অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

“দলীয় প্রার্থীদের জিতাতে না পারলে সিনিয়র নেতাদের জবাবদিহী করতে হবে”

0
.

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচনের নামে এখন বাংলাদেশে যে ব্যবস্থা চলছে তা মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। ২০১০ সালের নির্বাচনের কৌশল ছিল এক রকম। এখন ভিন্ন প্রেক্ষাপট। বেগম খালেদা জিয়া এখন জেলে বন্দী। নেতা কর্মীদের নামে হাজার হাজার মামলা-হামলা, গুম, খুন ও নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়ে আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় থাকতে হচ্ছে। নির্বাচনে জিততে হচ্ছে।

তিনি আজ ৫ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে চসিক নির্বাচন উপলক্ষে কাজীদেউরীস্থ সেনা কল্যাণ কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

একটি আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে আমাদেরকে নির্বাচন করতে হচ্ছে মন্তব্য করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন,  নির্বাচনে সরকার তাদের সুবিধামত পদ্ধতি বানিয়ে নিয়েছে। এখন তারা ইবিএম মেশিন নিয়ে এসেছে, যেটা দিয়ে ভোট চুরি করা যায়। নির্বাচনী এলাকার বাহির থেকে বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে ভোট কেন্দ্রের বাহিরে ভয় প্রদর্শন করতে হয়। আর ভিতরে ব্যালট প্যানেলে ভোটাররা ফিঙ্গার প্রিন্ট দিলেই আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা ভোট দিয়ে দেয়। তবুও ৫% এর উপরে ভোট পরে না।

তিনি বলেন, আওয়ামীলীগের অবস্থা এখন খুবই করুন। আওয়ামীলীগের মতো করুন অবস্থা বিএনপি’র নয়। তাদের মত ভীত সন্ত্রস্ত বিএনপি নয়। আওয়ামীলীগ এখন ভোটের ভয়ে আছে। তাদের ভয় বেগম খালেদা জিয়া ও জনগণকে। জনগণের প্রতি তাদের আস্থা নেই। সরকারী কর্মকর্তাদের দিয়ে যে অন্যায় কাজ করাচ্ছে, তাদের সেই ভয়ও আছে। আওয়ামীলীগ সবসময় একটা আতঙ্কের মধ্যে আছে। এই যে আওয়ামীলীগের ভয়, সেই ভয়টাকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। তাই ডাঃ শাহাদাত হোসেনকে বিজয়ী করতে নেতাকর্মীদেরকে নির্বাচনের দিন পুরোপুরি প্রস্তুত থাকতে হবে।

এতে তিনি বলেন, চসিক নির্বাচনে আমাদের দলীয় নেতা কর্মীদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে নির্বাচনী কার্যক্রমে। সবাইকে কেন্দ্রে থাকতে হবে। যেখানে অন্যায় কর্মকান্ড হবে সেখানেই প্রতিবাদ করতে হবে। যার যার কেন্দ্রে দায়িত্ব নিয়ে প্রার্থীদের জিতাতে হবে। সিনিয়র নেতারা প্রার্থীদের জিতাতে না পারলে জবাবদিহী করতে হবে। আমাদেরকে সাহসিকতার সাথে নির্বাচন পরিচালনা করতে হবে।

এজেন্টদের শক্তি না থাকলে কেন্দ্রে থাকার দরকার নাই’ নির্বাচন কমিশনারের এই বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, ভোট কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টরাতো যুদ্ধ করতে যায় না। এজেন্টদের কাজতো মারামারি করা নয়। এই নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার কোন ক্ষমতায় নাই।

তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ শতভাগ আচরণবিধি ভঙ্গ করে নির্বাচন করে। আর বিএনপি শতভাগ নির্বাচন বিধি মেনে চলে। চট্টগ্রামে যদি আওয়ামীলীগ কোন আচরণ বিধি ভঙ্গ করে তাহলে আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে। কারণ নির্বাচন কমিশনের কাছে কোন বিচার নাই। তিনি আইন শৃংখলা বাহিনীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা সব দলের জন্য সমান সুযোগ দেবেন। সবার সাথে সমান ব্যবহার করবেন। যদি আইন প্রয়োগে ভারসাম্য থাকে তাহলে আমরা প্রতিবাদ করবো।

সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যতো বাধা আসুক আমরা নির্বাচনের মাঠে থাকবো। প্রয়োজনে প্রতিবাদ করবো তারপরও নির্বাচনের মাঠ ছাড়বো না। সকল অন্যায় প্রতিহত করে জয় ছিনিয়ে আনবো।

