অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

গুলশানের সেই ক্লাবে কী ঘটিয়েছিলেন পরীমণি, জানালেন ক্লাবের প্রেসিডেন্ট

0
.

রাজধানীর গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগে চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে গুলশান থানায় জিডি করা হয়েছে। আজ বুধবার সন্ধ্যায় ক্লাবে ভাঙচুরের বিষয়টি গণমাধ্যমে জানান ক্লাবটির প্রেসিডেন্ট কে এম আলমগীর।

তবে অল কমিউনিটি ক্লাবে ভাঙচুরের ঘটনাকে চক্রান্ত হিসেবে দেখছেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটা ফালতু অভিযোগ। আমার বিরুদ্ধে কোনো জিডি হয়নি। আমাকে নিয়ে অন্যরকম একটা চক্রান্ত চলছে।’ গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম আজ সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে বলেন, গত ৭ জুন গভীর রাতে ৯৯৯-এ একটি কলে গুলশান থানা-পুলিশের একটি দল অল কমিউনিটি ক্লাবে যায়। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, কথা-কাটাকাটির জেরে ক্লাবে গ্লাস ভাঙচুর করেছেন পরীমনি।

সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, গত ৮ জুন রাতে গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবে যান পরীমনি। রাত সোয়া ১টার দিকের ঘটনা উল্লেখ করে ক্লাবের প্রেসিডেন্ট কে এম আলমগীর বলেন, ‘ক্লাবের কিছু নিয়মকানুন আছে। কোনো মেল (পুরুষ) যদি ক্লাবে আসে, তাকে ড্রেস কোড মেইনটেইন করতে হয়। কিন্তু সেই মেল ভদ্রলোক (পরীমনির সঙ্গে আসা) হাপপ্যান্ট ও স্যান্ডেল পরে এসেছেন। তখন বেরিয়ে যাচ্ছিলেন আমাদের ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ডিরেক্টর এবং ক্লাবের অ্যাডমিন। উনি ওটা দেখে বলেছেন, আপনি তো ক্লাব রুল ভায়োলেট করেছেন। আপনি তো হাফপ্যান্ট পরে আসতে পারেন না। তো উনারা ক্ষিপ্ত হয়ে যান। ক্ষিপ্ত হয়ে যাওয়ায় উনাদের আচার-আচরণ গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় উনারা (ক্লাব কর্তৃপক্ষ) বলেন, রাত হয়েছে আপনারা চলে যান। কিন্তু উনারা চলে যাচ্ছিল না দেখে আমাদের পরিচালকই ক্লাব থেকে চলে যান।’

তিনি আরও বলেন, ‘এরপরে ওই সদস্য যার মাধ্যমে উনারা এসেছিলেন, উনিও উনাদেরকে চলে যাওয়ার জন্য অনেক অনুরোধ করেন। কিন্তু উনারা চলে যাচ্ছিল না দেখে ওই সদস্যও চলে যান। তারপর উনারা অকস্মাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে যান। চেঁচামেচি শুরু করেন এবং গ্লাস, অ্যাস্ট্রে ছুড়ে মারতে থাকেন। একপর্যায়ে ওনারা ৯৯৯ কল করে পুলিশ কল করেন। পুলিশ আসার পরে ওনারা দেখতে পান উনি (পরীমনি) এগুলো ছুঁড়ে মারছেন।’

অল কমিনিউটি ক্লাবের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তখন পুলিশ জিজ্ঞেস করেন, কেন আমাদের কল করেছেন? তখন তারা (পরীমনি ও অন্যরা) বলে আমাদের সঙ্গে এই হয়েছে সেই হয়েছে। তখন ওনারা (পুলিশ ) বলেন, কই সেরকম তো কিছু দেখছি না। তখন কেউ (ক্লাবে) ছিলও না। দুইজন ওয়েটার ছিল আর এই তিন-চারজন মানুষ ছিল। ’

গণমাধ্যমকে কে এম আলমগীর বলেন, ‘তখন ওনারা বলে যে, আমাদেরকে হেনস্তা করা হয়েছে। তখন পুলিশ বলে, কই কিছু তো দেখছি না। তারপর পুলিশ ওয়াকিটকির মাধ্যমে উপরে জানতে চায় যে আমরা এখন কী করব। ওয়াকিটকির আওয়াজ বাইরে যাচ্ছিল না। তখন উপর থেকে নির্দেশ আসে যে ওনারা (পরীমনি ও অন্যরা) যদি এরকম করে তাহলে উনাদের বের করে দিয়ে আপনারা চলে যান। তখন ওই আওয়াজ শুনে উনারা কিছুটা ঠাণ্ডা হয় এবং পুলিশের কথামতো চলে যান। পুলিশের উপস্থিতিতেই ওনারা চলে যান। তারপর পুলিশও ক্লাব থেকে চলে যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এরপরে অন্য কোনো ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু ক্লাবের নিয়মানুযায়ী যে সদস্যের মাধ্যমে (পরীমনি ও অন্যরা) এসেছিল তাকে আমরা শোকজ করেছি। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এটিই হলো আমাদের সংশ্লিষ্টতা। আমাদের অন্য কোনো ব্যাপারে কিছু ঘটেনি। উনি (পরীমনি) প্রায় ১৫টি গ্লাস, ৯টি অ্যাস্ট্রে ছুড়ে মেরে ভেঙেছেন এবং বেশকিছু হাপপ্লেট ভেঙেছেন।’

কে এম আলমগীর বলেন, ওই ঘটনা প্রায় রাত সোয়া একটা দেড়টার দিকের। জীবনে উনি (পরীমনি) প্রথম (অল কমিউনিটি ক্লাবে) এসেছেন। আমরা উনাদের কাউকে চিনতামও না জানতামও না। পরে আমরা শুনেছি যে ওনার একজনের নাম পরীমনি। তার সঙ্গে এক ভদ্রলোক ছিলেন হাফপ্যান্ট পরা। আরেকজন মহিলাও ছিলেন।’

ঢাকার বোট ক্লাবের ঘটনায় আলোচনায় আসেন পরীমনি। এ ঘটনায় আবাসন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ, অমিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন এই চিত্রনায়িকা। মামলায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।