ফটিকছড়ি রোসাংগিরী স্কুলের শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠান আজ থেকে শুরু
ফটিকছড়ি(চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি।
উত্তর চট্টগ্রামে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফটিকছড়ির রোসাংগিরী উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে আজ ১২ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে ৩ দিন ব্যাপী বর্ণাঢ্য নানা কর্মসূচি।
এ উপলক্ষে শতবর্ষ উদযাপন পরিষদ ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহন করে। আজ স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও ত্বরিকত ফেডারেশেনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ তৈয়বুল বশর মাইভাণ্ডারীর সভাপতিত্বে আগামী প্রথম দিনে রয়েছে জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের অংশ গ্রহনের মধ্যে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, বৃক্ষরোপণ ও দরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসুচী।
আগামীকাল দিনের আলোচনা সভায় উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ফটিকছড়ি থেকে নির্বাচিত সাংসদ ও ত্বরিকত ফেডারেশেনের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী এমপি। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পানি সম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি। প্রধান আলোচক থাকবেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, বিশেষ অতিথি থাকবেন। পি.এইচ.পি গ্রুপের চেয়ারম্যান সুফী মিজানুর রহমান ।
শনিবার সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়ব আ জ ম নাছির উদ্দিন। প্রধান আলোচক থাকবেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম.এ সালম। চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড.অনুপম সেন, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ, চট্টগ্রাম উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর শাহেদা ইসলাম বিশেষ অতিথি থাকবেন।
এছাড়া ৩ দিন ব্যাপী বিভিন্ন আয়োজনে থাকছে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, বৃক্ষরোপণ ও দরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসুচী, প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মিলন মেলা, স্মৃতি চারণ, গান, নৃত্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
দশম শ্রেণীর ছাত্রী উর্মিলা চৌধুরী ও শর্মিলা চৌধুরী বলেন, শতবর্ষ উদযাপন হচ্ছে আমাদের অনেক অনন্দ হচ্ছে, সাথে সাথে এ শতবর্ষে উদযাপন উপলক্ষে আমাদের স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা টাকা, শ্রম, মেধা দিয়ে অনেক কাজ করে যাচ্ছে তাদের প্রতি আমরা কৃজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
প্রাক্তন শিক্ষার্থী ষিশু শীল বলেন, আমাদের স্কুলের অনেক স্মৃতির কথা মনে পড়ছে। কথা বলতে বলতে চোখের জল টলমল করছে। বাড়ীর পাশে স্কুল, পড়তে গেলে স্কুলে, খেলতে গেলে স্কুলে, আড্ডা দিতে স্কুলে, স্কুল আর স্কুলে স্মৃতির কথা বলে শেষ করা যাবেনা। যারা একশত বছরে আগে স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন তারা আজ আমাদের মাঝে নেই, তাদের অবদান আমরা কখনো ভুলতে পারবোনা। তাদের এ অবদান চিরকাল অমর হয়ে থাকবে ফটিকছড়িবাসীর হৃদয়ে ক্যাম্পাসে।
স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মুহাম্মদ বেলাল উদ্দিন আকাশ বলে, বৃহত্তর ফটিকছড়িতে আমাদের স্কুল ১৯১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, এ স্কুলে আমাদের বাড়ীর পাশে স্কুল, তাই লেখাপাড়ার পাশা-পাশি স্কুলের মাঠে সহকর্মীদের নিয়ে আমাদের অনেক স্মৃতি অনেক স্মৃতি আজ চোখের সামনে ভেসছে, যা বলে বুঝা কখনো সম্ভব না। দেখতে দেখতে আজ স্কুলের শতবর্ষা পালিত হচ্ছে আমাদের জন্য গৌরময়।
রোসাংগিরী ইউপি চেয়ারম্যান ও রাজনীবিদ শোয়েব আল সালেহী বলেন, ঐতিহব্যাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতবর্ষ উদযাপন করার জন্য প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা এক বছরের ধরে অনেক পরিশ্রমসহ বিভিন্নসহ সহযোগিতা করে যাচ্ছেন তাদের প্রতিকৃজ্ঞা প্রকাশ করেন এবং উক্ত অনুষ্ঠান সফলভাবে পরিসমাপ্তি করতে পারে সবার সুদৃষ্টি কামনা করেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আকবর আলী বলেন, এ স্কুল উত্তর চট্টগ্রামের জন্য গৌরময় স্কুল, এ স্কুলের শতবর্ষ হতে যাচ্ছে আমি গর্ববোধ করছি সাথে স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য এ স্কুলের যথাসময়ে শতবর্ষ উদযাপিত হচ্ছে তা আমাদের একটি গর্ব।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও বাংলাদেশ ত্বরিকত ফেডারেশেনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ তৈয়বুল বশর মাইভাণ্ডারী বলেন, উত্তর চট্টগ্রামের প্রাচীতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীদের দেশের বড় পদে আছে, প্রবাসীসহ সকল শিক্ষার্থীদের অনেক পরিশ্রম সার্বিক সহযোগিতা শতবর্ষে আমাদের অনুপ্রেরণ যুগিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
উল্লেখ্য স্কুলের স্বপ্নদেষ্টা স্বগীয় গুরু দাশ শীল, কালী কুমার শীলের ৪ কানি ১৮ গণ্ডা জমির উপর, জগদদ্ধ মুহুরী, চন্দ্র বুনার দেব, শ্রীরোদ চন্দ্র চৌধুরী, নবীন চন্দ্র দাস, স্বগীয় নহিন চন্দে দে, রাজচন্দ্র দেব, প্রাণহরি সেন, মরহুম আরবান আলী সওদাগর, বরনা চরণ সরকার, শ্রীহীরেন্দ্র লাল দে, শ্রীযুক্ত জীতেন্দ্র নারায়ন চৌধুরী ১৯১৭ সালে এ স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।