অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চট্টগ্রামে গণপরিবহণে নীতিমালা প্রণয়নের দাবীতে ক্যাবের স্বারকলিপি

0
মেয়রকে স্বারক লিপি দিচ্ছেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন।

চট্টগ্রাম মহানগরীতে গণপরিবহন বিশেষ করে ইজিবাইক, টমটম, হিউম্যান হলার, সিএনজি টেক্সি এবং বাস সার্ভিসের জন্য সুনির্দিষ্ঠ নীতিমালা প্রণয়নসহ নগরীতে গণপরিবহনের বেহাল দশা রোধ জরুরী উদ্যোগ দাবি করে সিটি মেয়রকে স্বারকলিপি দিয়েছে ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষনকারী জাতীয় প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) নেতৃবৃন্দ।

সোমবার দুপুরে নগর ভবনে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন ক্যাব নেতৃবৃন্দ।  স্বারক লিপিতে ক্যাব জানায়, নগরীতে চলাচলকারী ইজিবাইক, টমটম, হিউম্যান হলার, সিএনজি টেক্সি এবং বাস সার্ভিসের জন্য সুনির্দিষ্ঠ নীতিমালা না থাকায় ও আইন প্রয়োগে ট্রাফিক বিভাগের কঠিন নজরদারি না থাকায় যাত্রিরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তাই নগরীতে চলাচলকারী ইজিবাইক, টমটম, হিউম্যান হলার, সিএনজি এবং বাস সার্ভিসের জন্য অনতিবিলম্বে সুনিদিষ্ঠ নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা, নগরীতে চলাচলকারী গাড়ী, চালক ও হেলপারে ডাটাবেস তৈরী, চালক ও হেলপারদের জন্য নিরাপদ সড়ক বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষন, বিশেষ করে জেন্ডার সংবেদনশীল প্রশিক্ষন প্রদান, তাদের সাথে নিয়মিত সভার আয়োজন, যাত্রিদের বিঢম্বনা রোধে সিএমপি ও থানা পর্যায় হেলপলাইন চালু, প্রধান প্রধান স্টেশনগুলিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সাংবাদিক, ক্যাব, শ্রমিক ও যাত্রী প্রতিনিধি নিয়ে যাত্রি হয়রানি তদারকি কমিটি গঠন করা প্রয়োজন।

স্বারকলিপি প্রধানকালে উপস্থিত ছিলেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব নগর কমিটির সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম সিটিকর্পোরেশনের কাউন্সিলর আবিদা আজাদ, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সভাপতি  আবদুল মান্নান, ক্যাব চট্টগ্রাম নগর কমিটির সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক এএম তৌহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পদক জন্নাতুল ফেরদৌস। একই স্মারকলিপি সিএমপির পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহারের কাছেও দাখিল দেয়া হয়েছে বলে ক্যাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ্য করা হয়েছে।

স্মারকলিপিতে ক্যাব এর দাবিগুলির মধ্যে নগরীতে চলাচলকারী বিভিন্ন গণপরিবহন আরটিসি কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়ার চার্ট ঝুলানো, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে তার প্রতিকারে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থাগ্রহন, সিএনজি টেক্সি মিটারে চালানো ও যাত্রীর ইচ্ছায় গন্তব্যে যাওয়া নিশ্চিত করা, মিটারে সিএনজি না চালানোর জন্য সিএমপি থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা, নগরীর প্রধান সড়কগুলিতে যত্রতত্র দাড়িয়ে যাত্রী উঠা-নামা এবং রাস্তায় অধিক সময় ধরে গাড়ীপার্কিং করে রাখা বন্ধ করা, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীর আহবানে চট্টগ্রামে লক্কর যক্কর বাসগুলি অপসারন করে নতুন বাস নামানো, নগরীতে চলমান বাসের সংখ্যা পরিসংখ্যান হালনাগাদ করা, রেজিস্ট্রেশনবিহীন ইজিবাইক, হিউম্যান হলারগুলি চাঁদাবাজি ও টোকেন বানিজ্য বন্ধ করা, নগরীতে চলাচলের জন্য অনুমতি আছে বাসগুলির তালিকা হালনাগাদ করা সকাল বেলায় অফিস ও কলকারখানা মুখি যাত্রী ভোগান্তি কমাতে সকাল-বিকাল রাস্তায় উপস্থিতি নিশ্চিত করা, হঠাৎ করে বিকল্প কিছু না করে কোন যানবাহন বন্ধ না করা, গণপরিবহনের সমস্যা সমাধান ও এসংক্রান্ত নীতিমালা প্রনয়নের জন্য মেট্রো আঞ্চলিক পরিবহন কমিটি থাকলেও কমিটি যাত্রী/ভোক্তার প্রতিনিধি না থাকায় আরটিসি কমিটি বাস মালিক, শ্রমিক ও পরিবহন ব্যবসায় জড়িতরাই যাবতীয় নীতিনির্ধারন করে ভোক্তা স্বার্থ লংগন করছে। তাই জরুরী ভাবে আঞ্চলিক পরিবহন কমিটিতে জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক ভাবে স্বীকৃত ভোক্তা অধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের দাবী জানান।

এছাড়াও ট্রাফিক বিভাগের কার্যক্রম নজরদারির আওতায় আনা দরকার। প্রয়োজনে নাগরিক ভোগান্তি নিরসনে পুলিশ, জেলা প্রশাসন, সিটিকর্পোরেশন, বিআরটিএ ও ক্যাব প্রতিনিধি নিয়ে গণশুণাণীর আয়োজন করা, চট্টগ্রাম মহা নগরীতে জনজীবনের গতি সুরক্ষা ও একটি সুশৃংখল ট্রাফিক ব্যবস্থায় গড়ে তুলতে জরুরী ভাবে ট্রাফিক বিষয়ে জনসাধারনের মাঝে সচেতনতা বাড়ানো, অবৈধ ও যত্র-তত্র পার্কিং বন্ধ করা, বিভিন্ন যানবাহনের গতির অসাম্যতা ও যাবাহনের সৃষ্ঠ শব্দ ও পরিবেশ দুষন বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা, অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট কাটা, নির্মান, রাস্তার উপর ডাস্টবিন নির্মান বন্ধ করা, নির্মান সামগ্রী ও ময়লা রাখা বন্ধ, ক্রসিং পয়েন্টে যাত্রীদের উঠা-নামার প্রবণতা বন্ধ করা, টার্মিনালের অভাব দূরীকরনে টার্মিনালের সংখ্যা বাড়ানোর ব্যবস্থা করা, ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নে যান্ত্রিক চালকেদের ড্রাইভিং লাইসেন্স গলায় ঝুলিয়ে রাখা, যান্ত্রিক যান বাহনে ট্রাফিক সচেতনতা ও ট্রাফিক আইন বিষয়ে নির্দেশাবলী সম্পর্কিত স্টিকার লাগানো, গুরুত্বপূর্ন ক্রসিংয়ে অটো ও ম্যানুয়েল সিগনাল লাইট স্থাপন, ট্রাফিক পুলিশ বক্স নির্মান, সিটিকর্পোরেশনের অপরিকল্পিত যাত্রী ছাউনী অপসারন করা, পে-পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা, কোমলমতি শিশুদের জন্য ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্ঠি করা, নম্বরবিহীন গাড়ী রাস্তায় না চলা, দিনের বেলায় রাস্তার উপর ট্রাক/কভার্ড ভ্যান লোড-আনলোড বন্ধ করা, নির্ধারিত আসনের চেয়ে অধিক যাত্রী বহন বন্ধ করা অন্যতম। খবর: প্রেসবিজ্ঞপ্তি