অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

পতিত স্বৈরাচারের চেয়ে নব্য স্বৈরাচার অনেক বেশী ভয়ংকর: ডা. শাহাদাত

0
.

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, ৬ ডিসেম্বর জাতীয় ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৯০ সালের এ দিনে দীর্ঘ ৯ বছরের রক্তস্নাত আন্দোলনের পর পতন ঘটেছিলো স্বৈরচার এরশাদের। স্বৈরাচারী এরশাদ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করার পর থেকে সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ধারাকে বাধাগ্রস্ত করেছিল। দীর্ঘ নয় বছর গণআন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ‘৯০ এর ৬ ডিসেম্বর ছাত্রজনতার মিলিত শক্তিতে স্বৈরাচারকে পরাজিত করে মুক্ত হয়েছিলো গণতন্ত্র।

তিনি সোমবার (৬ ডিসেম্বর) বিকালে নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ে স্বৈরচার পতন দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

শাহাদাত বলেন- আজ সেদিনের পরাজিত শক্তি ও তার দোসর’রা সেই আন্দোলনের কিংবদন্তিসম আপোষহীন নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় দীর্ঘদিন অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ রেখেছে। এখন তাঁকে জেল থেকে বের করে গৃহবন্দী রাখা হয়েছে। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে জীবন মৃত্যুর সাথে লড়াই করছেন। কিন্তু সরকার তাকে বিদেশে সুচিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এটা মানবতা বিরোধী অপরাধ এবং অমানবিক। বর্তমানে পতিত স্বৈরচার এরশাদের চেয়ে নব্য স্বৈরচার অনেক বেশী ভয়ংকর হয়ে ওঠেছে। তিনি অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করার আহবান জানান।

ডা. শাহাদাত আরও বলেন, একদলীয় বাকশালী চেতনার দল ও আশির দশকের গণতন্ত্র হত্যাকারী স্বৈরাচার একত্রিত হয়ে দেশের সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্রমান্বয়ে ধংসস্তুপে পরিণত করছে। তাদের মিলিত ইচ্ছায় নিরপেক্ষ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধান থেকে মুছে দেয়া হয়েছে। এই অগণতান্ত্রিক অপশক্তি সংবিধান বর্ণিত জনগণের মৌলিক অধিকার ক্রমাগতভাবে হরণ করে যাচ্ছে। আজকে আমেরিকার গণতান্ত্রিক দেশের সন্মেলনে বাংলাদেশ আমন্ত্রণ না পাওয়াই প্রমান করে দেশে গণতন্ত্র নেই। তারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দেশকে কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। তাই এই অপশক্তিকে প্রতিহত করে গণতন্ত্রকে স্থায়ী রুপ দিতে সবাইকে আজকের এই দিনে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আহবান জানাই।

সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ফ্যাসিবাদই আওয়ামী লীগের মৌলিক চরিত্র। তারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও তা পরিচর্চা করে না। ক্ষমতাকে তারা পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে, তা টিকিয়ে রাখতে সম্ভাব্য সবই করে। দেশে ভয়াবহ সংকট চলছে, অথচ তাদের সেদিকে কোনো খেয়াল নেই। সরকার সব গণতান্ত্রিক খাতগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা আমাদেরকে বাইরে কোনো সভা সমাবেশ করতে দিচ্ছে না। দেশে কোনো গণতান্ত্রিক অধিকার নেই। আওয়ামী লীগ দেশকে একদলীয় শাসনের দিকে নিয়ে গেছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, ৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের নেতারা এখন কেউ আওয়ামীলীগের সাথে নেই। করণ তারা বুঝতে পেরেছিল, আওয়ামীলীগ এরশাদের পতন চায়নি। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর স্বৈরাচার এরশাদের দলকে নিয়েই তারা সরকার গঠন করেছিল। অতীতে এরশাদের পাতানো নির্বাচনে গিয়ে শেখ হাসিনা জাতীয় বেঈমানের খেতাব পেয়েছিলেন। এরশাদ সেই ঋণ শোধ করার জন্য মহাজোটের সরকারে অংশ নিয়েছেন।

চট্টগ্রাম মহানগর নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহবায়ক সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালীর পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, চবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নসরুল কদির, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, ইস্কান্দার মির্জা।

বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির সদস্য ইকবাল চৌধুরী, কোতোয়ালি থানা বিএনপির সভাপতি মন্জুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব জাকির হোসেন, বায়েজিদ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের জসিম, অধিকার ফোরামের যুগ্ম আহবায়ক এম মন্জুর উদ্দীন চৌধুরী, জসিম উদ্দীন চৌধুরী, সালাউদ্দীন আলী, ডা. কাজী মাহবুব আলম, লায়ন অহিদুল ইসলাম সিকদার, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, আসাদুর রহমান টিপু, সৌরভ প্রিয় পাল, ফোরামের সদস্য এড, আয়শা আকতার সানজি, জোহরা বেগম, ডা. মেহেদী হাসান ইমাম, ফোরামের প্রচার ও প্রকাশনার দায়ীত্বপ্রাপ্ত মঈন উদ্দীন খান রাজীব, মাহবুব খালেদ, আহমেদুল ইসলাম সাদ, কাইউমুর রশীদ বাবু, ইমরান হোসেন, ফজলুল করিম, মাহফুজুর রহমান, আশিকুর রহমান, মো. নেজাম উদ্দীন, নিজাম উদ্দীন প্রমূখ।

আলোচনা সভার আগে গুরুতর অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।