অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সাগরে জীবন যুদ্ধে লড়া নারী জেলের করুণ কাহিনী

0
এম ডি রাশেদ

ইলিশ রক্ষায় কারেন্ট ও বেহুন্দি জালসহ অন্যান্য অবৈধ জাল পোড়াতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৯শ’ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। শনিবার (১১ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মৎস্য ভবনে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ-২০১৭ উদযাপন উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক এ তথ্য জানান।

.

বেশ ভালো উদ্যোগ ! কিন্তু এ বিশাল অংকের টাকা জাল পোড়ানোর পিছনের খরচ না করে যারা এ মৌসুমে পেটের দায়ে ঝটকা মারছে তাদের পুন:বাসন করা যেতে পারে। এমন মন্তব্য অনেকের।

এ বিষয়ে রাত দিন জীবনের মায়া ত্যাগ করে গভীর সাগরে মাছ মেরে যে সব জেলে জীবন ধারণ করে তাদেই একজন নারী জেলের দু:সহ জীবনের কিঞ্চিৎ কাহিনী তুলে এনেছেন একজন পাঠক।

সাগরে জীবন যুদ্ধে লড়া সেই আজানা পরিচয়ের নারীর কাহিনীটি পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরা হল-

“নৌকায় বেশি মাছ থাকলে কিছু কয় না যে, মাছ নিয়া যায় গা । মাছ না পাইলে মারে, বাচ্চাগুলারেও মারে। তয় হেদের সামনে আমার লগে কুকাম করে, বাচ্চা গুলা খুব কান্দন শুরু করে।আমি তো একা হেদের লগে পারি না “

ইলিশি নিয়ে অনেক লেখা হয়, কি করে উন্নয়ন করা যায়, কি ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা যায়, কোনটা বেশী মজা, ইহা আমাদের জাতিয় মাছ আরো …… বহুত কিছু, কিন্তু এদের নিয়ে……

.

সেদিন অফিসের কাজে মনপুরা যাওয়া হয়। ঘাটে এই পরিবারটি নৌকায় বসে আছে। কেন জানি কথা বলতে ইচ্ছে হল, গত বছর ঝড়ে এদের বাপে সাগরে হারিয়ে গেছে। এখন পুরুষ মানুষ ছাড়াই সাগড়ে আমাদের জাতীয় মাছ ধরতে যায়। বাচ্চাগুলো সব সময় দড়ি দিয়ে বাধা থাকে, কারন ছয় মাস আগে এদের একজন সাগরে উত্তাল ঢেউয়ে হারিয়ে যায় তাই লাইফ সেফটি, হা হা হা ।

মাঝে মধ্যে দরিয়াতে জলদস্যু রাও এদের হাই হ্যালো করে। মারে, মাছ নিয়ে যায়, জাল নিয়ে যায় আর সময় পেলে বাচ্চাদের সামনেই দস্যু ভাইয়েরা মহিলাটির সাথে আদিম খেলায় লিপ্ত হয়।

নৌকাতেই এদের বসবাস, ঘর বাড়ি যাই বলুন, সবই এই নৌকাতেই। মহিলাটির কথাবার্তা এতটা সরল ও খোলামেলা, কি মজার ব্যাপার না। এসব সুযোগ সুবিধার মধ্যেই এদের পথচলা।

অনেক মহান লেখক বই লিখে ব্যাবসা করেছে, অনেকে ছবি বানিয়ে দেশ বিদেশে পুরুষকার পেয়েছে। এই সুযোগে আমিও ডায়লগ বাজী করছি, কিন্তু এসবকিছু আসলে আমাদের হিপোক্রেসি ছারা কিছুই না। এদের মাইনাস করে আজ পদ্মা ব্রীজ বলুন আর ঢাকার ফ্লাইওভার সবকিছুই মনে হয় জলদস্যুদের পাশবিক যৌনতার থেকে উন্নত কিছু নয়।

এদের নিয়ে অনেক লেখা আছে যা আমরা SSC, HSC তে পড়ে লিখে আজ গ্রাজুয়েট করে মানুষের মত মানুষ হয়েছি। আমাদের, মহান লেখকদের বা বিক্ষ্যাত পরিচালকদের বা ওই জলদস্যুদের মাঝে Basic differences​ গুলো আসলে কি? তাদের অসহায়ত্ব নিয়ে আমরা সকলেই তো নিজ নিজ স্থানে থেকে তাদের বেচে দিয়েছি বা বেচে যাচ্ছি।