অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

লকডাউনের প্রতিবাদে চট্টগ্রামজুড়ে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ

0
.

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশব্যাপী ঘোষিত এক সপ্তাহের লকডাউনের প্রতিবাদে এবার রাস্তায় নেমেছে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা।

আজ সোমবার (৫ এপ্রিল) বিকেল ৩টা থেকে নগরীর নিউমার্কেট রেয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন কয়েক হাজার ব্যবসায়ীরা ও শ্রমিক কর্মচারী। এসময় তারা লকডাউন বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

লকডাউনের বিরোধিতা করে বক্তব্য দিচ্ছেন তামাকুমুন্ডিল্ল লেন বণিক সমিতির নেতারা।

এছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলাতেও বিক্ষোভ সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ করেছে ব্যবসায়ীরা। তারা সরকারের কাছে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবী জানান।

.

ব্যবসায়ীরা ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, লকডাউনের নামে সরকার ব্যবসায়ীদের মারার ব্যবস্থা করেছে। সব অফিস আদালত খোলা, গার্মেণ্টস খোলা, বইমেলা খোলা, খেলাধুলাও হচ্ছে, শুধু ব্যবসায়ীদের জন্য লকডাউন? সারাদেশে লক্ষ লক্ষ দোকানে কয়েক কোটি ব্যবসায়ী-কর্মচারী কাজ করে, তাদের পরিবার কিভাবে চলবে সে চিন্তা সরকারের নেই। করোনায় মরার চেয়ে না খেয়ে মরার কষ্ট অনেক বেশি।

জানা গেছে, বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রামের বৃহত্তম মার্কেট রেয়াজুদ্দিন বাজার, তামাকুমন্ডি লেনের ব্যবসায়ীরা তিনপুলের মাথার সামনে থেকে প্রতিবাদ মিছিল বের করেন। মিছিলটি হকার মার্কেটের সামনে দিয়ে নিউমার্কেট মোড়ে গিয়ে মানববন্ধনে মিলিত হয়। মানববন্ধনে নিউমার্কেট, মিমি সুপার মার্কেট, স্যানমার ওশান সিটি, আমিন সেন্টারসহ বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা যোগ দেন। মানববন্ধনে অংশ নেয়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিভিন্ন মার্কেটের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক পৃথকভাবে বক্তব্য প্রদান করেন।

সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দোকান-পাট খোলা রাখার দাবি জানিয়ে মানববন্ধন ও সমাবশে করেন তামাকুমন্ডি লেইন বণিক সমিতির নেতারা। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, তামাকুমন্ডি লেইন বণিক সমিতির সভাপতি আবু তালেব, সিনিয়র সহ সভাপতি সরওয়ার কামাল, সাধারণ সম্পাদক আহমদ কবির দুলাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুজাম্মেল হক প্রমুখ।

বিপনী বিতান বণিক সমিতির সভাপতি সাগির আহমেদ বলেন, ‘আমরাও মানববন্ধনে অংশ নিয়েছি। আমাদের পেটে লাথি না দিয়ে সরকারের প্রতি অনুরোধ আমাদের মত ব্যবসায়ীদের বাঁচান। লকডাউনে দোকান খুলতে না পারলে আমাদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে।’

টেরি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমরা মানববন্ধনে অংশ নিইনি। তবে আমরা জেলা প্রশাসক মাধ্যমে সরকারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছি। আমরা দাবি জানিয়েছি, লকডাউনে রাতে দোকান খোলা রাখতে না পারলেও সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার অনুমতি দেয়া হোক।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সারাবছর অপেক্ষা করি এই ঈদ মওসুমের জন্য। এ মৌসুমে আমরা মালামাল বিক্রি করতে না পারলে আমরা অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে যাব।

এদিকে লকডাউনে মার্কেট খোলা রাখার দাবিতে হাটহাজারীতে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ। সীমিত আকারে হলেও মার্কেট খোলা রাখার দাবিতে  বিক্ষোভ করেছেন চট্টগ্রামের হাটহাজারীর বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। এসময় ব্যবসায়ীরা ইউএনও কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন এবং ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দরা ইউএনও এবং পুলিশ প্রশাসনের সাথে বৈঠক করে নিজেদের দাবী জানান।

এছাড়া লোহাগাড়া বটতলীর ব্যবসায়ীরা লকডাউনের প্রতিবাদে ও মার্কেট খোলা রাখার দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছেন।

লোহাগাড়া দোকান মালিক ও ব্যবসায়ীরা বটতলী মোটর স্টেশনে এই বিক্ষোভ আয়োজন করেছেন। এ সময় লোহাগাড়া বণিক সমতির সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরী বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মোস্তফা কামাল, সাংগঠনিক খোরশেদ আলমসহ বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, আমরা ব্যবসায়ীদের সারা বছরের ব্যবসা হয় এই সময়ে, ঈদের আগের দুই মাসে। গত বছর আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এবারও যদি এই সময় মার্কেট বন্ধ থাকে, তাহলে তো আমাদের পথে বসে যেতে হবে।

তারা দাবি করেন, যেভাবে বিশেষ বিবেচনায় শিল্প-কারখানা চালু রাখা হয়েছে, সেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মার্কেট খোলা রাখার সুযোগ দেয়া হোক।

এদিকে খবর পেয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলেন লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান হাবিব জিতু, সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোরশেদ আলম, লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ জাকের হোসাইন মাহমুদ।