অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চট্টগ্রামে খেজুর আমদানির আড়ালে সিগারেট আমদানী

0
.

দুবাই থেকে খেজুর আমদানির আড়ালে ৫৫ লাখ ৫২ হাজার চারশ শলাকা মন্ড ব্র্যান্ডের সিগারেট আমদানির মাধ্যমে সাত কোটি ১১ লাখ টাকার সরকারী রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করা হয়েছে। জব্দ করা এ সিগারেটের চালানের মূল্য আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের এআইআর (অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিচার্স) শাখা অনুসন্ধ্যানে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার (এআইআর) মো. শরফুদ্দিন মিয়া আজ সোমবার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সাগরিকার ইস্পাহানি সামিট অ্যালায়েন্স টার্মিনাল লিমিটেডে শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় রবিবার (২৪ এপ্রিল) খেজুরের আড়ালে সিগারেট আমদানির ঘটনা বেরিয়ে আসে।

কাষ্টমস সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের জুবিলী রোডের কাদের টাওয়ারের আমদানিকারক সুচনা ইন্টারন্যাশনাল। যার মালিক চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির বক্তপুরের জাহাঙ্গীর আলম। প্রতিষ্ঠানটি সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৪০ ফুট কনটেইনারে করে খেজুর আমদানি করেন। গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর চালানটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের জেবেল আলি বন্দর হতে জাহাজীকরণ করা হয়। ৩০ ডিসেম্বর চালানটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়। দীর্ঘদিন সময় পার হলেও আমদানিকারক বিল অব এন্ট্রি দাখিল না করায় পণ্যচালানটি কিপডাউন করার জন্য ইস্পাহানী সামিট এলায়েন্স টার্মিনালকে চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ইয়ার্ডে ফেলে রাখায় সন্দেহবশত কন্টেইনারটি গত ২৪ এপ্রিল খুলে কায়িক পরীক্ষা করা হয়। এতে অভিনব অনিয়ম এবং রাজস্ব ফাঁকির বিষয়টি নিশ্চিত হয় কাস্টমস।

কন্টেইনার খুলে শতভাগ কায়িক পরীক্ষার পর ২৭৭২ কার্টনের মধ্যে ১৯৮৩টি কার্টনে উপরিভাগে খেজুর নীচে মন্ড ব্রান্ডের বিদেশি সিগারেট পাওয়া যায়। আর বাকি ৭৮৯ কার্টনে শুধুমাত্র খেজুর ছিল। মূলত পণ্য চালান খালাসের আগে কাস্টমসের কায়িক পরীক্ষায় যাতে এই অনিয়ম ধরা না পড়ে সেজন্যই ৭৮৯ কার্টনে শুধুমাত্র খেজুর রাখা হয়েছিল। এই কার্টনগুলো কন্টেইনারের একেবারে সামনের দিকে রাখা হয়েছিল। যাতে কাস্টমসে চোখ এড়ানো যায় ।পরে ১৯৮৩ কার্টন খুলে পাওয়া যায় ৫৫ লাখ ৫২ হাজার ৪শ শলাকা মন্ড ব্রান্ডের সিগারেট। মাত্র ১১ হাজার ৮৫৬ কেজি খেজুর পাওয়া যায়। সিগারেটের বাজারমূল্য ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা। আর এতে রাজস্ব ফাঁকির পরিমান ছিল ৭ কোটি ১১ লাখ টাকা।

জানতে চাইলে উপ কমিশনার মো. শরফুদ্দিন মিয়া বলেন, প্রায় চার মাস ধরে পড়ে থাকায় আমাদের সন্দেহ হলে কন্টেইনার খুলে কায়িক পরীক্ষায় রাজস্ব ফাঁকির এবং অনিয়মের বিষয়টি ধরা পড়ে। অত্যন্ত কৌশলে দক্ষতার সাথে কার্টনের পরের অংশে খেজুর এবং নীচের অংশে সিগারেট সাজানো হয়েছে। এখানে বোঝার উপায় ছিল না সিগারেট থাকবে। পরে সেটিই প্রমাণিত হলো। মূলত গোয়েন্দা নজরদারির ভয়ে কন্টেইনার এনে সিগারেট চালানটি আর খালাস করতে পারেনি। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে সোয়া সাত কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করেছিল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের সুচনা ইন্টারন্যাশনাল। আমদানিকারকের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমুলক পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানান তিনি।