অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

হালিশহরে দেড় বছর আগে খুন: কঙ্কাল পরিক্ষায় রহস্য উদঘাটন, খুনি গ্রেফতার

0
.

চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর থানার চৌচালা এলাকায় দেড় বছর আগে খুন হওয়া এক কৃষক হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

মাটি খননকালে এক বছর আগে মানুষের এক কঙ্কাল পায় শ্রমিকরা। সেই ঘটনার সূত্র ধরে রহস্যের উদঘাটন করেছে মরদেহটি ছিল কৃষিকাজে যুক্ত এক যুবকের। ঘটনার দেড়বছর পর আসামি গ্রেফতার হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) জানিয়েছে, খুনের শিকার যুবকের মোবাইলের সূত্র ধরে আসামির অবস্থান শনাক্ত করে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মাটি খুঁড়ে কঙ্কাল উদ্ধারের পর তার পরিচয় শনাক্তের পাশাপাশি খুনে জড়িতকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে হত্যাকাণ্ড ও গুমের রহস্য উদঘাটন হয়েছে।

বুধবার (০৫ মে) ভোরে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় অভিযান চালিয়ে খুনে জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বৃহস্পতিবার ওই আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগরের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা।

গ্রেফতার সোহরাব হোসেন বলী (৫৫) লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্ণা ইউনিয়নের পূর্ব সিন্দুর্ণা গ্রামের মৃত মনছুর আকন্দের ছেলে। আর খুনের শিকার মো. রুবেল (২৭) নীলফামারি জেলার গৌরগ্রামের আজিজিয়া রহমানের ছেলে।

জানা গেছে, সোহরাব হালিশহরে ওয়াসার নিজস্ব জমিতে চাষাবাদ করতেন। আর রুবেল এর পাশের জমিতে চাষাবাদ করতেন। তারা উভয়ই হালিশহর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।

গত বছরের ২ মার্চ দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর থানার চৌচালা এলাকায় ওয়াসার একটি প্রকল্পের সীমানা খুঁটি স্থাপনের জন্য খোঁড়া গর্তে একটি কঙ্কাল পাওয়া যায়। পুলিশ কঙ্কালের ডিএনএ সংগ্রহ করে এবং হালিশহর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। মামলা তদন্তের দায়িত্ব নেয় পিবিআই।

২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর রুবেলের ভাই সামছুল হালিশহর থানায় তার ভাই নিখোঁজ সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, ১৯ নভেম্বর থেকে তার ভাইয়ের খোঁজ মিলছে না। কঙ্কাল উদ্ধারের পর সামছুল থানায় এসে দাবি করেন, কঙ্কালটি তার ভাই রুবেলের। পরবর্তীতে তারও ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়। পিবিআই সিআইডির ডিএনএ ল্যাবে আলামত পরীক্ষা করে। এতে দেখা যায়, দু’জনের ডিএনএ মিল আছে। এভাবে কঙ্কালের পরিচয় শনাক্ত করে পিবিআই।

পিবিআই কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, কঙ্কালের পরিচয় উদঘাটনের পর আমরা তার হত্যাকারী শনাক্ত ও গ্রেফতারের কার্যক্রম শুরু করি। ঘটনাস্থলে গিয়ে রুবেলের সঙ্গে কার কার সম্পর্ক ছিল সেটা বের করার চেষ্টা করি। আমরা জানতে পারি যে, তার মোবাইলটি পাওয়া যাচ্ছে না। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সেই মোবাইলের অবস্থান শনাক্ত করে একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করি। তিনি জানান, মোবাইলটি সোহরাবের কাছ থেকে কিনেছেন। কিন্তু সোহরাবের অবস্থান আমরা শনাক্ত করতে পারছিলাম না। কারণ ঘটনার পর সোহরাব তার পরিবারসহ চট্টগ্রাম থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। প্রায় একবছর ধরে নিবিড় তদন্তের পর সোহরাবের অবস্থান শনাক্ত করে আমরা তাকে গ্রেফতার করি।

কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড জানতে চাইলে পিবিআই পরিদর্শক সন্তোষ বলেন, ‘সোহরাব জানিয়েছে, রুবেলের কাছ থেকে সুদে ২৮ হাজার টাকা ধার নিয়েছিল। টাকা নেয়ার আনুমানিক ছয় মাস পর ‍রুবেল পুরো টাকা একসঙ্গে ফেরত চায়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়ার কারণে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।’