অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

ত্রাণের চাল বিতরণের দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে দিন: ডা. শাহাদাত

0
.

নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ডাঃ শাহাদাত হোসেনের বিবৃতি করোনা ভাইরাস সংক্রমনের এই ক্রান্তিকালে মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর মূল্য সিমাহীনভাবে বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন চসিক নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডাঃ শাহাদাত হোসেন।

আজ ১৭ এপ্রিল শুক্রবার এক বিবৃতিতে ডাঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, বর্তমানে বাজারে মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় চাউল ডাল, তেল, পিয়াজসহ খাদ্যসামগ্রীর দাম সিমাহীনভাবে বেড়ে গেছে। লকডাউনের কারণে চট্টগ্রামে কয়েক লাখ হতদরিদ্র এবং বেকার মানুষ অতিকষ্টে জীবনযাপন করছে। করোনার বিস্তার রোধে সবাই ঘরবন্দি হয়ে থাকায় দিনমজুর, ক্ষুদ্র কৃষক, শ্রমিকসহ গরিব মানুষের একটি বড় অংশ কর্মহীন। করোনা ভাইরাসের কারণে কর্মহীন দরিদ্র মানুষের জন্য সরকার যে পরিমাণ চাল বিতরণ করছে তা মোটেও পর্যাপ্ত নয়। মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসাবে যোগ হয়েছে চাল চুরির মহোৎসব। এমতাবস্থায় অবিলম্বে ত্রাণের চাল বিতরণের দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে দিয়ে দ্রুততার সাথে পরিচালনা করতে হবে।

ডাঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, করোনা ভাইরাসে থমকে আছে পৃথিবী। প্রতি সেকেন্ডে প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে এই অদৃশ্য জীবানু। করোনার সংক্রমণ ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে বাংলাদেশে। আক্রান্ত আর মৃতের সংখ্যা বাড়ছে আশংকাজনকভাবে। এক ভয়ংকর অনিশ্চয়তা ঘিরে ফেলেছে জনজীবনকে।

মানুষ এখন অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। ক্ষুধার জ্বালায় রাস্তায় পড়ে থাকছে। সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌর এলাকায় আফরোজা খাতুন নামে এক শিশু ক্ষুধার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের মতো এতো বড় মহামারির মধ্যেও ক্ষমতাসীন দলের দুর্নীতিবাজরা ত্রাণ ও স্বল্পমূল্যের চাল চুরি করছে। লোভ লালসা তাদের বিবেক-বোধকে অন্ধ করে দিয়েছে। করোনার সংক্রমন ও আওয়ামীলীগের চাল চুরি চলছে সমানতালে। এ পর্যন্ত কারো বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে এ লুটেরা গোষ্ঠী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এদের লাগাম এখনি টেনে ধরুন। না হলে জনগণ রুখে দাঁড়াতে বাধ্য হবে। জাতির এই ক্রান্তিকালে যারা গরিবের হক মেরে খায় তারা দেশের শত্রু এবং মানবতার শত্রু।

তিনি বলেন, বর্তমানে একটা ভয়াবহ অমানবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সারাদেশের চিকিৎসকগগণ তাদের জীবনের ঝুকি নিয়ে করোনা রোগিদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
কিন্তু সরকার চিকিৎসকদের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত পিপিই দিতে পারেনি। ইতিমধ্যে দুইজন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আমি এই অবস্থা থেকে বেরুনোর জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগত ও দলীয়ভাবে চট্টগ্রামে সাধ্যমতো জনগণের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। প্রতিদিন আমার পক্ষ থেকে খাদ্যসামগ্রী ও মাস্ক বিতরণ অব্যাহত রেখেছি। এটাই আমাদের প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ। বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাও তাদের সাধ্যমতো জনগণের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়েছে। পাশাপাশি শহীদ জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন এবং ড্যাব-এর উদ্যোগে চট্টগ্রামের ৫টি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই) বিতরণ করেছি। সাধ্যমতো এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

ডাঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে দলীয় স্বার্থের ঊর্ধে উঠে এই মুহূর্ত থেকেই আমাদের প্রতিটি নাগরিককে একে অপরের সহায়তায় ভূমিকা রাখা এখন সময়ের দাবি। এখন রাজনীতি করার সময় নয়। এখন দলীয় স্বার্থের ঊর্ধে উঠে মানুষের সহায়তায় হাত বাড়ানোর সময়।

আমাদের সময়মত কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ার মাশুল হিসাবে করোনা তৃতীয় ধাপ অতিক্রম করছে। কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হচ্ছে। সামনে সর্বোচ্চ সতর্ক না হলে চতুর্থ ধাপে পৌঁছালে সেটা আর সামাল দেয়া যাবে না। অকল্পনীয় পরিণতি বরণ করতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। তাই জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতাল, বেড, ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, ওষুধ ও চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। চিকিৎসকদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। সকল বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ এখনই স্থগিত করে জরুরি ভিত্তিতে স্বাস্থ্য খাতে সেই টাকা ব্যয় করতে হবে।

তিনি বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিকারী অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের শাস্তির আওতায় এনে এখনি লাগাম টেনে ধরার আহবান জানান।