অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চট্টগ্রামে বিএনপির মানববন্ধনে পুলিশি হামলা, মামলা ও গ্রেফতারের প্রতিবাদ নেতৃবৃন্দের

0
.

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির উদ্যোগে ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবসের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে পুলিশের ন্যাক্কারজনক হামলা, বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাত হোসেন, আবুল হাশেম বক্কর ও আবু সুফিয়ানসহ ৭৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা এবং ৪৯ জন নিরাপরাধ নেতাকর্মীকে গ্রেফতারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মীর মো. নাছির উদ্দীন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বেগম রোজী কবির, গোলাম আকবর খন্দকার, এস এম ফজলুল হক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তারকৃতদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি করেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ৫ জানুয়ারি ভোটাধিকার হরণ ও গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে। দেশের একজন নাগরিক হিসেবে প্রত্যেক ব্যক্তির ও দলীয়ভাবে প্রতিটি দলের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংবিধান স্বীকৃত অধিকার। কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, বুধবারের এই শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে পুলিশ অত্যন্ত ন্যাক্কারজনকভাবে হামলা চালিয়েছে। হামলায় অনেক নেতাকর্মী গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। মানববন্ধনে সিনিয়র নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দিয়ে কর্মসূচী সমাপ্ত করে চলে যাওয়ার অনেক পরে সমাবেশস্থলের বাইরের এলাকা থেকে বাড়ী ফিরার পথে নিরিহ নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সামান্য ঘটনায় ৪৯ জনকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের সময় পুলিশের অতি উৎসাহী কিছু কর্মকর্তার আচরণ ছিল মারমূখী। তারা অনেকটা ইচ্ছা করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা মনে করি, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, বিদেশে উন্নত চিকিৎসা ও গণতন্ত্র পূনঃউদ্ধার আন্দোলন বন্ধ করতে সরকার পুলিশকে দিয়ে এই দমন পীড়ন চালাচ্ছে। আমরা সরকার এবং প্রশাসনের এই ফ্যাসিবাদী আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার বিএনপিসহ বিরোধী পক্ষকে ঘায়েল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাই রাজনৈতিক দলগুলোর সভা সমাবেশ করার গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করছে। সরকারের বর্বরতা, স্বৈরাচারী আচরণ, মামলা হামলা, লুট, নৈরাজ্য অতীতের সব স্বৈরাচারী শাসকদের হার মানিয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা ও কারামুক্তির দাবি ও গণতন্ত্র হত্যা দিবসের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের বর্বর লাঠিচার্জ, মামলা এবং গ্রেফতারের মাধ্যমে সরকার প্রমাণ করেছে তারা বিএনপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেও ভয় পায়।

নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রহসনমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে জোর করে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলকারী বর্তমান সরকার দেশব্যাপী বিএনপি নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে ভয়াবহ দুঃশাসনের এক জঘন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সরকার নিজেদের কর্তৃত্ববাদী শাসন পাকাপোক্ত করতেই বিরোধী মতের নেতাকর্মী ও জনগণের ওপর হিংস্র আচরণ অব্যাহত রেখেছে। বিভিন্ন বাহিনীকে অন্যায়ভাবে নিজেদের হীন স্বার্থে অপব্যবহার করে সরকার তাদেরকে জনগণের মুখোমুখী দাঁড় করাচ্ছে। মানুষের কল্যাণে কাজ না করে ক্ষমতার দাম্ভিকতায় ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে দেশকে গভীর সঙ্কটে নিপতিত করছে। সারাদেশে বিরোধীদলের উপর নির্যাতন চালিয়ে দেশকে ত্রাসের রাজ্যে পরিণত করেছে।

নেতৃবৃন্দ এধরনের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে পুলিশের অতর্কিত হামলা, গ্রেফতার ও মামলা দায়েরের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। অবিলম্বে ডা. শাহাদাত হোসেন, আবুল হাশেম বক্কর, আবু সুফিয়ানসহ বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবী জানান।

পুলিশের মিথ্যা মামলায় যুবদলের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদঃ

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এম এ আজিজ, নাজিমুর রহমান, কাজী বেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর যুবদল সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন. সাইফুল ইসলাম, শরীফুৃল ইসলাম তুহিন, মোহাম্মদ আলী সাকী, মোহাম্মদ গুলজার হোসেন, এইচ এম নুরুল হুদা ও শওকত আকবর সোহাগসহ ৭৫ জন নেতৃবৃন্দের নামে কোতোয়ালী থানায় মিথ্যা মামলা দায়েরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহেদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি হাসান জসিম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আজগর, এস এম মুরাদ চৌধুরী।

এক যৌথ বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ৫ জানুয়ারী গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচিতে
পুলিশের ন্যাক্কারজনক হামলা করে ৪৯ জন নেতাকর্মী গ্রেফতার এবং চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের নামে উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে ৭৫ জনের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের আওয়ামী সরকারের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার নীল নকশার অংশ।

সারাদেশে যখন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে সুচিকিৎসা এবং নি:শর্ত মুক্তির দাবীতে মহা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে
সরানোর জন্য বিরোধী দলের সমাবেশের উপর ১৪৪ ধারা জারী ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশের শত শত রাউন্ড গুলি বর্ষণ এবং গতকাল চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে পুলিশের হামলা একই সূত্রে গাঁথা। সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বিএনপির
চেয়ারপার্সন, চার বারের প্রধানমন্ত্রী ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রেখে হত্যার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। আজ তিনি গুরুতর অসুস্থ,বর্তমান সময় সংকটময় ও সমস্যাদীর্ণ গণতন্ত্রের সময় কিন্তু মানুষ আর বসে থাকছে না, জেলায় জেলায় ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে বেরিয়ে আসছে মানুষ। বিএনপি যেখানেই সমাবেশ দিচ্ছে সেখানেই মানুষের ঢল নামছে। কর্তৃত্ববাদী হিংস্র শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে দেশের মানুষ কঠিন সংগ্রামে অঙ্গীকারাবদ্ধ। পুলিশের অতর্কিত লাঠিচার্জে খুলশী থানা যুবদলের সদস্য মিজানুর রহমানসহ বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের অসংখ্য নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন।

নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রশাসনকে উদাত্ত আহবান জানান দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে আইন অনুযায়ী নিজেদের স্বীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের জন্য। অনতিবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে আইন অনুযায়ী গ্রেফতারকৃত ৪৯ জন নেতাকর্মীদের মুক্তি দিন। অন্যথায় রাজপথেই ফয়সালা হবে। ভোটারবিহীন সরকারের দিন শেষ, ভোট ডাকাতির দিন শেষ। বংলাদেশের জনগণ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাজপথে নেমে গেছে। বিশ্ববিবেক জেগে উঠেছে। যেভাবে অবরুদ্ধের খবর আসছে তাতে অনেক মন্ত্রী এমপি ও আমলাদের বিদেশে পালানোর রাস্তাও আর খোলা নেই। গণতন্ত্রের জয় অবশ্যম্ভাবী।