অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

পরীক্ষার হল থেকে ছাত্রলীগ নেতার ফেসবুক লাইভ (ভিডিও)

0
.

পরীক্ষার হল থেকে ফেইসবুক লাইভ দিয়ে নিজেদের স্বেচ্ছাচারিতার জানান দিয়েছেন, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন সুমন। শুক্রবার (৮ই এপ্রিল) দুপুরে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট কেন্দ্রে কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন বিষয়ের পরীক্ষা দেওয়ার সময় ৯ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের একটি লাইভ করেন ছাত্রলীগের এ নেতা। যেখানে পরীক্ষার হলে মোবাইল নেয়া নিষিদ্ধ রয়েছে। সেখানে শিক্ষকদের সামনেই লাইভ করেন সুমন। বরং ভয়ে শিক্ষকেরা যেন কাবু।

উল্লেখ্য, এরাই ছাত্রলীগের সোনার ছেলে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারীদের হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পা ভেঙ্গে দেয়। বিশ্বজীতের মত নিরীহ লোকদের প্রকাশে কুপিয়ে হত্যা করে। সার্বভৌমত্ব নিয়ে ফেইসবুক স্ট্যাটাস দিলে বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরারের মত পিটিয়ে হত্যা করে। এরাই ছাত্র লীগ।

ফেসবুক লাইভে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন সুমন বলেন, পরীক্ষা চলছে। জীবনে আজ রেকর্ডধারী পরীক্ষা দিলাম। চশমাটা চোখে দিয়ে নিই। তাছাড়া ভাব বাড়ছে না পরীক্ষার হলে। আমরা তো ফাস্ট ছাত্র। ফাস্ট বেঞ্চে বসেছি। যাইহোক পারি আর না পারি। আমার খাতা দেখবেন? এই দেখেন।

আমার খাতায় আমি লিখেছি। ইংরেজিতে মাস্টার্স করা তো। দেখেন সব ইংরেজিতে লিখেছি। সালামও লিখেছে। ওরাও লিখেছে বলে অন্য শিক্ষার্থীকে দেখিয়ে বলে কি লিখেছিস তুই মনি? ওই একটা খালা পরীক্ষা দিচ্ছে ওই পাশে। ওই যে একটা খালা। ভাইস চেয়ারম্যান দেখছে লাইভ। কাকা আমরা সত্যি সত্যি পরীক্ষা দিচ্ছি।

ভিডিও :-

এরপর ফোনের ক্যামেরা খাতার দিকে ঘুরিয়ে বলেন বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। আমরা ইয়ার্কি মারছি না। আমাদের কম্পিউটার সার্টিফিকেট তৈরি হয়ে যাচ্ছে। আমরা আছি ঝিনাইদহ পলিটেকনিক কলেজে। অন্য শিক্ষার্থীকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, গল্প না করে লেখ বাবা।

লাইভে তিনি স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার উদ্দেশ্যে বলেন, কাকা আমার লেখা কমপ্লিট। এই দেখেন আমি ইংরেজিতে কি সুন্দর লিখেছি। আমার বায়োডাটা লিখেছি। এই দেখেন গ্রুপের এখানে এমপি সাহেবের নাম লিখে দিয়েছি। গ্রপ কি? আনার গ্রুপ। জয়ও লিখেছে। ভাইস চেয়ারম্যান দেখছে গল্প না করে লেখ।

লাইভে কক্ষ পরিদর্শকের দিকে ক্যামেরা ঘুরিয়ে তিনি বলেন, ও আপা, ম্যাডাম আপনি কিছু কন!

অন্য শিক্ষার্থীদের বলেন, আমি তোমাদের স্যার। লেখ লেখ। এ সময় আশেপাশের শিক্ষার্থীরা হাসতে থাকে। আমার জন্য দোয়া করবেন যেন আমি প্লাস পেয়ে যাই। আমরা যেখানেই যাবো সেখানেই বুলেট। স্যার আমার ঘুমাচ্ছে।

ছাত্রলীগের এই সাধারণ সম্পাদকের লাইভে পাশ থেকে কবিতা লিখতে বললে তিনি আয় ছেলেরা আয় মেয়েরা ফুল তুলিতে যায় কবিতাটি বলতে থাকেন। রোজা আছি, না হলে স্যারদের কাছে পানি-মানি খাইতে চাইতাম। তুই কি লিখছিস ভাই? আমরা তো সবাই এক গোয়ালেরই গরু তাই না? সমস্যা নেই।

লাইভে সুমন বলেন, কী সুন্দর পরীক্ষার হলে পরীক্ষা দিচ্ছি। ও বাবু আয়। তোরা তো জীবনে পরীক্ষা দিতে পারবি না। সবুজের মতো ঘুমা। এ তাপস। রোজা থেকে পরীক্ষা দিচ্ছি। গোল্ডেন পাবো গোল্ডেন। এই দেখ সালামও আছে সালাম।

এরপর তিনি তার সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার পক্ষ থেকে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান।