অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

দক্ষিণ চট্টগ্রামের অর্ধশতাধিক গ্রামে একদিন আগেই আজ কোরবানির ঈদ পালিত হচ্ছে

0
.

পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
দক্ষিণ চট্টগ্রামের অর্ধশতাধিক গ্রামে একদিন আগেই আজ শুক্রবার পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন হচ্ছে।  সাতকানিয়া উপজেলার মির্জাখীল দরবার শরীফ ও চন্দনাইশ উপজেলার জাঁহাগিরিয়া শাহছুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের অনুসারীরা আরব দেশের সাথে মিল রেখে একদিন আগে রোজা শুরু করেন এবং একদিন আগেই ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করা হয়। এ দরবার শরীফের অনুসারীরা দীর্ঘ ২০০ বছর ধরে সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে এভাবে রোজা, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহার নামাজ পালন করে আসছেন।

দরবার শরীফের অনুসারীরা হানাফি মাজহাবের মতে বিশ্বের যে কোন দেশে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে প্রায় দুইশত বছর পূর্ব হতে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহাসহ সকল মুসলিম ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করে আসছে।

সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদের বাইরে কোন প্রকার ঈদ জামায়াত ছাড়া শুধুমাত্র মসজিদের ভিতরেই ৩১ জুলাই শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় চন্দনাইশের জাহাগিরিয়া শাহ্সুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফ মাঠে এবং সাতকানিয়া মির্জাখীল দরবার শরীফ মাঠে সকাল ৯টায় পৃথক পৃথক ঈদের প্রধান জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে।

জাহাঁগিরিয়া শাহ্সুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফে ঈদ জামাতে ইমামতি করবেন দরবার শরীফের পীর আলহাজ্ব মাওলানা হযরত শাহ্ছুফি সৈয়্যদ মোহাম্মদ আলী শাহ্ (মা.জি.আ.)। সাতকানিয়া দরবার শরীফে ঈদ জামাতে ইমামতি করবেন পীরজাদা মওলানা ড. মোহাম্মদ মকছুদুর রহমান।

এছাড়া দরবার শরীফ পরিচালিত শাহ্সুফি মমতাজিয়া ইমাম কল্যান সোসাইটি’র উদ্যোগে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্হানে আরও অর্ধ শতাধিক গ্রামে ঈদুল ফিতরের জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে।

দরবার সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চন্দনাইশ উপজেলার জাঁহাগিরিয়া শাহছুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের বর্তমান সাজ্জাদানশীন পীরে তরিকত হযরতুল আল্লামা শাহছুফি সৈয়দ মোহাম্মদ আলী (মঃজিঃআঃ) এর প্রদর্শিত পথে চন্দনাইশ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম দরবার শরীফের পশ্চিম পাড়া,দক্ষিণ পাড়া,পূর্ব পাড়া,শাহছুফি বাড়ি, আব্বাস পাড়া,মাঝেরপাড়া,দিঘির পাড়া,মোস্তান আলী শাহ পাড়া,শাইড়া পাড়া,আজম বাড়ী পাড়া,মাইজপাড়া, দরপ বাড়ি, কেন্দুয়া পাড়া,বাতুয়া পাড়া,রেল ষ্টেশন, হাশিমপুর, হারলা, বরমা, বরকল, মৌলভী বাজার, চন্দনাইশ পৌরসভা, ধোপাছড়ি, সাতকানিয়া উপজেলার মির্জাখীল, সোনাকানিয়া, গারাঙ্গিয়া, চরতি, মনেয়াবাদ, বাজালিয়া, কাঞ্চনা, আমিলাইশ, খাগরিয়া ও গাটিয়াডাঙ্গা, লোহাগাড়া উপজেলার কলাউজান, বড়হাতিয়া, পুটিবিলা, চুনতি ও চরম্বা, বাঁশখালী উপজেলার কালিপুর, জালিয়াপাড়া, ছনুয়া, মক্ষিরচর, চাম্বল, শেখেরখীল, ডোংরা, আনোয়ারা উপজেলার তৈলারদ্বীপ, বরুমচড়া, পটিয়া উপজেলার হাইদগাঁও,মোহাম্মদ নগর, মোল্লাপাড়া,বাহুলী, কচুয়াই, খরনা, শোভনদন্ডী ও ভেল্লাপাড়াসহ শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক অনুসারীগণ ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করবেন।

এছাড়া বোয়ালখালী, হাটহাজারী, সন্দ্বীপ, ফটিকছড়ি, আলীকদম, নাইক্ষংছড়ি, কক্সবাজার, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, হাতিয়া, নোয়াখালী, চাদঁপুর, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদি, কিশোরগঞ্জ, সিরাজগঞ্জসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা ও ভারত, পাকিস্থান, মিয়ারমারসহ বিশ্বের বিভিন্নস্থানে যেখানে মির্জাখীল দরবার শরীফের অনুসারী রয়েছেন তারাও ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করা করবে।

এ ব্যাপারে মির্জারখীল দরবার শরীফের মাওলানা আবদুর রহমান জয়নাল জানান, আমরা হানাফী মাযহাবের অনুসারী হিসেবে সৌদি আরবের মক্কা ও মদীনা শরীফে তথা আরব বিশ্বে চাঁদ দেখার সাথে মিল রেখে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করা হয়।

তিনি আরো জানান, এবার করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে সরকারের দেয়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য আমরা আমাদের অনুসারীদেরকে বলে দিয়েছি তারা যেন দরবার শরীফে এসে ভিড় না করে। যার যার এলাকায় নামাজ আদায় করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা আগামী বছর ঈদুল আজহার নামাজ একসাথে দরবার শরীফে আদায় করব বলে ভক্তদের আশ্বস্ত করেছেন তিনি। তবে এবার মসজিদের বাইরে কোন জামাত অনুষ্ঠিত হবে না। মসজিদের ভিতর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করা হবে বলে জানান এ মাওলানা।