অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

র‌্যাব সদস্যদের গণপিটুনী: থমথমে বারইয়ারহাট পৌর বাজার, গ্রেপ্তার আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ

0
বৃহস্পতিবার বিকালে তোলা ছবি।

ডাকাত ভেবে জেলার মীরসরাইয়ের বারইয়ারহাট পৌরবাজারে দুই র‌্যাব সদস্যসহ ৩ জনকে গণপিটুনি দেওয়ার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। অভিযানের কারণে বৃহস্পতিবার (২৬ মে) দিনভর পৌরবাজারের অনেক দোকান খোলেননি ব্যবসায়ীরা। র‌্যাব ও পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকা স্থানীয়রাও আসছেন না বাজারে। পুরো এলাকায় আতঙ্ক ও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রায় ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে, স্থানীয়দের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ উঠলেও র‌্যাব কিংবা পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বুধবার রাতে ঘটনার পর এভাবে পড়ে থাকে আহত ৩ জন।

বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সরেজমিন ঘটনাস্থলে পৌর বাজার এলাকা গেলে দেখা যায়, পৌর বাজারের শান্তিরহাট সড়কের পাশের ভানু মার্কেটের সবকটি ফুল ও স্টেশনারি দোকান বন্ধ রয়েছে। এসময় স্থানীয় জামালপুর গ্রামের একটি পরিবারের লোকজন তাদের এক সন্তানকে (ভানু মার্কেটের দোকানদার) খুঁজে পাচ্ছেন না বলে এ প্রতিবেদককে জানান। অবশ্য পরে মার্কেটের পাশের এক দোকানী থেকে জানা যায়, বুধবারের ঘটনা তদন্তে র‌্যাব-৭ এর ফেনী ক্যাম্পে প্রায় ১৫ জনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যাদের মধ্যে ব্যবসায়ী ও স্থানীয় যুবক রয়েছে। অবশ্য এ বিষয়টি র‌্যাব ও পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা যায়নি।

এদিকে বুধবারের ঘটনা সম্পর্কে বারইয়ারহাট পৌর এলাকার দোকানদার থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ কেউই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। বাজারের ব্যবসায়ী ও পথচারীদের মধ্যে গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভয়ে কেউ বাজারে অবস্থান করছে না।

বুধবার (২৫ মে) সন্ধ্যা ৭ টার সময় বারইয়ারহাট পৌরবাজারের উত্তর পাশে একটি ট্রাককে পেছনে থাকা র‌্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্পের সদস্যরা দাঁড়ানোর জন্য সিগন্যাল দিলে ট্রাকটি না থামিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় ট্রাকটি বারইয়ারহাট পৌর বাজারের ফুট ওভারব্রিজের কাছে এসে থামানোর পর ড্রাইভার ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা প্রাইভেটকারে সাদা পোশাকে থাকা র‌্যাব সদস্যদের গণপিটুনি দেয়। কারটি ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় র‌্যাবের দুই সদস্যসহ তিন জন আহত হন।

আহতরা হলেন, র‌্যাবের সৈনিক মো. শামীম কাউসার (২৯), আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্য মোখলেস (৩৩), র‌্যাবের সোর্স পারভেজ (২৮)। তাদের মাথা ও শরীরে প্রচুর জখম হয়েছে। আহত র‌্যাব সদস্যদেরকে বারইয়ারহাট জেনারেল হাসপাতাল ও বারইয়ারহাট মেডিক্যাল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ২৫০ শয্যার ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। বুধবার রাতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মো. শামীম কাউসার ও মোখলেসকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়েছে। আহত পারভেজকে ২৫০ শয্যার ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূর হোসেন মামুন বলেন, র‌্যাব সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত থানায় কোন মামলা করেনি র‌্যাব। এঘটনায় কাউকে আটক করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে আমরা অবগত নই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বারইয়ারহাট পৌরবাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

র‌্যাব সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের ও জড়িতদের গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারি পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছারের মোবাইলে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।