তিনি বলেন, বিএনপি যে সম্মান দেখিয়ে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে, সেই সম্মান আমি রাখবো। নগর বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে আমরা আহ্বান জানিয়েছি, ভোটকেন্দ্রে আইডি কার্ড ছাড়া কেউ যেনো ঢুকতে না পারে। এ ছাড়া আরও কিছু দাবি জানিয়েছি। আশা করি, কমিশন দাবিগুলো মানবে।

কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবের রহমান শামীম বলেন, চসিক নির্বাচনে যারা জীবন বাজি রেখে বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনকে বিজয়ী করে আনবে, তাদের বিএনপির কমিটিতে মূল্যায়ন করা হবে। জনমত বিএনপির সঙ্গে আছে। তারাই আমাদের শক্তি। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হই, তাহলে বিজয় আমাদের হবেই।

কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন বলেন, বর্তমান সরকার বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছে। বিএনপি জনগণের সেই ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য নিরন্তর সংগ্রাম করে যাচ্ছে। আর এর অংশ হিসেবেই নির্বাচনীযুদ্ধে আমরা নেমেছি। এই যুদ্ধে জনগণই আমাদের একমাত্র সঙ্গী।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বিগত দিনের সাংগঠনিক রির্পোট পেশ করে বলেন, বর্তমান অগণতান্ত্রিক সরকারের জলুম নির্যাতনের মধ্যে আমরা চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির দায়িত্ব প্রাপ্তি হওয়ার পর ১ বছরের মাথায় দীর্ঘ ২১ বছর না হওয়া মহানগর কমিটি পূর্ণাঙ্গ করেছি। ১৪টি থানা ও ৪৩টি ওয়ার্ড কমিটি গঠন করেছি। রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিবেশে আমরা ২ টি মহাসমাবেশ ২ টি কর্মীসভা ২টি প্রতিনিধি সভা করেছি। তাছাড়া প্রতিকূল পরিবেশে কেন্দ্র ঘোষিত সকল কর্মসূচিগুলো সফলভাবে সম্পন্ন করেছি।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি আবু সুফিয়ান বলেন, সরকারের জনপ্রিয়তা এখন তলানিতে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রেখে সরকার প্রতিহিংসার নগ্ন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমরা গণতন্ত্র ও নেত্রীর মুক্তি নিশ্চিত করতে রাজপথসহ সবখানেই প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্মসম্পাদক এস এম সাইফুল আলম’র পরিচালনায় বর্ধিত সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলোয়াত করেন মহানগর ওলামাদলের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুল হান্নান জিলানী। মৃত্যুবরণকারী নেতৃবৃন্দের শোক প্রস্তাব পাঠ করেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্মসম্পাদক ইয়াছিন চৌধুরী লিটন।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহ সভাপতি আলহাজ্ব এম এ আজিজ, মো: মিয়া ভোলা, শামসুল আলম, এড. আবদুস সাত্তার, হাজী মোহম্মদ আলী, সৈয়দ আজম উদ্দিন, জয়নাল আবেদিন জিয়া, নাজিমুর রহমান, আশরাফ চৌধুরী, শফিকুর রহমান স্বপন, সৈয়দ আহমদ, মাহবুবুল আলম, নাজিম উদ্দিন, এড. মফিজুল হক ভুঁইয়া, ইকবাল চৌধুরী, এড. আবদুস সাত্তার সারোয়ার, এস এম আবুল ফয়েজ, এম এ হান্নান, উপদেষ্টা সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, চবি অধ্যাপক নসরুল কদির, যুগ্ম সম্পাদক কাজী বেলাল উদ্দিন, মো: শাহ আলম, এসকান্দর মির্জা, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আবদুল মান্নান, আহামেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, জাহাঙ্গির আলম দুলাল, কাউন্সিলর মো: আবুল হাশেম, মনজুর আলম মনজু, আনোয়ার হোসেন লিপু, গাজী মো. সিরাজ উল্লাহ, কোষাধ্যক্ষ সিহাব উদ্দিন আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মনজুরুল আলম চৌধুরী মনজু, মো. কামরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক সিহাব উদ্দিন মুবিন, থানা বিএনপির সভাপতি মনজুর রহমান চৌধুরী, মামুনুল ইসলাম হুমায়ুন, মো. সালাউদ্দিন, মো: সেকান্দর, কাউন্সিলর মো. আজম, হাজী হানিফ সওদাগর, ডা. আফসার উদ্দিন, সরফরাজ কাদের রাসেল, আবদুল্লাহ আল হারুন, থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব জাকির হোসেন, আফতাবুর রহমান শাহীন, মো. সাহাবউদ্দিন, জাহিদ হাসান, মাঈন উদ্দিন চৌধুরী মাঈনু, রোকন উদ্দিন মাহামুদ, আবদুল কাদের জসিম, হাবিবুর রহমান প্রমুখ।