অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

হালদা নদীতে নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছ

0
.

জিয়া চৌধুরী, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ

প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ নামে ঘোষিত চট্টগ্রামের হালদা নদীতে কয়েকটি স্থানে কার্প জাতীয় (রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউস) মা মাছ ‘নমুনা ডিম’ দিয়েছে।

গতকাল শনিবার রাত ১০টা থেকে ১২টার দিকে তীরবর্তী কয়েকটি স্থানে ডিম সংগ্রহকারীদের কেউ কেউ ৫০ থেকে ২০০ গ্রাম পর্যন্ত ডিম পেয়েছেন বলে জানা গেছে।

হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় ডিম সংগ্রাহকরা নমুনা ডিম ছাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

.

ঘূর্ণিঝড় আসানির প্রভাবে গত কয়েকদিন যাবত হালদা নদীর উজানে বৃষ্টিপাত হলেও তা পুরোদমে ডিম ছাড়ার জন্য পর্যাপ্ত ছিলনা। এরই মধ্যে ‘নমুনা ডিম’ ছাড়ল মা মাছ। এ মাসের শুরু থেকে পূর্ণ প্রজনন মৌসুম শুরু হওয়ায় নদীতে অপেক্ষায় ছিলেন ডিম সংগ্রহকারী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁরা আশা করছেন, চলতি পূর্ণিমা তিথিতে বজ্রপাতসহ ভারী বৃষ্টি হলে জোয়ার কিংবা ভাটার সময় নদীতে মা মাছ পুরোদমে ডিম ছাড়া শুরু করতে পারে।

হাটহাজারী উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মেহেরুন নেসা জানান, হাটহাজারীর গড়দুয়ারা ও মার্দাশা ইউনিয়নের মাছুয়াঘোনা ও নয়াহাট এলাকা সহ কয়েকটি স্থানে অপেক্ষায় থাকা ডিম সংগ্রহকারীদের কেউ কেউ নমুনা ডিম পেয়েছেন। তবে সেটার পরিমান খুব বেশি নয়।

গত কয়েক দিনে সরেজমিনে দেখা গেছে, দুই উপজেলার ৪টি সরকারি হ্যাচারি ও প্রায় দেড় শতাধিক মাটির কুয়ায় রেণুপোনা ফুটানোর জন্য নানা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন উপজেলা প্রশাসন ও সংগ্রহকারীরা। প্রশাসন ও নদীর গবেষকদের ধারণা, এবার নদীর পরিবেশ বিগত সময়ের তুলনায় সবচেয়ে বেশি নিরাপদ। এ কারণে এবার ডিম সংগ্রহের পরিমাণ বাড়তে পারে। এবার নদী থেকে ডিম সংগ্রহ করতে প্রায় ৪-৫শত নৌকা নিয়ে প্রায় ১০০০ ডিম সংগ্রহকারী অপেক্ষায় আছেন।

মাছুয়াঘোনা এলাকার ডিম সংগ্রহকারী শফিউল আলম জানান, গতকাল রাত ১০টার দিকে মাছুয়াঘোনা, নয়াহাট এলাকাসহ একাধিক স্থানে নমুনা ডিম পাওয়া গেছে। ডিম সংগ্রহকারীদের কেউ কেউ ৫০ গ্রাম থেকে ২০০ গ্রাম পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করেছেন।

হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের প্রভাষক ড. মোঃ শফিকুল ইসলাম পাঠক ডট নিউজকে বলেন, ‘গতকাল রাতে মা মাছ নমুনা ডিম ছেড়েছে। সামনে বজ্রসহ বৃষ্টি হলে পুরোদমে ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা নদীতে পর্যবেক্ষণে রয়েছি। তবে চলতি তিথিতে মা মাছ ডিম না ছাড়লে সেক্ষেত্রে পরবর্তী অমাবষ্যার সময় মা মাছ ডিম ছাড়বে। হালদায় পানির ভৌত ও রাসায়নিক গুরুত্বপূর্ন প্যারামিটারগুলো এখন আদর্শমানের ভিতর রয়েছে বলে জানান তিনি।

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিদুল আলম পাঠক ডট নিউজকে জানান, ডিম ছাড়ার আগে মা মাছ খুবই দুর্বল থাকে। তাই এ সময়টাতে মা মাছ নিধনকারীদের তৎপরতা বেড়ে যায়। এসব অপতৎপরতা রোধে উপজেলা প্রশাসন দিনরাত তৎপর রয়েছে। এছাড়া ডিম সংগ্রহকারীদের প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতে উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা ও তদারকি করা হচ্ছে।