অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সৌভাগ্যের রজনী আজ

0

m_12187_1462631654আজ রোববার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত। শবে বরাত শব্দটি ফার্সি, এর অর্থ সৌভাগ্যের রজনী। এ রাতে মহান আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের জন্য অশেষ রহমতের দরজা খুলে দেন। ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা পবিত্র এই রাতে নামাজ, ইবাদতবন্দেগির মধ্যে দিয়ে বিগত জীবনের ভুলভ্রান্তি ও পাপের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। একই সঙ্গে ভবিষ্যৎ জীবনে পাপ পরিহার করে শুদ্ধসুন্দর জীবন প্রার্থনা করেন।

নফল নামাজ রোজার পাশাপাশি, কুরআন তিলাওয়াত, কবর জিয়ারত, জিকির, বিশেষ দোয়া, আলোচনা ইত্যাদির মাধ্যমে রাতটি অতিবাহিত করে থাকেন। অনেকে গরিবদের মধ্যে হালুয়া রুটি, মিষ্টি ইত্যাদি বিতরণ করেন। করেন দান সদকাহ। শবেবরাত উপলক্ষে কাল সোমবার সরকারি ছুটি। শবে বরাত একটি ফারসি বাক্য। শবে অর্থ রাত। বরাত অর্থ ভাগ্য। এ জন্য অনেকে একে ভাগ্যরজনী বলে থাকেন। আবার একে অনেকে লাইলাতুল বরাতও বলে থাকেন। যার শাব্দিক অর্থমাগফিরাত বা মুক্তির রাত। পাকভারত উপমহাদেশে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে শবে বরাত পালন করা হয়। এ রাতে সবার ভাগ্য নির্ধারিত হয় এবং আল্লাহ বান্দার গুনাহ মাফ করেনএ বিশ্বাস পোষণ করা হয়।

হাদিস শরীফ থেকে জানা যায়, রাসুল (.) মধ্য শাবানের রাতে নামাজ আদায় ও দিনে রোজা রাখার তাগিদ দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনের একটি সূরায় ‘লাইলাতুল মোবারাকাহ’ শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়, যাতে বলা হয়েছেণ্ড‘এটা সে রাত যাতে প্রতিটি বিষয়ের বিজ্ঞতাপূর্ণ ও দৃঢ় সিদ্ধান্ত আল্লাহর নির্দেশে প্রকাশ করা হয়।’ (সূরা দুখান, আয়াত ৩ ও ৪ )। কোনো কোনো তাফসিরকারক এ আয়াতকে উদ্ধৃত করে সেটাকেই শবেবরাত বলে অভিমত দিয়েছেন।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা:), ইবনুল উমার (রা:), মুজাহিদ (রা:), কাতাদা (রা:), হাসান বসরী (রা: )সহ বেশির ভাগ প্রসিদ্ধ তাফসিরবিদ ‘লাইলাতুল মুবারাকাহ’ বলতে লাইলাতুল কদরকে আখ্যায়িত করেছেন, যা রমজান মাসে আসে। হাদিসে এসেছে, রাসূল (.) শাবান মাসে বেশি রোজা রাখতেন। কিন্তু উম্মতকে এ মাসে বেশি রোজা রাখতে নিষেধ করেন, যাতে রমজানের জন্য সতেজ থাকে। অবশ্য তিনি মধ্য শাবানের রাতে নামাজ আদায় করা ও দিনে রোজা রাখার তাগিদ দিয়েছেন। (ইবনে মাজা : কিতাবুল ইকামা)। তিরমিযী শরীফে এসেছে এ রাতে আল্লাহতায়ালা সর্বনিম্ন আকাশে (দুনিয়ার আকাশে) অবতরণ করেন এবং মানুষকে তাদের পাপ ক্ষমা করানোর জন্য আহ্বান জানান।

শবে বরাত উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পৃথক বিবৃতিতে মহান আল্লাহর কাছে দেশ ও জাতির উন্নতি, সমৃদ্ধি কামনা করেছেন।

বাগদাদিয়া খানকাহ্‌ শরীফ : আজ রবিবার রাত ৮টাা হতে সারারাতব্যাপী ১৬৮, জয়নগর ২নং লেইনস্থ বাগদাদিয়া খানকাহ্‌ শরীফে নফল নামাজ, ইবাদত বন্দেগী, জিকির আজকার, শবে বরাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্যের উপর আলোচনা, মিলাদমাহফিলের মাধ্যমে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও গভীর ভক্তি ও শ্রদ্ধা সহকারে সৌভাগ্যের রজনী পবিত্র শবে বরাত অনুষ্ঠিত হবে। এতে আনজুমানে আশেকানে মদিনা, আনজুমানে আশেকানে মদিনা যুব কমিটি, দরবারের ভক্তঅনুরক্তদের উপস্থিত থাকার জন্য দরবারের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

গাউসিয়া কমিটি জামাল খান : গাউসিয়া কমিটি জামাল খান ওয়ার্ড শাখার উদ্যোগে কদম মোবারক শাহী জামে মসজিদে পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে রাত ১২টায় খতমে গাউসিয়া, মিলাদ মাহফিল, রাত ১টা সালাতুজ্ব তজবী নামাজ, তাহাজ্জুদের নামাজ জামাতসহ আদায় করা হবে। উক্ত কর্মসূচিতে সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানদেরকে শরিক হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন মুহাম্মদ ইমরান হোসেন জুয়েল।

শব-ই-বরাত আতশবাজি ও পটকা ফোটানো নিষিদ্ধ:

পবিত্র শব-ই-বরাত উপলক্ষেনগরীতে সব ধরণের আতশবাজি ও পটকা ফোটানো নিষিদ্ধ করেছে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।

সিএমপি’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শব-ই-বরাত উপলক্ষে শিশু কিশোর ও অন্যান্য অনেকে আতশবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের পটকা ফোটানোর চেষ্টা করে থাকে। পটকা ফোটানোর ফলে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে ইবাদত-বন্দেগীতে বিঘ্ন ঘটে ও শব-ই বরাতের ভাবগাম্ভীর্য ক্ষুন্ন করে এবং জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য আতশবাজি ও পটকা ফোটানো বন্ধ হওয়া বাঞ্চনীয়।

এমতাবস্থায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে ২২-০৫-২০১৬ ইং দিবাগত রাত পবিত্র শব-ই-বরাত অনুষ্ঠান উপলক্ষে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশ, ১৯৭৮ এর ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতা বলে ২২-০৫-২০১৬ ইং সন্ধ্যা ৬ টা হতে ২৩-০৫-২০১৬ উং সকাল ৮টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় সকল প্রকার আতশবাজি ও পটকা ফোটানো, উৎপাদন, বিক্রয়, মজুদ ও বহন নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। আতশবাজি ও পটকা ফোটানো, উৎপাদন, বিক্রয়, মজুদ ও বহন করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।