অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

রাজধানী থেকে নিখোঁজ তিন বোনের খোঁজ মিলেছে যশোরে

0

রাজধানীর আদাবর থেকে ‘নিখোঁজ’ তিন বোনকে উদ্ধার করেছে যশোরের কোতোয়ালি থানার পুলিশ। আজ শুক্রবার সদর উপজেলার চাঁদপাড়ার তাদের বাবার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। তারা অসুস্থ বাবাকে দেখতে যশোর এসেছিল।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিন বোন জানান, তিন বোন বাবা-মায়ের সঙ্গে উত্তরা লেকসিটি কনকর্ডে ভাড়া বাসায় থাকতো। ২০১২ সালে তাদের বাবা-মায়ের মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে তাদের বাবা যশোর চলে যান। কিন্তু তারা মায়ের সঙ্গে ঢাকায় থেকে যায়। ২০১৩ সালের ২৮ আগস্ট তাদের মা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরে তারা খালার বাসায় থাকতো। বাবা-মা আলাদাভাবে বসবাসের পর থেকে বাবার সঙ্গে তাদের যোগাযোগ করতে দেওয়া হতো না। এমনকি তাদের উপর অত্যাচার করা হতো। তাই তিনবোন পরামর্শ করে আদাবর থেকে পালিয়ে যশোরে বাবার বাড়ি চলে আসে।

এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪ মিনিটের দিকে আদাবরের খালার বাসা থেকে তিন বের হন। এর পর খোঁজ না পেয়ে তাদের খালা সাজিদা নওরীন আদাবর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই আনসারুল হক ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সদর উপজেলার চাঁদপাড়া থেকে তিন বোনকে উদ্ধার করেছে। তাদের পিতা রফিকুজ্জামান ও মাতা মৃত-তাসনিম আরা চৌধুরী।

সন্ধান পাওয়া নিখোঁজ ওই তিনজনের খালা সাজিদা নওরীন বলেন, আমার বড় বোন তিন বছর আগে মারা যান। আর দুলাভাই অন্য জায়গায় বিয়ে করেন। খিলগাঁওয়ে আমার ছোট বোনের বাসায় থাকত তিন ভাগ্নি রোকেয়া, জয়নব ও খাদিজা। জয়নব ও খাদিজার এসএসসির পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল ধানমন্ডি গার্লস হাইস্কুলে। সে কারণে আদাবরে আমার বাসায় এসে তারা পরীক্ষা দিচ্ছিল। গত ১৫ নভেম্বর একটি পরীক্ষা হয়েছে তাদের। আরও দুটি পরীক্ষা বাকি। এর মধ্যেই হঠাৎ তারা একসঙ্গে বাসা থেকে কাউকে কিছু না বলে বেরিয়ে যায়।

তিনি বলেন, নিখোঁজের পর পরই আদাবর থানায় যাই। কিন্তু থানা থেকে প্রথমে জিডি কিংবা মামলা না নিতে চাইলে আমি কান্নাকাটি করি। আমার কান্নাকাটি দেখে তারা প্রায় দেড় ঘণ্টা পর একটি জিডি লিপিবদ্ধ করে।

তার তিন ভাগ্নি টিকটক ও ইনস্টাগ্রামে আসক্ত ছিলেন জানিয়ে সাজিদা নওরীন বলেন, টিকটকের মাধ্যমে কারও প্ররোচনায় তারা বাসা থেকে বের হয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছি। যাওয়ার সময় তাদের পিএসসি, জেএসসির সার্টিফিকেট, টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। বয়স কম হওয়ায় অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করতে নিষেধ করতাম। তারা আমাদের মোবাইল ছাড়া অন্য কোনো মোবাইল ব্যবহার করতো না। তবে লুকিয়ে কোনো মোবাইল ব্যবহার করতো কি না তা আমরা জানি না।

তিনি জানান, তিন বোন বাবা-মায়ের সঙ্গে উত্তরা লেকসিটি কনকর্ডে ভাড়া বাসায় থাকতো। ২০১২ সালে তাদের বাবা-মায়ের মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে তাদের বাবা যশোর চলে আসেন। কিন্তু তারা মায়ের সঙ্গে ঢাকায় থেকে যায়। ২০১৩ সালের ২৮ আগস্ট তাদের মা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরে তারা খালার বাসায় থাকতো।

যশোর পুলিশের মুখপাত্র ডিবি ওসি রূপণ কুমার সরকার জানান, তাদের বাবা রফিকুজ্জামান এখন প্যারালাইজড ও শয্যাশায়ী। বাবাকে দেখাশোনা করার জন্য এই তিন বোন যশোরে অবস্থান করছিলেন। তারা টিকটক আসক্ত; এই তথ্য সঠিক নয়। কারণ তাদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনও নেই।