অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চলে গেলেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা সাব-সেক্টর কমান্ডার শওকত আলী বীর প্রতীক (ভিডিও)

0
.

যোদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও ১ নম্বর সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) শওকত আলী বীর প্রতীক আর নেই।

আজ শনিবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যায় তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

চট্টগ্রামের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থার তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে তার পারিবারিক সুত্রে।

মৃত্যুকালে মেজর শওকত আলীর বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। তিনি স্ত্রী নাসিমা বেগম। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে গেছেন। কিছুদিন ধরে হার্টের সমস্যাসহ ও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামের সিএমএইচে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

শওকত আলী বীর প্রতীক এর স্মৃতিচারনমূলক সাক্ষাতকার-

তাঁর ছেলে ইমরান মোরশেদ আলী পাঠক ডট নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, আব্বা হার্টের রোগী ছিলেন। আজ সন্ধ্যা ৫টা ৫৫ মিনিটে তিনি চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ইন্তোকাল করেছেন।

আগামীকাল রবিবার (৫ জুলাই) বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম সেনানিবাসে প্রথম জানাজা ও বাদ জোহর গরীবুল্লাহ শাহ মাজার প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।

জানাগেছে, এম আশরাফ আলী ও শিরিন আরা বেগমের ছোট ছেলে শওকত আলী। বাবা ছিলেন রেলওয়ের চিফ ট্রাফিক ম্যানেজার। তাদের আদি বাড়ি নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কট্টেশ্বর গ্রামে। কিন্তু দেশ বিভক্তের সময় আশরাফ আলীকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় চট্টগ্রাম। ফলে ছেলে শওকত আলীর জন্ম ও বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরেই।

নার্সারি থেকেই শওকত আলী লেখাপড়া করেন নগরীর সেন্ট প্ল্যাসিড হাই স্কুলে। ম্যাট্রিক পাশ করেন ১৯৬৮ সালে। অতঃপর ভর্তি হন চট্টগ্রাম গভর্মেন্ট কলেজে। ১৯৭০ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে চলে যান ঢাকায়। অনার্সে ভর্তি হন ইংলিশে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

.

৭ মার্চ, ১৯৭১। শওকত আলী তখন জিন্না হলের (বর্তমান সূর্যসেন হল) ১৫৪ নম্বর রুমে থাকেন। বন্ধুদের সঙ্গে চলে আসেন রেসকোর্স ময়দানে। খুব কাছ থেকে প্রথম দেখেন বঙ্গবন্ধুকে।

ছেলে ইমরান মোরশেদ আলী আরও জানান, মেজর শওকত আলীর গ্রামের বাড়ি নওগাঁয় হলেও, তার শেষ ইচ্ছায় চট্টগ্রামের গরীবুল্লাহ শাহ মাজার প্রাঙ্গণে দাফন করা হবে।

সংক্ষিপ্ত তথ্য

নাম : যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর প্রতীক মেজর শওকত আলী।

ট্রেনিং ও অন্যান্য: প্রথমে স্টুডেন্ট হিসেবে কাজ করেন এইট বেঙ্গল রেজিমেন্টে। মে মাসে রিক্রুট হন সেনাবাহিনীতে। অতঃপর আর্মির বেসিক ট্রেনিং চলে সাড়ে চার মাস, ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমিতে (মূর্তি)। ১২ অক্টোবর ১৯৭১ সেকেন্ড ল্যাফটেনেন্ট হিসেবে যোগ দেন সেক্টর ওয়ানে। আর্মি নম্বর ছিল বিএসএস ৭২৮।

যুদ্ধ করেছেন : এক নম্বর সেক্টরের বিভিন্ন এলাকায়।

যুদ্ধাহত : ফেনী নদীর নিকটবর্তী এলাকায় অপারেশনের সময় পাকিস্তানি সেনাদের শেল এসে পরে তাঁর সামনে। ফলে একটি স্প্রিন্টার বিদ্ধ হয় তার ডান পায়ের গোড়ালির নিচে। পরে গৌহাটি বেইজ হাসপাতালে অপারেশন করে তা বের করে আনা হয়।