অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

তারুণ্যের স্বপ্ন “হালিশহর ব্লাড ব্যাংক” করোনা মহামারীতেও থেমে নেই

0
.

“আমার রক্তে বাঁচবে আরোও একটি প্রাণ” এই স্লোগান নিয়ে অসহায় রোগীর জন্য রক্ত সংগ্রহ করছে মানবিক সংগঠন “হালিশহর ব্লাড ব্যাংক” ২০১৭ সালের ২রা নভেম্বর বিশ্ব রক্ত দাতা দিবসে এই সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ হয়।

দৈনিক ১০/১২ ব্যাগ রক্ত জোগাড় করে দিয়ে অসহায় মানুষের জন্য ভালোবাসার খাতায় নাম লিখেছে সংগঠনটির তরুণ যুবকরা।

২০১৭ সালের ২রা নভেম্বর প্রতিষ্ঠাতা মোশারফ মামুন, এনামুল হক চয়ন, অকৃত্রিম ঝলক, এ আর সুমনকে নিয়ে মাত্র ৪ জন মিলে শুরু করে এ মানবিক যাত্রা।  এখন সদস্য সংখ্যা দাড়িয়েছে ৪৫ জনে।

দিন-রাত পরিশ্রম দিয়ে অসহায় মানুষের জন্য রক্ত দানের কাজ করে ২০২০ সালের এ পর্যন্ত প্রায় ১১০০০ ব্যাগ এর মত মানুষের জন্য রক্ত জোগাড় করে দেওয়া হয়েছে।

.

প্রতিদিন বিভিন্ন হাসপাতালে বা বিভিন্ন ব্লাড ব্যাংকে অসহায় রোগীর রক্ত জোগাড় এর জন্য অপেক্ষাকৃত সেচ্ছাসেবী গুলো সবসময়ই প্রস্তুত।  কি দিন কি গভীর রাত, সেচ্ছাসেবী গুলো সবসময়ই প্রস্তুত।  মনের মধ্যে একটাই ভালোবাসা কোনও রোগীই যাতে রক্তের অভাবে মারা না যায়।

ফেসবুক গ্রুপ এবং ফেসবুক পেইজের মধ্যমে সংগঠন এর কাজ চলে।  বর্তমানে সংগঠন এর ফেসবুক গ্রুপ এ ৪০০০০ এর অধিক পরিমাণে মেম্বার আছে যাদের অধিকাংশই সেচ্ছায় রক্তদাতা।  এই রক্তদানের জন্য সংগঠনটি কোনও রকমের অর্থ নেয় না।  সম্পূর্ণ সেচ্ছায় এই রক্তদান।  শুধুমাত্র রোগীর স্বজন থেকে আশা যাওয়া বাবত গাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়।

মানবিক এ সংগঠন প্রতিষ্ঠাতা এডমিন মোশারফ মামুন পাঠক ডট নিউজকে বলেন, সংগঠনের অধিকাংশ সদস্য ছাত্র।  সকল সদস্যদের মাসিক কিছু চাঁদা জমা করে এই সংগঠন এর কার্যকর্ম চালানো হয়। রক্তদান ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক কাজে সবসময়ই এগিয়ে থাকে হালিশহর ব্লাড ব্যাংক।

.

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন মানুষের সহয়তা নিয়ে ফ্রী ব্লাড গ্রুপ নিণর্য় কর্মসূচী সহ বিনামূল্যে রক্তদান, রক্ত রোগ থ্যালাসেমিয়া ও গর্ভবতী মায়ের জন্য আগেই যাতে ২জন রক্ত দাতা জোগাড় করে রাখে এসব বিষয়ে সচেতন বৃদ্ধি করা হয়।  এছাড়াও বিভিন্ন এতিমখানা সহ বিভিন্ন অসহায় মানুষের জন্য খাবারের জোগান দেওয়া। শহরের বিভিন্ন জায়গায় অজ্ঞাত রোগীর জন্য সেবা সহ স্বজন এর কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজে একথাপ এগিয়ে হালিশহর ব্লাড ব্যাংক এর সদস্যরা।

হালিশহর ব্লাড ব্যাংকের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিলো মানুষের মাঝে সচেতনা বৃদ্ধি করা, রক্তদাতা বাড়ানো, বিবাহের আগে রক্ত পরীক্ষা, থ্যালাসেমিয়ে সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা।রক্ত দিলে নিজের ক্ষতি হয় না এবং মানুষের এই ভীতি দুর করা সহ বিভিন্ন মানুষের মাঝে সচেতন বৃদ্ধি করা।  মোটামুটি ৬০% এর মত আমাদের উদ্দেশ্য সফল ভাবেই আমরা করতে পেরেছি। এখনো ফান্ডের অভাবে আমাদের সংগঠন এর স্থায়ী কোনও কার্য্যলয় নেই। নেই কোনও বসার জন্য জায়গা।  নেই কোনও অফিস। তাই শহরের বিভিন্ন জায়গায় আমরা সদস্যরা গিয়ে আমাদের সংগঠন এর কাজ করি এবং মাসিক মিটিং করে থাকি। আমাদের জরুরি ভাবেই একটা অফিস ও ফান্ড দরকার। যাতে করে আমরা আমাদের হালিশহর ব্লাড ব্যাংক এর কাজের গতি আরোও বাড়িয়ে মানুষের জন্য এগিয়ে আসতে পারি। ইনশাআল্লাহ আমরা চেষ্টায় আছি।  বর্তমানে আমরা আমাদের কার্যক্রম ফেসবুকের মাধ্যমে এবং শহরের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে পরিচালিত করে থাকি।

.

এছাড়াও লকডাউনের প্রথম দিকে আমাদের সদস্যরা শহরের বিভিন্ন এলেকায় ভাগ হয়ে জীবাণুনাশক স্প্রে করে। এবং লকডাউন চলাকালীন কর্মহীন মানুষের খাদ্য সংকটে পড়ে তখন আমাদের সদস্যরা শহরের বিভিন্ন জায়গায় চাল, ডাল সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বিতরণ করে এবং মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির বাসায় পৌঁছে দেয়।এবং হালিশহরের বিভিন্ন এলাকায় ফ্রী সবজি বিতরণ করি।এবং লকডাউনে আমাদের ৫০০ ব্যাগের অধিক ব্লাড অসহায় রোগীর জন্য ম্যানেজ করে দিই। বর্তমানে কোভিড ১৯, করোনায় আক্রান্ত রোগীর জন্য এই পর্যন্ত ৩ব্যাগ প্লাজমা ডোনার জোগাড় করে দিয়ে মানুষের পাশে আছে হালিশহর ব্লাড ব্যাংক।  মানবিক এ যাত্রায় যুক্ত আছেন এডমিন বশির আহমেদ, সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত নিশানসহ এক ঝাঁক তরুন।