অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু

4

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হবে বুধবার। জানা যাবে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে কে যাচ্ছেন হোয়াইট হাউসে, ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন নাকি রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিনিরা বেছে নেবে পরবর্তী চার বছরের জন্য তাদের নতুন নেতা। তবে এরই মধ্যে নিউ হ্যাম্পশায়ারের উত্তরে ছোট্ট শহর ডিক্সভিল নচে অবস্থিত ছোট্ট একটি ভোটকেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন ওই কেন্দ্রের ৮ ভোটার। ওই কেন্দ্রে ৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন হিলারি। এছাড়া ট্রাম্প পেয়েছেন ২ ভোট, গের জনসন পেয়েছেন ১ ভোট। অবশিষ্ট ভোটটি দেয়া হয়েছে গতবারের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মিট রমনিকে।

screenshot_6
.

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিটে ডিক্সভিল নচে ভোটকেন্দ্রে ৮ জন নাগরিক ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ওই কেন্দ্রে ভোটার ৮ জন হলেও উপস্থিত ছিলেন শতাধিক গণমাধ্যমকর্মী। দেখা গেছে মূল নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন জনমত জরিপে হিলারি ক্লিনটনই এগিয়ে রয়েছেন। সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে হিলারি ক্লিনটন ৩ পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে সর্বশেষ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের জরিপে দেখা গেছে মার্কিন নির্বাচনে হিলারির জয়ের সম্ভাবনা ৯০ শতাংশ।

মার্কিন রাজনীতিতে হিলারি পোড়খাওয়া সদস্য। দীর্ঘ আট বছর যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি ছিলেন। বিল ক্লিনটনের সঙ্গে থেকে প্রশাসন সম্পর্কে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। এরপর মার্কিন সিনেটর নির্বাচিত হয়েছেন। অচিরেই অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সিনেটর হয়ে ওঠেন। সেই জনপ্রিয়তায় ভর করে ২০০৮ সালে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে নামলেও ওবামার কাছে হেরে যান। পরে ওবামাই হিলারিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেন। অন্যদিকে ট্রাম্প যখন রিপাবলিকান প্রার্থী হওয়ার জন্য দৌড় শুরু করেছিলেন তখন অনেকেই ঠাট্টা বলে ধরে নিয়েছিলেন। কিন্তু রিপাবলিকান প্রাইমারিতে বাঘা বাঘা প্রার্থীদের পেছনে ফেলে সেই ট্রাম্পই আজ হিলারির দুর্বার প্রতিদ্বন্দ্বী।

image-6758
.

এরই মধ্যে কয়েক বার প্রবল বিতর্কের মুখে পড়েছেন ট্রাম্প। বিতর্ক এমনই যে, রিপাবলিকানদের একটি অংশ হিলারিকেই ভোট দেবেন বলে ঘোষণা করেছেন। তার পরও ভোটের গ্রাফ বলছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।

যদিও হিলারি এবং ট্রাম্পকে মার্কিনিরা সৎ ও বিশ্বাসযোগ্য নেতা বলে মনে করেন না। এ সপ্তাহে জনমত যাচাইয়ের এক জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ৩২ শতাংশ নাগরিক হিলারিকে এবং ৩৬ শতাংশ ট্রাম্পকে সৎ ও বিশ্বাসযোগ্য হিসেবে দেখছেন। এই সংখ্যা সেপ্টেম্বর মাসের জরিপের তুলনায় বদলেছে। সেই সময়ে ৩৪ শতাংশ হিলারিকে এবং ৩৩ শতাংশ ট্রাম্পকে সৎ ও বিশ্বাসযোগ্য বলে বর্ণনা করেছিলেন। তবে ওই জরিপে দেখা গেছে যে, ৫০ শতাংশ মার্কিনি মনে করেন সংকটের সময়ে পরিস্থিতির খুব ভালো বিচার বিবেচনা করতে পারবেন হিলারিই। অন্যদিকে ট্রাম্পও তা পারবেন বলে মনে করেন ৩৬ শতাংশ।

screenshot_13
.

