অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

বিকাল পর্যন্ত কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেনি বগুড়ার শিক্ষানবিস চিকিৎসকরা

0
.

শাস্তিমূলক ব্যবস্থা তুলে নেওয়ার আশ্বাসের পরও কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেননি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিক্ষানবিস (ইন্টার্ন) চিকিৎসকরা। পঞ্চম দিনের মতো ধর্মঘট পালন করছেন তারা।

সোমবার (৬ মার্চ) ইন্টার্ন চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, শাস্তি মওকুফের খবর শুনেছি। তবে এ বিষয়ে লিখিত না পাওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে বলে জানান তারা

সোমবার সরেজমিনে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষানবিস চিকিৎসকরা প্রশাসনিক ভবনের মূল ফটকের সামনে রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। তাদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) বগুড়া জেলা শাখার বিএমএর সভাপতি ডা. মোস্তফা আলম নান্নু, সাধারণ সম্পাদক ডা. রেজাউল আলম জুয়েল, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি ডা. সামির হোসেন মিশুসহ হাসপাতালের বেশ কিছু চিকিৎসক। কর্মবিরতির কারণে সকাল থেকেই হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীদের টিকিট দেওয়া ও রোগী দেখা বন্ধ থাকতে দেখা যায়। দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের সকাল থেকেই বহির্বিভাগের বাইরে বসে থাকতে দেখা গেছে। অন্যদিকে বিভিন্ন ওয়ার্ডেও চিকিৎসকের স্বল্পতায় রোগীদের দুর্ভোগে পড়তে দেখা যায়।

কথা হলো জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মোলামগাড়ীর সাফিয়া খাতুনের সাথে। বুকের ব্যথার সমস্যার জন্য তিনি হাসপাতালে এসেছেন। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বহির্বিভাগে ডাক্তার দেখানোর জন্য তিনি টিকিট পাননি। ওই সময়ে টিকিট কাউন্টারসহ ডাক্তারদের চেম্বারও পর্যন্ত বন্ধ থাকতে দেখা যায়। এমনিভাবেই সিরাজগঞ্জের শাজাহাদপুর উপজেলার পুকুরপাড় গ্রাম থেকে কিডনি সমস্যায় আসা আবদুল বাতেন শহরের খান্দারে মনোয়ারাকে বসে থাকতে দেখা যায়। হাসপাতালের ভেতরে সার্জারি ওয়ার্ডের ৩৬৪নং রুমে বাবুলের সাথে কথা হয়। তিনি এসেছেন সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থেকে। কথা হলো নওগাঁ ধামুইহাটের নূর আলমের সাথে ৩৬২নং কক্ষে। তারা জানালেন, ডাক্তার এখনও আসেনি। এভাবেই শিশু ওয়ার্ডসহ অন্যান্য ওয়ার্ডে ডাক্তারের স্বল্পতা দেখা যায়।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে বগুড়া বিএমএ শাখার সভাপতি ডা. মোস্তফা আলম নান্নু বলেন, ‘আমরা চাই ঐক্যবন্ধভাবে এই সমস্যার সমাধান হোক। বিএমএ, স্বাচিপ ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছে। তবে এখনো চিকিৎসকরা ধর্মঘটে যায়নি।’

বগুরা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মুখপাত্র কুতুব উদ্দিন বলেন, ‘আমরা চাই আমাদের অভিভাবক বিএমএ, স্বাচিব আমাদের সাথে থাকুক। না থাকলেও আমাদের সমস্যা নেই। আমরা আন্দোলন করতে জানি। শাস্তি মওকুফ করতে হবে। তা না হলে এক ব্যক্তির সিদ্ধান্তের কারণে আরও এ ধরনের ঘটনা ঘটবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শুনেছি শাস্তি মওকুফ করা হয়েছে। তবে লিখিত কাগজ না পাওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।’ বেলা ৪ টায় দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি অব্যাহত ছিল।

প্রসঙ্গত, এক রোগীর স্বজনদের মারধরের ঘটনায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চার শিক্ষানবিস চিকিৎসকের ছয় মাসের ইন্টার্নশিপ স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার আশ্বাস দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। মন্ত্রীর আশ্বাসের পর দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলমান কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা। সোমবার (৬ মার্চ) সকালে রাজধনীর ধানমন্ডিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে চিকিৎসক নেতাদের জরুরি এক এক বৈঠকের পরে এসব সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।