অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

“নাসিরাবাদ স্কুলের সুবর্ণ জয়ন্তী নিয়ে এসব কি হচ্ছে!”

0
নাসিরাবাদ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়
Hridoy Hasan

Hridoy Hasan

১৯৬৭-২০১৬ ইং আমাদের প্রিয় স্কুলের ৫০ বছর পূর্তি। মানে সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবের স্বপ্ন…

অনেক আশা আখাঙ্কা নিয়ে গত তিনমাস আগে সুবর্ণ জয়ন্তীর প্রস্তুতি শুরু করলাম। একক প্রচেষ্টায় সবার সাথে কথা বলেই বিভিন্ন ব্যাচের প্রাক্তনদের নিয়ে প্রিয় স্কুলের টিচার্সরুমে একের পর এক প্রাক প্রস্তুতিসভা করে গেছি। প্রাক্তন কিছু সিনিয়র ভাই ও প্রধান শিক্ষক জনাব ফরিদ আহমদ হোসাইনী সাহেবের পরামর্শ করে এগিয়ে যাই।

প্রাথমিক পর্যায়ে সুবর্ণ জয়ন্তীর তারিখ নির্ধারণ করা হয় ২৫-২৬ জানুয়ারি ২০১৭ ইং। এরমধ্যে সব ব্যাচের প্রাক্তন ছাত্রের সমন্বয়ে স্কুল অডিটোরিয়ামে বৃহৎ পরিসরে তিনটি প্রস্তুতিসভা অনুষ্টিত হয়। যার প্রত্যেকটিতে ৫/৬ শতাধিক প্রাক্তন ছাত্রদের উপস্থিতি ছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আগামী ২৪-২৫ মার্চ ২০১৭ ইং সুবর্ণ জয়ন্তীর তারিখ নির্ধারণ করা হয়। সবার প্রচন্ড আগ্রহ এবং ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সুবর্ণ জয়ন্তীর কাজ এগিয়ে যেতে থাকে। এর মধ্যে ১২ই ডিসেম্বর অস্থায়ী কার্যালয় উদ্বোধন এবং সুবর্ণ জয়ন্তীর রেজিট্রেশন শুরু হয়। ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্টানকে সামনে রেখে প্রাক্তন ছাত্রদের মধ্যে যেন উৎসাহ-উদ্দীপনার জোয়ার জাগে।

কিন্তু কিছু সুবিধাভোগীরর ছত্রছায়ায় বিনা নোটিশে পেশিশক্তিরর উদয় হয়। তাদের মিলিত প্রযোজনায় অস্থায়ী কার্যালয়ে বসা অবস্থায় ১৪ই ডিসেম্বর রক্তাক্ত হামলার পর আহত হয়ে মাথায় সাতটি সেলাই নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে শয্যাশায়ী হই। প্রচুর রক্তক্ষরণের ফলে পরবর্তীতে চিকিৎসকের পরামর্শে সম্পুর্ণ বেডরেস্টে থাকতে বাধ্য হই। সুবর্ণ জয়ন্তীর প্রধান এবং একমাত্র উদ্যোক্তার অনাকাঙ্কিত পর্দার অন্তরালে চলে যাওয়াটা যেন উৎসবের গতিকে শ্লথ করে দেয়। ফলে আজ অমুক তো কাল তমুক,বছর দুই পড়ুক -আর নাই পড়ুক, সব্বাই নেতা!!! জানিনা কেমন হবে উৎসব, কেমন চলবে এই উৎসবের গাড়ি…

একেবারে শূন্য থেকে সব গুছিয়ে একটা কিছু দাঁড় করাতে পারে সেই নেতা। আমি বলছিনা আমি অনেক বড় কিছু। কিন্তু ১৯৯৩ সালে ১ম পূণর্মিলনী হওয়ার পর কেউ আর কোন খবর রাখেনি। এভাবেই কেটে গেল ১৬টি বছর!!এই শূন্যতা পুরণ করতে আমিই এগিয়ে এসেছি ২০০৯ সালে সিনিয়রদের দ্বারেদ্বারে গিয়ে কথা বলে দীর্ঘ ৫মাস অক্লান্ত পরিশ্রম করে ২য় পূণর্মিলনীর সব কর্মকান্ড এগিয়ে নেয় এককভাবে অন্যদের সহযোগিতায়। ২০১০ সালের পর আবারো সব নিস্তেজ হয়ে পড়ে।গভীর শূন্যতা বিরাজ করতে থাকে।২০১৬ সাল শেষ হয়ে যাচ্ছে অথচ স্কুলের ৫০ বছর পূর্তির কোন উদ্যোগ নেই। আবারো আমিই সেই শূন্যতার মাঝে এগিয়ে এলাম। যাদের সাথে সম্ভব হয়েছে কথা বলে সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব করার জন্য একক উদ্যোগে বিভিন্ন ব্যাচের সাথে মিটিং এর পর মিটিং করে সব গুছিয়ে নেই।সবকিছু যখন গুছানো শেষ হয়েছে এবার…অন্যদের নেতা হওয়ার শখ জেগেছে।আরে এতই যখন নেতা শখ,তবে আরো আগে উদ্যোগটা নিলেনা কেন?

