অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

কর্ণফুলীতে সেতু নির্মাণে ধীরগতি, যানজট ধুলাবালিতে নাকাল এলাকাবাসী

0
নির্মাণাধীন সেতু

.জে, জাহেদঃ

চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে সড়ক ও জনপদ বিভাগের অধীনে একটি সেতু নির্মাণে ধীর গতিতে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে। চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের খোয়াজনগর খালের উপরে অবস্থিত সেতুটির সংস্কার কাজের কারণে সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকা পড়ে যাত্রী ও যানবাহনের চালকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পাশাপাশি বহু মিল কারখানার পণ্য পরিবহনেও অতিরিক্ত সময় নষ্ট হচ্ছে।

উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এ সেতুটি দ্রুততার সাথে সংস্কার কাজ না করায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। বিশেষ করে ধুলো-বালিতে নাকাল হচ্ছেন শিশু-কিশোরেরা। বাড়ছে নানা রোগ বালাই। বয়স্করাও শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। কবে নাগাদ সেতুর সংস্কার কাজ শেষ হবে এনিয়ে হতাশায় স্থানীয়রা।

জানা গেছে, প্রতিদিন মইজ্জ্যারটেক-পুরাতন ব্রিজঘাট সড়ক দিয়ে উপজেলার বড়উঠান, শিকলবাহা, চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামের হাজার হাজার জনসাধারণ শহরে যাতায়াত করে থাকেন। এমনকি চলমান সংস্কার সেতুর পাশে খালের উপর বসানো স্ট্যান্ডের (অস্থায়ী স্টীল সেতু) মাধ্যমে কয়েক শতাধিক সিএনজি অটোরিকশা চলাচলের পাশাপাশি, ব্যাটারীচালিত টমটম, অটো রিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে।

সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের মে মাসে শুরু হওয়া এ প্রকল্পে সড়ক ও সেতু সংস্কার কাজ প্রায় ১৯ মাস অতিবাহিত হয়েছে।
কার্যাদেশ পেয়ে জয়েন বেঞ্চে এ প্রকল্পের কাজ করছে তিনটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান-রানা বির্ল্ডাস প্রাইভেট লিঃ, হাসান টেকনো বিল্ডার্স লিঃ ও সালেহ আহমেদ জে.বি।

খোয়াজনগর এলাকার হাজী আব্দু শুক্কুর জানান, অনেকদিন ধরে রাস্তার কাজ চলছে, দুদিন কাজ হয়।কিছুদিন কাজ বন্ধ থাকে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাদের যখন মন চায় তখনই কাজ করে। বাকিটা সময় কাজ বন্ধ করে রাখে। এতে তীব্র ধুলাবালিতে চলাচল করতে অনেক কষ্ট হয়।

তানভীর নামের আরেক শিক্ষার্থী জানান, প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরে সেতুর কাজ চলছে, কিন্তু শেষ হচ্ছে না এর ফলে যাতায়াত করতে আমাদের খুব কষ্ট হয়। ধুলাবালিতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। কাজের গতি দেখে বুঝা যাচ্ছে না, কবে শেষ হবে।

কর্ণফুলী এলাকার প্রকৌশলী মো. ইসমাইল হোসেন জানান, ‘সড়ক নির্মাণের সময় বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর সাথে জনপ্রতিনিধিদের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকে। তাদেরই উচিত ঠিকাদারদের দিয়ে সবচেয়ে ভালো কাজটি আদায় করে নেয়া। নজরদারি যদি সঠিকভাবে না হয়, তাহলে ঠিকাদার ফাঁকিবাজি বা নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের সুযোগ নিতে পারে।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দোহাজারী সড়ক ও জনপদ বিভাগের পটিয়া উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সাফায়াত বিন রশিদ বলেন, ‘জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে সেতু দুটির কাজ সম্পন্ন করার জন্য আমরা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে চাপ দিচ্ছি যাতে দ্রুত কাজটি সম্পন্ন করে। আশা করি যথাসময়ে কাজ সম্পন্ন হবে।’

প্রকল্প প্রস্তাবনা ও সওজ তথ্য সুত্রে জানা যায়, বৃহৎ এ প্রকল্পে উপজেলার মইজ্জ্যারটেক (বীর মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু) চত্বর থেকে পুরাতন ব্রিজঘাট ফেরিঘাট সড়ক-বিএফডিসি সড়ক-আরবান আলী সড়ক পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার সড়কের দুপাশে প্রশস্ত করা হয়েছে।

এ সড়কে থাকা দুটি পাকিস্থান আমলের পুরাতন সেতু ভেঙে নতুন ভাবে পাকা নির্মাণ করার কাজ চলছে। সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ৩২ মিটার ও ৩৬ মিটার, প্রস্থ ১০ দশমিক ২৫ মিটার। সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার এ সড়কের প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা (প্রায়)। যে প্রকল্পের কাজের সময়সীমা বেধে দেওয়া হয়েছে আগামী ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।