অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

বাংলাদেশকে ৫২ রানে হারিয়ে সিরিজে ফিরল নিউজিল্যান্ড

0
.

দুই ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জেতার দারুণ সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। লক্ষ্যটাও আহামরি কিছু ছিল না। ১২০ বলে সহজ লক্ষ্য ১২৯ রান করতে পারলেই হয়ে যেত ইতিহাস। প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজও জিততে পারতো মাহমুদউল্লাহ বাহিনী।

তবে এমন সমীকরণ নিয়ে কিউইদের দেওয়া লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) অগোছালো বাংলাদেশকেই দেখা গেল। ফলাফল যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। তৃতীয় ম্যাচে এসে হারের মুখ দেখল টিম টাইগার্স। অন্যদিকে, আরাধ্য জয়ের দেখা পেল সফরকারী নিউজিল্যান্ড দল। ৫২ রানের বিশাল ব্যবধানে জিতেছে টম লাথামের দল।

তবে ১২৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই দুই চার মেরে শুভ সূচনা করেছিলেন নাঈম শেখ। বাংলাদেশও আশা জাগানিয়া শুরু পেয়েছিল। কিন্তু দলীয় ২৩ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় টিম টাইগার্স।

দুই সুইপ, দুই চার। তবে লিটন দাস সন্তুষ্ট হতে পারলেন না তাতেও। কোল ম্যাকোঞ্চির বলে ফের বড় শট খেলতে গিয়েছিলেন, তবে গতি বুঝতে পারেননি। ধরা পড়লেন লিটন। সাজঘরে ফেরার আগে করেছেন ১১ বলে ১৫ রান।

লিটনের পর ফিরলেন মেহেদী হাসানও। এজাজ প্যাটেলের বল জোরের উপর খেলতে গিয়ে মিস করেছেন। শেষ পর্যন্ত আউট হলেন ঘুরিয়ে খেলতে গিয়ে। মিড-অনে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন হ্যানরি নিকোলস। শুরু থেকেই অস্বস্তিতে থাকা মেহেদী শেষ পর্যন্ত ফিরেছেন ৪ বলে মাত্র ১ রান করে।

লিটন-মেহেদীর পর কাটা পড়লেন সাকিবও। শুরু থেকেই শট খেলার চেষ্টা করার লক্ষ্য নিয়েই যেন নেমেছিলেন, তবে ব্যর্থ হয়েছেন তিনিও। প্যাটেলকে তুলে মারতে গিয়ে লং-অনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি কোনো রান না করেই। ২৫ রানেই ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

আগের ম্যাচে দুর্দান্ত খেললেও আজ শুরু থেকেই ছন্দহীন ছিলেন নাঈম। অপরপ্রান্তে আসা-যাওয়ার মিছিলে দলের হাল ধরার দায়িত্ব ছিল তার কাঁধেই। কিন্তু তিনিও শেষপর্যন্ত নিরাশ করলেন। তবে আউট হওয়ার আগে বেশ কয়েকবার আউট হতে হতেও বেঁচে গেছেন। তবে শেষমেশ রাচিন রবীন্দ্রের বলে সাজঘরে ফিরলেন এই ওপেনার। ১৯ বলে ১৩ রান করে ফিরেছেন নাঈম।

আগের ম্যাচের নায়ক মাহমুদউল্লাহও এদিন দলের হাল ধরতে পারলেন না। ব্যক্তিগত শততম টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে ফিরলেন মাত্র ৩ রান করে। এজাজ প্যাটেলের বলে কাটা পড়েছেন তিনি। এছাড়া গোটা সিরিজজুড়েই যেন নিজেকে খুঁজে ফিরছেন আফিফ হোসেন। আগের ম্যাচের মতো রোববারও (৫ সেপ্টেম্বর) হতাশ করলেন তিনি।

প্রথম বলেই বিদায় নিলেন আফিফ। এজাজ প্যাটেলের বলটা উইকেটে পড়ে কীভাবে স্টাম্পে আঘাত হেনেছে টেরও পাননি এই বাঁহাতি। দলীয় মাত্র ৪৩ রানের মাথায় ৬ উইকেট হারিয়ে পুরোপুরি খাদের কিনারায় পড়ে টিম টাইগার্স। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।

ম্যাকোঞ্চির বলে তুলে মারতে গিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন নুরুল হাসান সোহানও। অফ স্টাম্পের বাইরের বল বাউন্ডারি মারার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু অফ স্পিনে বিভ্রান্ত হয়ে শুধু ব্লান্ডেলের ফিল্ডিং দক্ষতার পরিচয় দেখতে পেলেন। অনেক দূর দৌড়ে ক্যাচটি নিয়েছেন ব্লান্ডেল। সোহান ফিরেছেন ১১ বলে ৮ রান করে।

সোহানের পর ম্যাকোঞ্চির শিকার হলেন সাইফউদ্দিনও। কিউই পেসারের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে রিভিউ নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। ১১ বলে ৮ করে ফিরেছেন সাইফউদ্দিন। ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলে একপাশ আগলে রেখেছিলেন মুশফিক। তবে অন্যপাশ ঝড়ের মতো উড়ে গেছে। সাইফউদ্দিনের পথ ধরেছেন স্পিনার নাসুম আহমেদও। ৫ বলে করতে পেরেছেন মাত্র ১ রান।

শেষপর্যন্ত ৭৬ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। দেশের মাটিতে টি-টোয়েন্টিতে এটাই সর্বনিম্ন স্কোর। সব মিলিয়েই এটা বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। এ বছরের শুরুতেই ১০ ওভারে পরিণত হওয়া অকল্যান্ডের টি-টোয়েন্টিতেও ৭৬ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। মুস্তাফিজ শেষ ওভারে আউট হয়ে গেলেও মুশফিক ঠিকই রয়ে গেছেন। ৩৭ বলে ২০ করে অপরাজিত ছিলেন।

এর আগে সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে ব্যাট করতে নেমে ভালো কিছুর ইঙ্গিতই দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। প্রথম দুই ওভারে ১৬ রান সংগ্রহ করে সফরকারীরা। কিন্তু তৃতীয় ওভারেই খেই হারিয়ে ফেলে টম লাথামের দল।

ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের মাঝপথেই ৫ উইকেট হারিয়ে পুরোপুরি বিপর্যয়ে পড়ে সফরকারীরা। কিন্তু এরপরই টম ব্লান্ডেল ও হ্যানরি নিকোলসের ব্যাটে ভর করে এগিয়ে যায় কিউই শিবির। শেষ পর্যন্ত তাদের ইনিংস থামে ১২৮ রানে। ব্লান্ডেল অপরাজিত ছিলেন ৩০ রানে আর নিকোলস করেছেন ৩৬ রান।