অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

“রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম মানি না” বলে মন্ত্রী শপথ ভঙ্গ করেছেন: জি এম কাদের

0
.

পরিকল্পিতভাবে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সরকারি সহায়তা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাহারার মধ্যে কেমন করে পূজামণ্ডপে কোরআন রাখা হলো- তা তদন্ত করতে হবে। কেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যর্থ হলো, এটা বের করতে হবে।একই সময়ে এক প্রতিমন্ত্রী (তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান) রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম মানি না বলে যে উসকানিমূলক বক্তব্য ভাইরাল করেছেন, তার সঙ্গে এই ষড়যন্ত্রের যোগসূত্র আছে কি না- তাও খতিয়ে দেখতে হবে সরকারকে।’

আজ রবিবার দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের।

তিনি বলেন, একজন অর্বাচিন ব্যক্তির মতো ওই প্রতিমন্ত্রী জননন্দিত প্রয়াত রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে কটূক্তি করেছেন, কটাক্ষ করেছেন দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে। আবার সংবিধান পরিপন্থী কথা বলে, শপথ ভঙ্গ করেছেন। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের পঞ্চাদশ সংশোধনীর বিরুদ্ধে কথা বলে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। খতিয়ে দেখতে হবে, অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে প্রতিমন্ত্রী কেন উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন।

জিএম কাদের বলেন, দেশে অস্বাভাবিক পরিবেশ বিরাজ করছে। হিন্দু সম্প্রদায় কখনোই তাদের উৎসবমুখর পূজা বানচাল করতে কোরআনকে অবমাননা করবে না। সামান্যতম ঈমান থাকলে কোনো মুসলিম কোরআনকে অবমাননা করতে ষড়যন্ত্র করতে পারে না। আবার কোরআন অবমাননার খবর সারা দেশে ছড়িয়ে দিয়ে দাঙ্গা-হাঙ্গামা ছড়িয়ে দিতে অপচেষ্টা করেছে একটি চক্র।

তিনি বলেন, হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশে কোনোভাবেই সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে দেব না। এদেশে একই চত্বরে মসজিদ ও মন্দিরে উপাসনা চলছে শত শত বছর ধরে। আমাদের পূর্ব পুরুষরাও একইসঙ্গে ধর্মীয় আচার-আচরণ পালন করেছে। কখনো কোনো সমস্যা হয়নি। এখন কেন হচ্ছে- তা খতিয়ে দেখতে হবে। সাম্প্রদায়িক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে যে কোনো ষড়যন্ত্রই ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।

আজ জাতীয় পার্টি খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা ও নবনিযুক্ত মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ছিলেন গণমানুষের ভালোবাসার প্রতীক। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সব ধর্ম পালনে শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। তিনি দেশের ৯২ ভাগ মানুষের অন্তরের ভাষা বুঝেই ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করেছিলেন। পাশাপাশি সব ধর্ম পালনে সমান অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। পল্লীবন্ধু গরীবের হজ জুমার নামাজ আদায় করার কথা বিবেচনায় রেখে শুক্রবারকে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছিলেন।

তিনি বলেন, দাঙ্গাজনিত কারণে প্রায় ৫০ বছর রাজধানীতে জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রা বের হয়নি। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দেশ পরিচালনার সময় ১৯৮৯ সালে আবারও জন্মাষ্টমীর আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জন্মাষ্ঠমীর শুভ দিনটিকে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। পল্লীবন্ধু গঠন করেছিলেন হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্ট। মন্দির নির্মাণ ও সংস্কারে পল্লীবন্ধুর আন্তরিক সহায়তা ছিল সর্বজনবিদিত। মসজিদ-মন্দিরসহ সব উপাসনালয়ের বিদ্যুৎ ও পানির বিল মওকুফ করেছিলেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব (খুলনা বিভাগ) সাহিদুর রহমান টেপার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. জে. (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এমপি, অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, সৈয়দ দিদার বখত, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য নাজনীন সুলতানা, মো. জহিরুল হক জহির, লে. কর্নেল (অব.) সাব্বির আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মধু, শেখ মো. আলমগীর হোসেন, শরিফুল ইসলাম সরু চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মো. বেলাল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এবিএম লিয়াকত হোসেন চাকলাদার, সুমন আশরাফ, যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক আহাদ চৌধুরী শাহীন, এসএম আল জুবায়ের, নড়াইল জেলা আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট খন্দকার ফায়েকুজ্জামান ফিরোজ, ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি রাশেদ মাজমাদার, কুষ্টিয়া জেলা সভাপতি নাফিজ আহমেদ খান টিটু, চুয়াডাঙ্গা জেলা আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. সোহরাব হোসেন, বাগেরহাট জেলা সাধারণ সম্পাদক হাজারা শফিকুল ইসলাম বাবুল, সাতক্ষীরা জেলা সহসভাপতি মো. নজরুল ইসলাম, যশোর জেলা সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মুফতি হাকিম ফিরোজ শাহ, মাগুরা জেলা আহ্বায়ক মোছা. সেলিনা খাতুন, এসএম মুশফিকুর রহমান, তরুণ পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোড়ল জিয়াউর রহমান, ছাত্রনেতা অর্ণব চৌধুরী।

উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব মো. জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মাখন সরকার, এমএ রাজ্জাক খান, তিতাস মোস্তফা, মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক, হাফিজ ক্বারী ইসাহারুল্লাহ আসিফ, কেন্দ্রীয় নেতা জাকির হোসেন, শাহরিয়ার জামিল জুয়েল, মাওলানা মো. খলিলুর রহমান সিদ্দিকী, জাফর আহমেদ রাজু, মো. হাবিবুর রহমান, হুমায়ুন কবীর শাওন প্রমুখ।