অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

আজ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৫তম শাহাদাত বার্ষিকী

0
ziaur-rahman
বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা ও স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৪তম শাহাদাত বার্ষিকী আজ। ১৯৮১ সালের এই দিনে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্যের হাতে নিহত হন তিনি।

শোকাবহ এ দিনটি স্মরণে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে মিলাদ মাহফিল, আলোচনা সভা ও দরিদ্রদের মাঝে খাবার বিতরণসহ ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলো। দলের প্রতিষ্ঠাতার শাহাদাতবার্ষিকীর দুইদিন আগেই বৃহস্পতিবার আলোচনা সভা করেছে বিএনপি।

জীবদ্দশায় জাতির চরম ক্রান্তিকালে জিয়াউর রহমান দেশ ও জনগণের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন। মহান স্বাধীনতার বীরোচিত ঘোষণা, স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং রাষ্ট্র গঠনে তাঁর অনন্য কীর্তি আজও চির স্বরণীয় হয়ে আছে।

১৯৭১ সালে সারা জাতি যখন স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত, যখন রাজনৈতিক নেতৃত্বের সিদ্ধান্তহীনতায় দেশের মানুষ দিশেহারা ঠিক সেই মুহুর্তে ২৬শে মার্চ মেজর জিয়াউর রহমানের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে স্বাধীনতার ঘোষণা সারা জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের অভয়মন্ত্রে উজ্জীবিত করে এবং সে প্রেক্ষাপটে দেশের তরুণ, যুবকসহ নানা স্তরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে দমনমুলক শাসন শোষনের যাঁতাকলে মানুষের প্রাণ হয় ওষ্ঠাগত, দেশের মানুষের একের পর এক মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়। দেশ একদলীয় সামন্ততান্ত্রিক শাসনের নিষ্ঠুর কবলে পড়ে পিষ্ট হতে থাকে। মু্ক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভুলুন্ঠিত করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ, মানুষের বাক ও চিন্তার স্বাধীনতাকে খর্ব করা হয়।

গণতন্ত্র হত্যা ও অরাজকতার অমানিশার দুর্যোগের মুখে দেশের সিপাহী-জনতার মিলিত শক্তির উত্থানে জিয়াউর রহমান জাতীয় রাজনীতির পাদপ্রদীপের আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং সংবাদপত্র ও নাগরিক স্বাধীনতা পূণ:প্রতিষ্ঠা করেন।

জিয়াউর রহমানের শাসনামলে দেশের প্রকৃত স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎপাদনের রাজনীতির মাধ্যমে তিনি দেশীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধশালী করেন।

Zia_Memorial_---
এই সেই সার্কিট হাউজ যেখানে জিয়াউর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করে বিপদগামী সেনা সদস্যরা

মহান জাতীয়তাবাদী নেতার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই দেশী-বিদেশী চক্র তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠে। এই চক্রান্তকারীরাই ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউজে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এই মর্মান্তিক ঘটনার মধ্য দিয়ে একজন মহান দেশপ্রেমিককে হারায় দেশবাসী। তিনি আজও জনগণের হৃদয়ে চির স্বরণীয় হয়ে আছেন।

জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ২৮ মে থেকে ১০ জুন পর্যন্ত নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিএনপি। গত ২৮ মে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল বিএনপি। সেখানে দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া তাদের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে-৩০ মে ভোর ৬টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন। সকালে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও মাজার জিয়ারত করবেন। পরে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের উদ্যোগে মাজার প্রাঙ্গণে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে ও ড্যাবের উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের মাজার প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি।

সকাল থেকে নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ড্যাবের উদ্যোগে মেডিকেল ক্যাম্প ও বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হবে। ওই দিনই দলের চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঢাকা মহানগরী বিএনপির উদ্যোগে বিভিন্ন স্পটে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করবেন।

৩১ মে এবং ১ জুন একই কর্মসূচিতে যোগ দেবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জেলা ও মহানগরীসহ সব ইউনিট এবং ইউনিটগুলোর অধীনস্থ সব ইউনিট কার্যালয়ে ৩০ মে ভোর ৬টায় দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন এবং নিজ নিজ এলাকার সুবিধা অনুযায়ী আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও তবারক বিতরণ কর্মসূচি পালন করবে।