অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

‘বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ সম্মাননা পাচ্ছেন সাংবাদিক নাসিরুদ্দিন চৌধুরী

0

 

.

দেশের অন্যতম শিল্প গ্রুপ বসুন্ধরা’ গ্রুপের ‘বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ সম্মাননা পাচ্ছেন চট্টগ্রামের সিনিয়র সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিরুদ্দিন চৌধুরী।

আগামী ৩০ মে ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আসিসিবি) এই সন্ধ্যা ৭ টায় এ সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠিত হবে।
অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রধান অতিথি থাকবেন মন্ত্রী তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি, বিশেষ অথিতি, বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম, চেয়ারম্যান বাংলাদেশ প্রেসকাউন্সিল,অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রহমান, সম্পাদক আজকের পত্রিকা , জুরিবোর্ড প্রধান, বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২১। সম্মাননা প্রাপ্ত প্রত্যেক গুণী সাংবাদিককে ৫০ হাজার টাকা, উত্তরীয় ও সম্মাননাপত্র প্রদান করা হবে।এছাড়া দেশের বিভিন্ন সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত অনুসন্ধানী রিপোর্টের জন্য নির্বাচিত ১১ জন রিপোটারকে পুরস্কৃত করা হবে।

বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ সম্মাননার জন্য মনোনীত করায় বসুন্ধরা’ গ্রুপের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সাংবাদিক নাসির উদ্দিন চৌধুরী এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন-‍‍‌‌ ‌‌‍‍‍‍‍‍বিত্ত থাকলেই সব কিছু হয় না। চিত্তের ঔদার্য প্রয়োজন। হৃদয়ের বিশালত্ব একজন মানুষকে মানবিক সত্তায় প্রতিষ্ঠিত করে। তাঁর কর্মকে সমাজে সাধারণ্যের কাছে অমর করে রাখে। কর্ণধার আহমেদ আকবর সোবহান সাহেব বিশাল হৃদয়ের একজন মানুষ। যিনি সামাজিক দায়বদ্ধতায় অনেক কাজ করেন।সারাদেশের তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করা ৬৪ জন সাংবাদিকদের সম্মাননা প্রদানের নতুন উদ্যোগের পাশাপাশি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য ১১ জন রিপোর্টারকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান একটি অনেক বড় কাজ। বিশাল হৃদয়ে অধিকারী না হলে এত বড় কর্মযজ্ঞের উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব নয়।

চট্টগ্রামের কৃতি এই সাংবাদিক ১৯৫৩ সালে পটিয়া উপজেলা হুলাইন গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে চারদশক কাল সাংবাদিক হিসাবে কাজ করেছেন। অসুস্থতা কারণে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।

নাসিরুদ্দিন চৌধুরী ১৯৭১ সালে এইচএসসি পরীক্ষার পূর্বে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। ১৯৬৯ সালে চরকানাই হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করে পটিয়ার হুলাইন ছালেহ-নূর কলেজে ভর্তি হন। মুক্তিযুদ্ধ শেষে স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে এইচএসসি পাস করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অনার্সে ভর্তি হন। ১৯৭৫ সালে অনার্স পরীক্ষার পূর্বে রাজনৈতিক কারণে তিনি সামরিক সরকারের হাতে গ্রেফতার হওয়ায় পরীক্ষা দেওয়া হয়নি।

বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ ও সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রচারাভিযান চালাতে গিয়ে ধরা পড়েন। তিন বছর চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী কারাগারে কাটিয়ে ১৯৭৮ সালে মুক্তি লাভ করেন। ১৯৮১ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বিএ অনার্স ও ১৯৮২ সালে এমএ পাস করেন।

ঢাকার সাপ্তাহিক ‘বিচিত্রা’ ও বিশিষ্ট সাংবাদিক মাহবুব-উল আলম সম্পাদিত চট্টগ্রামের সাপ্তাহিক ‘ইশতেহার’ পত্রিকায় তাঁর সাংবাদিকতা জীবনের সূচনা। ১৯৮২-৮৩ সালে তিনি খ্যাতিমান সাংবাদিক হাবিবুর রহমান খান সম্পাদিত দৈনিক ‘সেবক’ পত্রিকায় প্রথমে চিফ রিপোর্টার ও পরে বার্তা সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন।

১৯৮৬ সালে দেশবরেণ্য সাংবাদিক কে জি মুস্তাফার সম্পাদনায় চট্টগ্রাম থেকে দৈনিক পূর্বকোণ প্রকাশিত হলে তিনি সে পত্রিকায় যোগদান করেন। এক বছর যুগ্ম বার্তা সম্পাদক পদে কাজ করার পর তিনি বার্তা সম্পাদক হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন এবং ২০০৫ সাল পর্যন্ত একই পদে কর্মরত ছিলেন।

২০০৮ সালে চট্টগ্রামের ‘ডেইলি পিপল’স ভিউ’ পত্রিকায় ডেপুটি এডিটর, ২০০৯ সালে ঢাকার দৈনিক জনকণ্ঠে এসিস্ট্যান্ট এডিটর, একই বছরের শেষ দিকে ঢাকার দৈনিক ‘ভোরের ডাকে’ এক্সিকিউটিভ এডিটর এবং ২০১০ সালে ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ পত্রিকায় ডেপুটি এডিটর হিসেবে কাজ করেন। বাংলাদেশ প্রতিদিনে কাজ করার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং হৃদযন্ত্রে অপারেশনের পর সেখানে আর চাকরি করা সম্ভব হয়নি। তিনি ২০১৩ সালে ‘দৈনিক পূর্বদেশ’-এ নির্বাহী সম্পাদক পদে যোগদান করেন এবং ২০১৬’র মধ্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত উক্ত দায়িত্ব পালন করেন; অতঃপর অসুস্থতার কারণে অব্যাহতি নেন।

নাসিরুদ্দিন চৌধুরী স্কুলের ছাত্র থাকা অবস্থায় ছাত্ররাজনীতির সাথে জড়িত হন এবং ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের নেতৃত্বে পরিচালিত সকল আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকায় অংশগ্রহণ করেন।