অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

কুমিল্লায় মা-বাবসহ সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা: চেয়ারম্যান আটক

0
.

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের প্রতিবাদ ও নিউজ প্রকাশ করায় মুরাদনগর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল আলম চৌধুরীকে কুপিয়ে জখম করেছে শাহজাহান বাহিনীর লোকজন। এ সময় তাকে বাঁচাতে এসে ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান বাহিনীর লোকজনের হামলায় গুরত্বর আহত হয় তার বাবা অবসর প্রাপ্ত সৈনিক মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মতিন চৌধূরী ও মা ফরিদা বেগম।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহজাহান বিএসসি কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত সাত জনকে আসামি করে শরিফের বাবা অবঃ প্রাপ্ত সৈনিক মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মতিন চৌধূরী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

আহত শরিফুল আলম চৌধুরী সমকাল পত্রিকার মুরাদনগর উপজেলা সংবাদদাতা ও উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের কাজিয়াতল গ্রামের আবদুল মতিন চৌধূরীর ছেলে।

সাংবাদিকের আহত বৃদ্ধ মা বাবা।

মামলা সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুরে ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহানের লোকজন সাংবাদিক শরিফুল ইসলামের বাড়িতে ঢুকে কিছু বুঝে ওঠার আগেই জোরপূর্বক টেনে হিছড়ে তাকে ঘর থেকে বের করে বাড়ির ওঠানে আনেন। প্রথমে দা দিয়ে কুপিয়ে তাকে জখম করেন পরে হাতুরী ও লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে তার দুই হাত পা ভেঙ্গে দেয়।

এসময় দা দিয়ে তার মাথায় আঘাত করলে সে গুরুত্বর আহত হয়। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে রামদা দিয়ে তার বাবার ডান হাতে কুপ দেন এবং রডের আঘাতে তার মায়ের বাম হাত ভেঙ্গে দেয়। তখন তাদের শোর চিৎকারেও চেয়ারম্যানের লোকজনের ভয়ে কেউ এগিয়ে আসার সাহস পায়নি। পরে তাকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে আবস্থা আশংকাজনক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তার বাবা ও মা দু;জনেই মুরাদনগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মনজুর আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, উক্ত ঘটনায় জড়িত ইউপি চেয়ারম্যান শাহাজাহনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাংবাদিক শরিফকে এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় তার বাবা আবদুল মতিন চৌধুরী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে।

সাংবাদিক শরিফুলের বাবা আহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন চৌধুরী বলেন, ‘দারোরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির সংবাদ প্রকাশ করে আমার ছেলে। সেই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ছেলেকে প্রাণে শেষ করে দেয়ার জন্য হুমকি দেয় চেয়ারম্যান ও তার দলবল। শরিফের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। নিজেকে অনিরাপদ ভেবে সে একমাস বাড়ির বাইরে ছিলো। গত সপ্তাহে সে বাড়িতে আসে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শরিফ বাড়িতে আছে এ খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে চেয়ারম্যান শাহজাহানের লোকজন বাড়িতে ঢুকে তাকে টেনে হিঁচড়ে বাড়ির উঠানে আনেন। দা দিয়ে কুপিয়ে, হাতুড়ি ও লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে তার দুই হাত পা ভেঙে দেয়। দা দিয়ে তার মাথায় কোপ দিলে মগজের কিছু অংশ বেরিয়ে আসে।’

মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন চৌধুরী বলেন, ‘আমি ও তার মা তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে রামদা দিয়ে আমার ডান হাতে কোপ দেয় এবং রড দিয়ে পেটায়। তার মায়ের বাম হাত ভেঙে দেয়। আমাদের চিৎকারেও চেয়ারম্যানের লোকজনের ভয়ে কেউ এগিয়ে আসার সাহস পায়নি।’