অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চট্টগ্রাম কারাগারের দুই ডেপুটি জেলার বরখাস্ত

0
.

আদালতে হাজির করার পরিবর্তে দুইবন্দিকে মুক্তি দেয়ার ঘটনায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের দুই ডেপুটি জেলারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকৃত কর্মকর্তারা হলেন, কারাগারের ডেপুটি জেলার মনির হোসেন এবং আবদুর রউফ।

এর মধ্যে আবদুর রউফ কয়েক মাস আগে চট্টগ্রাম কারাগারে যোগদান করেন। আর মনির হোসেন প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে চট্টগ্রাম কারাগারে কর্মরত ছিলেন।

জানাগেছে বন্দি হাজিরার পরিবর্তে জামিননামা পাঠিয়ে কারাগার থেকে ইয়াবা মামলার দুই আসামির মুক্তির ঘটনায় প্রমাণিত হওয়ায় দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।

কারা মহাপরিদর্শকের নির্দেশে তাদের বরখাস্ত করা হয়। গত বুধবার রাতে এ বরখাস্ত আদেশ কারাগারে এসে পৌঁছে।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ইকবাল কবির চৌধুরী দুই ডেপুটি জেলারকে সাময়িক বরখাস্ত করার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বুধবার রাতে দুই ডেপুটি জেলারকে বরখাস্ত সংক্রান্ত কারা মহাপরিদর্শকের দফতর থেকে পাঠানো একটি আদেশ ফ্যাক্স বার্তার মাধ্যমে হাতে পেয়েছি। অভিযুক্ত দু’জনকে বরখাস্ত করার বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী তারা অন্যজনকে কাজ বুঝিয়ে দিয়েছেন।

আদালত সূত্র জানায়, আসামি মুক্তি পাওয়ার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর কারা কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা চান আদালত। কারা কর্তৃপক্ষ আদালতে দেয়া প্রথম ব্যাখ্যায় বলে, আদালত থেকে জামিননামা পাঠানোর পর যথারীতি দুই আসামিকে মুক্তি দেয়া হয়। জামিননামায় আসামি হাজিরার বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও আদালতে দেয়া ব্যাখ্যায় সেটি এড়িয়ে যান।

আদালত পরে কারাগারের কাছে পুনরায় ব্যাখ্যা চান। কারাগারের দেয়া দ্বিতীয় ব্যাখ্যায় আসামি মুক্তির বিষয়ে ভুল স্বীকার করা হয়।

যাদের কারণে আসামি মুক্তি পেয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে অপর একটি নোটিশে তা জানতে চাওয়া হয় কারা মহাপরিদর্শকের কাছে। আদালতের পাওয়া নোটিশের ভিত্তিতে কারা মহাপরিদর্শক চট্টগ্রাম কারাগারের জামিন শাখায় কর্মরত দুই ডেপুটি জেলারকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। এর আগে কারাগার থেকে আসামি মুক্তি পাওয়ার ঘটনায় কারা মহাপরিদর্শকের নির্দেশে তিন সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৬ নভেম্বর কর্ণফুলী নদীতে র‌্যাবের অভিযানে উদ্ধার করা হয় ৭ লাখ পিস ইয়াবা। গ্রেফতার করা হয় ৭ মাদক ব্যবসায়ীকে। দুই আসামি সামছুল এবং শরীফ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৮ জানুয়ারি বিচারক পরবর্তী ১০ জানুয়ারি আসামিদের উপস্থিতিতে আদালতে রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন।

এজন্য আসামিদের আদালতে হাজির করতে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে হাজিরা নোটিশ পাঠানোর কথা ছিল। তবে জিআরও শাখা থেকে হাজিরা নোটিশের পরিবর্তে জামিন নোটিশ পাঠানো হয় কারাগারে। কারা কর্তৃপক্ষ জামিননামার ফরমেই আসামির হাজিরার কথা লিখে পাঠিয়েছিল পুলিশ। আর কারাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সেই লেখা না দেখে জামিননামার ফরম দেখেই দুই আসামির মুক্তির ব্যবস্থা করেন।

মূলত পুলিশ এবং কারা কর্তৃপক্ষ উভয়ের ভুলের কারণেই মুক্তি পেয়েছেন চাঞ্চল্যকর ৭ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার মামলার দুই আসামি মো. সামছুল এবং শরীফ হোসেন। এর মধ্যে শরীফ হোসেনকে র‌্যাব পুনরায় গ্রেফতার করতে সক্ষম হলেও সামছুল এখনও পলাতক আছে।