অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চন্দনাইশ থেকে দুই ভাইকে টেকনাফে নিয়ে ক্রসফায়ারে হত্যা করে ওসি প্রদীপ

0
কথিত ক্রসফায়ারের পর এভাবে নাটক সাজায় ওসি প্রদীপ।

কক্সবাজারের টেকনাফ থানার সদ্য সাসপেন্ড হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যামামলার আসামি ওসি প্রদীপ কুমার দাশ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চনাবাদ এলাকার আজাদ ও তার ভাই ফারুককে টেকনাফ থানায় ধরে নিয়ে ফোন করে ৮ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন। টাকা দিতে না পারলে তাদের ‘ক্রসফারারে’ হত্যা করা হবে বলে হুমকিও দিয়েছিলেন।

গত ১৫ জুলাই রাতে টেকনাফের জালিয়াপাড়ায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের নামে গুলি করে হত্যা করা হয় আজাদ ও ফারুককে। তাদের হত্যা করিয়েছেন প্রদীপ কুমার দাশ। এসব অভিযোগ নিহতদের বোন আইরিন আকতারের। গতকাল আলাপকালে তিনি এ অভিযোগ করেন।

আইরিন আক্তার বলেন, তার ভাই আজাদ দীর্ঘদিন বিদেশে ছিল। গত ৬ রমজান দেশে আসে। বড়ভাই ফারুক দেশে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কাজ করতেন। পাশাপাশি তারা স্থানীয়ভাবে পেয়ারা বাগান করতেন। ফারুক ও আজাদ ইয়াবার কারবারে কখনো জড়িত ছিলনা।

আইরিন আরও বলেন, গত ১৩ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আজাদ তার এক বন্ধুর ফোন পেয়ে ঘর থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। সর্বশেষ ১৪ জুলাই রাত সাড়ে ৮টার দিকে আজাদের মোবাইল ফোন থেকে মায়ের মোবাইলে একটি মেসেজ আসে। তাতে লেখা ছিল ‘মা আমি শেষ।’

এর পরপরই তার পরিবারের পক্ষ থেকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। ১৫ জুলাই চন্দনাইশ থানায় এ বিষয়ে জিডি করতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় দুপুর ২টার দিকে ফারুকের বাসায় পুলিশ আসে। তারা বাসায় তল্লাশি চালিয়ে কিছু না পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা বলে ফারুকে নিয়ে যায় এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানায় পুলিশ; কিন্তু রাত ৮টার দিকে জানতে পারি, ১৪ জুলাই ফারুকের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় মামলা হয়েছে।

পরে টেকনাফ ও উখিয়া থানায় খবর নিয়ে জানা যায় ফারুক ও আজাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। ওইদিন রাত ১০টায় অজ্ঞাত নম্বর থেকে কল দিয়ে বলা হয় দাবিকৃত টাকা না দিলে আজাদ ও ফারুককে ‘ক্রসফায়ারে’ হত্যা করা হবে। গত ১৬ জুলাই সকাল ৭টার দিকে টেকনাফ থানা থেকে ফোন আসে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল থেকে ফারুক ও আজাদের লাশ চিহ্নিত করে নিয়ে যাওয়ার জন্য। গত ১৮ জুলাই লাশ নিয়ে এসে চন্দনাইশের কাঞ্চননগরস্থ ৬ নম্বর ওয়ার্ডে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

পরিবারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিচার বিভাগ, মানবাধিকার কমিশনের কাছে ওসি প্রদীপ কুমারের বিরুদ্ধে নিহত আজাদ ও ফারুক হত্যার বিচার দাবি করা হয়েছে। – সূত্র: আমাদের সময়