অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

শিবির নেতার সাথে প্রেম, ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে-তালাক: অবশেষে লামার সেই ইউএনও রংপুরে বদলী

0
.

বির্তক যেন ছাড়ছে না লামার আলোচিত সেই ইউএনও বেগম নুর-এ-জান্নাত রুমিকে।  প্রেম করে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করেছিলেন সাবেক এক শিবির নেতাকে। হিন্দু নাম রুমি চক্রবর্তি পাল্টিয়ে রাখেন নুর-এ জান্নাত রুমি। সংসারে একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়ার পর থেকে প্রেমের সে সম্পর্কে ফাটল ধরে।  পরকিয়াসহ নানা বির্তর্কের পর অবশেষ স্বামী এটিএম ওমর ফারুককে তালাক দেয়ার পর দুজন দুজনের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি জিডি করে আলোচনায় এসেছে রুমি।

সে বির্তকের মধ্যে অবশেষে তাকে বান্দরবান জেলার লামা থেকে নুর-এ-জান্নাত রুমিকে রংপুর বদলি করা হয়েছে।

রবিবার ১২ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন-২ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব শেখ রাসেল হাসানের স্বাক্ষরে ১৪৭ নম্বর স্মারকে জারীকৃত এক প্রজ্ঞাপনে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বেগম নুর-এ-জান্নাত রুমি-কে ইউএনও হিসাবে রংপুর বিভাগের কোন উপজেলায় পদায়ন করে নিয়োগ দেওয়ার জন্য তাঁর চাকুরী রংপুর এর বিভাগীয় কমিশনার এর নিকট ন্যস্ত করা হয়েছে। একই আদেশে একই পদমর্যাদার আরো ২ জন বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তাকে অনুরূপভাবে বদলি করা হয়েছে।

.

প্রসঙ্গত, লামা’র ইউএনও বেগম নুর-এ-জান্নাত রুমি নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গত ১১জুলাই লামা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। গত ৭ জুলাই নিজের তালাক দেওয়া স্বামীর বিরুদ্ধে লামা থানায় তিনি এ জিডি দায়ের করেন।

ইউএনও নুর-এ-জান্নাত রুমী জিডি’তে উল্লেখ করেন, “সাংসারিক মনোমালিন্য এবং কর্মস্থলে অন্যায়ভাবে প্ররোচিত হওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রলোভনপূর্বক হুমকি ধামকি প্রদর্শন করায় এক পর্যায়ে অতিষ্ঠ হয়ে সামাজিক মর্যাদা ও ভবিষ্যৎ জীবনের কথা চিন্তা করে গত ২৪ জুন রাতে আমার স্বামী এটিএম ওমর ফারুককে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক মৌখিকভাবে তালাক দেই। এতে সে ক্ষুদ্ধ ও উত্তেজিত হয়ে আমাকে হত্যা করবে অথবা নিজে আত্মহত্যা করে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়। পরে ৬ জুলাই আমি তাকে ডাকযোগে রেজিস্টার্ড এডি সহকারে তালাকনামা প্রদান করি। তালাকনামা পেয়ে ৭ জুলাই সকাল ১০টার দিকে সে আমার লামা উপজেলা সরকারি বাসভবনে এসে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করে আমি প্রতিবাদ করলে সে আমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারতে আসে। এসময় আমার চিৎকার শুনে ঘরের কাজের বুয়া সেখানে উপস্থিত হলে কোনো রকম প্রাণে বেঁচে আমার সন্তানকে নিয়ে অন্যরুমে চলে যাই।”

.

জিডিতে আরও উল্লেখ করেন, “পরে সে সময় সুযোগ বুঝে আমাকে মেরে পঙ্গু করবে বা নিজে আত্মহত্যা করে আমাকে ফাঁসাবে এমন হুমকি দিয়ে চলে যায়। সে আমার সন্তান রাহিবকে জোরপূর্বক আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে লুকিয়ে রেখে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপহরণ মামলা করবে বলেও হুমকি দেয়। তাই এ অবস্থায় আমার সন্তানকে বাসায় রেখে কর্মস্থলে যোগদান করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং আমি নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি” বলে উল্লেখ করেন।

জানাগেছে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মেয়ে রুমি চক্রবর্তি সাবেক শিবির নেতা এটিএম ওমর ফারুক এর সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে বিয়ে করেন।  ওমর ফারুক রুবেল কক্সবাজারে পেকুয়া উপজেলার বাসিন্দা।

ইউএনও নুর-এ-জান্নাত রুমীর তালাক দেওয়া স্বামী এটিএম ওমর ফারুক বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার ও কক্সবাজার শহরের সাগরগাঁও হোটেলের জিএম জাফর আলম দিদারের পুত্র। তিনি গত ৯ জুলাই স্ত্রী রুমি বিরুদ্ধে লামা উপজেলা স্বাস্থ কর্মকর্তা মাহমুদুল হকের সাথে পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ে সংসারে অশান্তি ও সংসার ভাঙনের অভিযোগ এনে জিডি করেন।  স্বামী-স্ত্রীর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, ডিভোর্স নিয়ে বন্দরবানের লামায় টক অব দ্যা টাউন।

এ বিষয়ে লামা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মিজানুর রহমানেরর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বান্দরবানের লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর এ জান্নাত রুমী ওনার স্বামী ওমর ফারুখ রুবেলকে তালাক দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ইউএনও নূর এ জান্নাত রুমীকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ায় তিনি জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লামা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেছেন। আমরা তার নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।

এ ব্যাপারে ওমর ফারুখ রুবেলের সাথে তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।