সবকিছু যখন রেডি হয়ে যায় তখন নেতৃত্ব দেওয়াটা সহজ। শূন্য থেকে গড়ে তুলে আনা অত সহজ নয়।শূন্য থেকেই যে সবকিছু রেডি করতে পারে সেইই সত্যিকারের নেতা ও একজন প্রকৃত সংগঠক। ১৯৯৩-২০১৬ এই ২৪ বছরের মধ্যে কেউ একজন কেন এগিয়ে আসেনি? বারবার কেন আমাকেই এগিয়ে আসতে হল? আবার এই আমাকেই কেন রক্তাক্ত করা হল…কেন? আমিতো ঐক্যবদ্ধ সুবর্ণ জয়ন্তী চেয়েছি বলেই সবাইকে ডেকেছি। তবুও কেন এই বিভাজন আর রক্ত-ঝরা???

প্রাক্তন ছাত্রদের মধ্যে অনেক নামীদামী আছেন। কিন্তু স্কুলের ব্যাপারে….স্কুলের ফুটবল খেলায়-বাবু, ক্রিকেট খেলায়-বাবু, হকিতে- বাবু, স্কাউট টিম গোছাতে-বাবু, বি.এন.সি.সি. দল গোছাতে-বাবু, স্কুলের যেকোন সমস্যায় বাবু। আর এতো বড় আয়োজনে বাবু থাকতে পারবেনা!!?? স্কুলের বিভিন্ন প্রয়োজনে যাদের ১দিনের সহযোগিতা নেই আজ তারাই বড় নেতা বনে যাচ্ছে। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারব স্কুলের প্রয়োজনে আমার চেয়ে বেশি আর কোন প্রাক্তন করেছেন? এগিয়ে আসুন? আমাদের সুবর্ণ জয়ন্তীর উৎসব দল-মত-পথ-সিনিয়ির-জুনিয়র সবাইকে সাথে নিয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ের আনন্দ উৎসব মুখর পরিবেশে করার আমার-আপনাদের স্বপ্ন কতটুকু পুরণ হবে তা নিয়ে আমরা চিন্তিত। নৈতিকতা আর অনৈতিকতার যে বিভাজন রেখা তৈরি হয়েছে তার সুষ্ঠু সমাধান এবং প্রকৃত উদ্যমী সংগঠকদের যথাযথ মূল্যায়ন নাকরা হলে স্বপ্নটা যেন অধরাই থেকে যাবে।সুবর্ণ জয়ন্তীর এই স্বপ্নটা আমিই দেখিয়েছি। তাই ভালো-মন্দ নিয়ে আমারই রক্তক্ষরণটা বেশি। আমি চাই সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এই কর্মযজ্ঞ এগিয়ে চলুক। এই বিভাজন রেখায় আমি আর অবস্থান করতে পারছিনা বলে দুঃখিত।

সুবর্ণ জয়ন্তীর কর্মকান্ডে আমি আর থাকতে পারছিনা বলে দুঃখিত। চট্টগ্রামে নয় শুধু, বাংলাদেশেরর কোথাও স্কুলের পূণর্মিলনীতে রক্ত ঝরার ইতিহাস নাই। যেখানে আমার রক্ত ঝরেছে সেখানে আমি আর থাকতে পারছিনা। ক্ষমা করে দিও সিনিয়র-জুনিয়র প্রাক্তন বন্ধুরা।

”পাঠকের ফেইসবুক” বিভাগের সকল সংবাদ পাঠকের ফেইসবুক থেকে সংগৃহীত, এই বিভাগে প্রকাশিত সকল সংবাদ পাঠক কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই বিভাগে প্রকাশিত কোন সংবাদের জন্য পাঠক.নিউজ কতৃপক্ষ কোনো ভাবেই দায়ী নয়।