭ হাজার। অভিযোগ উঠেছে-এর মধ্যে শীর্ষ ক্রিকেট বোর্ডের একজন কর্তা তিনি আবার নগর অভিভাবক। তার পকেটে চলে গেছে ৫হাজার টিকিট। দলীয় নেতাকর্মী বন্ধু-বান্ধব স্বজনদের বিলি বন্টন ছাড়াও বেশ কিছু টিকেট কালোবাজারীর হাতে চলে গেছে।

এছাড়া পুলিশ ওয়াসা, বন্দর রেলসহ বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানে দেয়া হয়েছে টিকেট। বাদ বাকি টিকেটও কালো বাজারীদের হাতে।

এদিকে স্টেডিয়াম এলাকায় আজ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চট্টগ্রামের ক্রীড়ামোদী জনতা ভিড় করছেন একটি টিকিটের আশায়। অথচ স্বাভাবিক পথে টিকেট পাওয়া না গেলেও কয়েকগুণ বেশী দামে সহজেই মিলছে এ টিকেট। টিকেট কিনতে আসা লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অনলাইনেও চেষ্টা করে টিকেট কিংবা সাইটটির দেখা পাওয়া যায়নি। আবার এদিকে ব্যাংক কিংবা স্টেডিয়াম পাড়ার কাউন্টারগুলোতেও নেই কোন টিকেট। তাদের প্রশ্ন টিকেট গেলো কোথায়.?

এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা চলছে।

মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা ফুটবল প্রতিযোগিতার মিটিং চলাকালে সাবেক সেক্রেটারী, কাউন্সিলর, মহিলাকর্তা, ক্রিকেট সদস্য, প্রাক্তন খেলোয়াড়গণ এনিয়ে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন।

আবার তাদের মূখে হাস্যরস কথার সূরে বলতে শুনা গেল যে, বৃষ্টিই পারবে একমাত্র হতাশার (দর্শকদের) কান্না থামাতে! তাদের মত অনেকই নাকি দোয়া করছেন চট্টগ্রামে প্রবল বৃষ্টিতে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড ‘র মধ্যে ম্যাচটি পন্ড হবার জন্য । এদিকে ক্রীড়া সংস্থা নিয়ন্ত্রক কেন্দ্রের কয়েকজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদ মাধ্যমে জানান বিসিবির গাড়ীর চালক/সহকারী/ড্রাইভারদের কাছে প্রচুর টিকিট আছে। যা ৫০০/১০০০টাকা দিলেই অনায়শে পাওয়া যাচ্ছে।ঐ টিকিট গুলো মূল বিসিবি নির্ধারিত ১৫০/২০০টাকা ছিল।

শুধু সাধারণ দর্শকদের টিকিটি গায়েব নয়, চট্টগ্রামের ক্রীড়া সাংবাদিকদের পাস ইস্যূ নিয়ে চলছে তেলেসমাতি কাজ। একাধিক সাংবাদিক/ক্রীড়া সংগঠক/কাউন্সিলরদের পূর্ব নির্ধারিত বিসিবি’র ইস্যুকৃত কার্ডটিও নাকি উধাও হয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

দৈনিক সকালের খবর, ইত্তেফাক, আজাদী, প্রিয় চট্টগ্রাম,দ্য ডেইলি লাইফ, জনকন্ঠ, কর্নফুলি, দিনকাল, নিউজ বিএনএ, আইএনবি, টিভি সাংবাদিকদের মধ্যে মোহনা, এশিয়ান টিভি, বিজয় টিভি, বাংলাভিশন সহ আরো একাধিক ক্রীড়া সাংবাদিক কার্ড না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সাংবাদিকরা অভিযোগ করেন, প্রতিবাদ খেলার সময় সাংবাদিকেদের এ ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তারা অভিযোগ করেন চট্টগ্রামের কতিপয় বুর্জুয়া সাংবাদিক চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের মিডিয়াকে কুক্ষিগত করে রেখেছেন। তার ইচ্ছায় এবং তার পছন্দের সাংবাদিক ছাড়া অন্য সাংবাদিকদের কপালে প্রেসকার্ড জুটে না।

এবারে খেলার জন্য বিভিন্ন মিডিয়ার ১৪০ জন সাংবাদিকের আবেদন পাঠালেও বিসিবি মাত্র ৭০ জন সাংবাদিনের নামে পাস ইস্যূ করছে বলে সুত্র জানায়। এর মধ্যে কার্ড পেয়ে ৬৩ জন সাংবাদিক। বাকি ৭ জনের কার্ড কোথাই গেলো তার জবাব মেলেনি।

এসব ব্যাপারে জানতে ভ্যেনু ম্যানেজার ফজলে বারী খান রুবেলের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

চট্টগ্রামে বিসিবির কর্মকর্তা শাহীনের কাছে টিকিটের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে রেগে-মেগে ফোন বন্ধ করে দেন।