যুক্তরাষ্ট্রের অনেক ভোটদাতাই বিশ্বাস করতে পারছেন না যে, প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের মধ্যে এমন তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। নির্বাচনে জিততে হলে ট্রাম্পকে নেভাদা ও ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে জিততে হবে। কিন্তু আগাম ভোটের হিসেব যদি সঠিক হয়, ট্রাম্প সম্ভবত এই দুই অঙ্গরাজ্যই হারাচ্ছেন। বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম নিশ্চিত করেছে, নেভাদায় হিস্পানিকদের আগাম ভোটের পরিমাণ আগের যে কোনো সময়ের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। পলিটিকোর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এই রাজ্যের সবচেয়ে জনবহুল ক্লার্ক কাউন্টিতে হিস্পানিকদের কারণে হিলারি কমপক্ষে ৭২ হাজার ভোটে এগিয়ে আছেন। ২০১২ সালে ওবামা নেভাদায় জিতেছিলেন ৭ পয়েন্টে। ফ্লোরিডায় সমাপ্ত আগাম ভোটে প্রায় ৬২ লাখ মানুষ ভোট দিয়েছেন, যার ১০ লাখ ভোটার হলেন হিস্পানিক। একজন নির্বাচনী পরিসংখ্যান বিশারদ জানিয়েছেন, তার হিসাব অনুযায়ী এই হিস্পানিক ভোটারদের এক-তৃতীয়াংশই এ বছর প্রথমবারের মতো ভোটে অংশ নিচ্ছেন। রবিবার প্রকাশিত এনবিসি/ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সর্বশেষ জাতীয় জনমত জরিপে চার পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন হিলারি। ভাবা হচ্ছে, এই ব্যবধান যদি বজায় থাকে, তাহলে ডেমোক্র্যাটরা সম্ভবত সিনেটে তাদের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাবেন।

florida1477368064-300x250
.

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে বারাক ওবামা পর্যন্ত ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্টদের অর্থনৈতিক মন্দার হার ছিল গড়ে ৩ দশমিক ৩ মাস। অন্যদিকে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন গড় অর্থনৈতিক মন্দা ছিল ১৩ দশমিক ৮ মাস। বেকারত্বের হার কমাতেও এগিয়ে আছেন ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্টরা। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন বেকারত্বের হার গড়ে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ হারে কমেছে। অন্যদিকে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন বেকারত্বের হার বেড়েছে ১ দশমিক ১ শতাংশ। দেশটিতে বেকারত্বের হার ৫ শতাংশের কাছাকাছি। তাই এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটারদের কাছে কর্মসংস্থান একটা বড় বিষয়। এ ব্যাপারে দু’জনই সজাগ থাকলেও ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারির মতো তেমন কোনো পরিকল্পনা নেই ট্রাম্পের। তার নীতিতে ধনী মার্কিনদের বিষয়ে কিছুটা দুর্বলতা রয়েছে। তবে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য কর ছাড় দিতে চান দু’জনই।

কিন্তু এ সব কিছু মিলিয়েও ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা হিলারির চেয়ে কম বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া, ইলিনয়, কলোরাডোর মতো বড় রাজ্যগুলোতে যদি প্রত্যাশা মাফিক হিলারি জেতেন, তাহলে দক্ষিণের রক্ষণশীল রাজ্যগুলোয় যেমন- টেক্সাস, জর্জিয়া, ফ্লোরিডায় ট্রাম্প জিতলেও ম্যাজিক নম্বর অর্থাৎ ২৭২ ইলেক্টোরাল ভোট পেতে হিলারিকে তেমন বেগ পেতে হবে না।

৪ মন্তব্য
  1. সহিদুল ইসলাম বলেছেন

    আমরা ভোট দিতে এসেছি,আপনি আসলে কোরাম পূর্ন হয় 😛

  2. Saiful Islam Shilpi বলেছেন

    তুমি তো আবার সাগরের মত ৩টা ভোট দিয়া দিবা..

    1. সহিদুল ইসলাম বলেছেন

      কনকি??সাগর তিন নাম্বার লোক তিনটা ভোট দিতেই পারে!!আপনে এক নাম্বার হই জানলেন ক্যামনে???

    2. Saiful Islam Shilpi বলেছেন

      মানুষের খবর জানাইতো আমার কাজ..