অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

মীরসরাইয়ের জঙ্গি আস্তানা থেকে বিপুল পরিমাণ গ্রেনেড বিস্ফোরক ও অস্ত্র উদ্ধার

1
.

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরীর সরঞ্জাম গ্রেনেড, কার্বণ স্টিল, চাপাতি ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর মেশিনসহ জঙ্গিদের ব্যবহৃত সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা।

মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত  উপজেলা সদরের কলেজ রোডের রেদওয়ান মঞ্জিল নামের দোতলা বাড়ির নীচ কক্ষে তল্লাশী চালিয়ে এসব অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরঞ্জামাদি উদ্ধার করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা।

উদ্ধার অভিযান শেষে বাড়ির ওই দুটি কক্ষ সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।

উদ্ধার করা অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে- ২৯টি হ্যাণ্ড গ্রেনেড, বোমা তৈরীর ৪০টি উপকরণ, ১১ কেজি বিস্ফোরক, ৯টি চাপাতি, বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর মেশিন (IED), ২৮০ বক্স কার্বণ স্টিল (বেয়ারিং বল) (প্রতি প্যাকেটে ১০০ করে), জঙ্গি পোষাক (৭টি কালো বড় রুমাল ও ৭টি কালো পাঞ্জাবী) আরবীতে লেখা একটি ব্যানারসহ আরো অন্যান্য উপকরণ।

মীরসরাইয়ের এ বাড়িতেই জঙ্গিরা আস্তানা গড়ে তোলে।

পুলিশ জানায়, চলতি বছরের  ১ ফেব্রুয়ারী জঙ্গিরা নিজেদের কাপড় ব্যবসায়ি পরিচয় দিয়ে মীরসরাইয়ের উক্ত বাড়ীতে বাসা ভাড়া নেয়। এর পর থেকে তারা সেখানে জঙ্গি আস্তানা গড়ে তোলে সবার অগোচরে।

উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার তীরচর গ্রাম এলাকায় হাইওয়ে পুলিশের একটি চেকপোস্টে বাস থামিয়ে চালকের কাগজ পরীক্ষা করার সময় বাস থেকে দুই ‘জঙ্গি’ নেমে এসে আল্লাহু আকবর বলে দুটি বোমা ছোড়ে। তবে সেগুলো বিস্ফোরিত হয়নি।  তাদের আটক করে পুলিশ। পরে তাদের স্বীকারোক্তিতে রাতেই পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্য এবং কুমিল্লা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান শুরু করে। তারা রাত ১১টা থেকে মীরসরাইয়ের উক্ত বাড়ী ঘিরে রাখে। এবং ভোরে অভিযান শুরু করে। অভিযান চলে বেলা ১১টা পর্যন্ত।

বুধবার সকালে বাড়ি পাহারায় নিয়োজিত মিরসরাই থানার এসআই মো. ইকবাল বলেন, “রাতে পুলিশের স্পেশাল দুটি টিম কুমিল্লায় আটক হওয়া এক জঙ্গিকে নিয়ে রিদোয়ান মঞ্জিলে অভিযান চালায়। ভেতর থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। “

কুমিল্লার একটি চেকপোস্টে পুলিশের ওপর দুই ‘জঙ্গি’র হামলার পর মঙ্গলবার রাত থেকে এ অভিযান চালানো হয়। আজ দুপুরে মীরসরাইয়ে এ অভিযান শেষ করে জঙ্গি দলের এক সদস্যকে নিয়ে অভিযান দল চট্টগ্রামের পটিয়া শান্তিরহাটে তার গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে।

চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা জানান, ঢাকা থেকে আসা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা কুমিল্লা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে এ অভিযান চালায়। তবে বুধবার দুপুর পর্যন্ত  নতুন করেকাউকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি পুলিশ।

কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের একজন কর্মকর্তা বলেন, কুমিল্লায় যাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল, তারা মিরসরাইয়ের ওই বাড়িতে আস্তানা গেড়েছিল বলে জানিয়েছে। তাদের নিয়ে সেখানে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিকে মীরসরাইয়ের অভিযান শেষ কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা আটক এক জঙ্গিকে নিয়ে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার শান্তির হাটে অভিযান চালায় বলে স্থানীয় একাধিক সুত্র জানায়। তবে এব্যাপারে পটিয়া থানার ওসি এবং কালারপোল পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তারা কিছুই জানেন না বলে সাংবাদিকদের জানান।

আমাদের পটিয়া প্রতিনিধি জানান,কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা বুধেবার ভোরে পটিয়া পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের তালতলা এলাকার মহিউদ্দিন টাওয়ারে অভিযান চালায়। উক্ত বাসায় জঙ্গি সদস্যরা অবস্থান করছে এ তথ্যের ভিক্তিতে অভিযান চালালেও সেখানে তেমন কাউকে পাওয়া যায়নি।