অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চলে গেলেন কিংবদন্তি মুষ্টিযোদ্ধা মুহম্মদ আলি

0
1465020353-Muhammad-ali-dies-02
কিংবদন্তি মার্কিন মুষ্টিযোদ্ধা মুহাম্মদ আলী

কিংবদন্তি মার্কিন মুষ্টিযোদ্ধা মুহাম্মদ আলী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।

মোহাম্মদ আলীর পরিবারের মুখপাত্র বব গানেল সংবাদমাধ্যমকে মুহাম্মদ আলীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, অ্যারিজোনার ফনিক্সের স্থানীয় সময়  শুক্রবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদ আলীর মৃত্যু হয়েছে।

1465020238-Muhammad-ali-dies-03
১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে এসেছিলেন মুহাম্মদ আলি। বাংলাদেশের পতাকা হাতে মুহাম্মদ আলী।

গত বৃহস্পতিবার শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। সেখানে আলির শারীরিক অবস্থা ক্রমেই অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল তাকে।

তাঁর পরিবার জানিয়েছে, শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যার কারণে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রায় তিন দশক ধরে পার্কিনসন্সে আক্রান্ত ছিলেন এই প্রবাদপ্রতীম বক্সার।

গত এপ্রিলে মুহাম্মাদ আলি পারকিনসন্স সেন্টারের সহায়তার জন্য অ্যারিজোনায় আয়োজন করা ‘সেলেব্রিটি ফাইট নাইট-এ সবশেষ জনসমক্ষে এসেছিলেন আলি।

পরিবারের সদস্যরা জানান, আলির জন্মস্থান কেনটাকির লুইসভিলে শেষকৃত্য অনুষ্ঠান হবে।

মুহাম্মদ আলি (জন্ম ক্যাসিয়াস মারকেলাস ক্লে জুনিয়র জানুয়ারি ১৭, ১৯৪২) একজন সাবেক মার্কিন মুষ্টিযোদ্ধা, ৩বারের ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট চ্যাপিয়ন এবং ওলিম্পিক লাইট-হেভিওয়েট স্বর্ণপদক বিজয়ী। ১৯৯৯ সালে মুহাম্মদ আলির নাম বিবিসি এবং স্পোর্টস ইলাট্রেটেড স্পোর্টসম্যান অব দ্যা সেঞ্চুরী অথবা শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড় হিসেবে ঘোষণা করে।

আলি জন্মগ্রহণ করেছিলেন লুইসভিলা, কেন্টাকি তে। তিনি তার নাম তার বাবা ক্যাসিয়াস মারকেলাস ক্লে সিনিয়র এর নাম অনুসারেই রাখা হয়েছি, যার নামকরণ করা হয়েছিল একজন দাসপ্রথা বিরোধী রাজনীতিবিদ ক্যাসিয়াস ক্লে এর নামানুসারে। আলি ১৯৬৪ সালে ইসলামী সংগঠন নেশন অব ইসলাম এ যুক্ত হলে এবং ১৯৭৫ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলে তার নাম পরিবর্তন করেন।

photo-1465020074
কিংবদন্তি মার্কিন মুষ্টিযোদ্ধা মুহাম্মদ আলী ১৯৭৫ সালে মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করেন।

১৯৭৫ সালে তিনি মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করেন তার মতে এ জন্য ভুমিকা রাখেন নেশন অফ মুসলিম এর প্রধান ডব্লু. ডি. মুহাম্মদ। ১৯৭৫ সালে আলি লড়াই করেন ফ্রেজিয়ার এর সাথে। দুজন বীরের এ লড়াইএর জন্য সকলে খুবই উত্তেজিত ছিল। ১৪ রাউণ্ডের শেষে ফ্রেজিয়ার এর কোচ তাকে আর লড়াই করতে দেননি কারণ তার এক চোখ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফ্রেজিয়ার এর কিছুদিন পরই অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৭৮ সালের এক লড়াইএ তিনি ১৯৭৬ এর অলিম্পিক মেডালিস্ট লিয়ন স্পিংক্স এর কাছে খেতাব হারান। তিনিই প্রথম যিনি একজন অপেশাদার এর কাছে হেরেছিলেন। ১৯৭৯ তিনি অবসর গ্রহণ করেন।

১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি। মুহাম্মদ আলি কে দেখতে সেসময় ঢাকা স্টেডিয়ামে উপচে পড়েছিল মানুষ।

পল্টনের মুহাম্মদ আলি বক্সিং স্টেডিয়াম উদ্বোধন করেছিলেন আলী নিজেই। তার সম্মানেই স্টেডিয়ামটির নামকরণ। বক্সিং স্টেডিয়ামের উদ্বোধনের দিন গ্লাভস পরে রিংয়ে নেমেছিলেন আলি।

তার প্রতিপক্ষ ছিলেন এক কিশোর। তার বিরুদ্ধে নেমে দর্শকদের অনেক আনন্দ দিয়েছিলেন আলী। এক পর্যায়ে ওই কিশোর বক্সারের পাঞ্চে রিংয়ের মেঝেতেও পড় যান মুহাম্মদ আলি। তা দেখে ঢাকার দর্শকদের কি যে উল্লাস।

ওই সফরে তাকে বাংলাদেশের সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দিয়ে তার হাতে চাবি তুলে দেয়া হয়েছিল। সেদিন মুহাম্মদ আলি বলেছিলেন, ‘ঢাকায় এসে আমি মুগ্ধ, এটা আমার প্রিয় শহর।’