অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

পলোগ্রাউন্ডে আজ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন

0
চলছে মেলার প্রস্তুতি কাজ।

চট্টগ্রামে আজ রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে মাসব্যাপী ২৫তম চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। নগরীর রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এ মেলার উদ্বোধন করবেন শিল্পমন্ত্রী আমীর হোসেন আমু। এরই মধ্যে মেলার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে আয়োজক প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি।

আজ মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও মেলা পুরোপুরি শুরু হতে আরো ২/৩ দিন লেগে যাবে। শনিবার মেলা প্রাঙ্গন ঘুরে দেখা গেছে মেলায় এখনো স্টল, প্যাভেলিয়নসহ বিভিন্ন অফিস স্থাপনার কাজ চলছে।

তৈরী হচ্ছে প্যাভেলিয়ন।

চেম্বার সুত্রে জানাগেছে, শিল্পমন্ত্রী ছাড়াও মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও এফবিসিসিআই’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো.শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

এবারের মেলা এবং এর সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ২৪ বছর আগে এমএ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন আউটার স্টেডিয়ামে ছোট্ট পরিসরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু হয়েছিল। সেই মেলা এখন প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। মেলা থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে অপেক্ষা করেন চট্টগ্রামের মানুষ।

আজ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও শতভাগ প্রস্তুতি শেষ হয়নি এখনো।

তিনি আরো বলেন, এ মেলা শুধু জিনিসপত্র বেচাকেনার জন্য নয়, দেশীয় পণ্যের প্রদর্শন এবং আন্তর্জাতিকভাবে দেশীয় পণ্যের পরিচিতি পাওয়ার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রেখে চলেছে। এ কারনে দেশের রপ্তানি পণ্যের সংখ্যাও বৃদ্ধি করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে মেলা।

মাহবুবুল আলম বলেন, দেশে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হওয়া দুইটি বাণিজ্য মেলার মধ্যে চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা অনন্য উচ্চতায় নিজেকে তুলে ধরতে সমর্থ হয়েছে। সরকারিভাবে ঢাকায় বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হলেও বেসরকারিভাবে সবচেয়ে বড় বাণিজ্য মেলার আয়োজন করে চট্টগ্রাম চেম্বার। মেলায় দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। বাংলাদেশ উৎপাদিত পণ্যের প্রচার ও প্রসারই এ মেলার একমাত্র উদ্দেশ্য।

মেগা প্যাভিলিয়ন নির্মাণ চলছে।

তিনি জানান, এবারই প্রথম মেলায় সম্পূর্ন নতুনত্ব নিয়ে বানিজ্যে স্বর্ণ দেশ মরিসাস তাদের বিশাল পণ্যের বাজার সৃষ্টির প্রয়াসে শিল্প পণ্য প্রদর্শন করবেন। চেম্বার সভাপতি বলেন, ঢাকার পরেই চট্টগ্রাম চেম্বারের উদ্যোগে দ্বিতীয় বৃহৎ এ বানিজ্য মেলা হিসেবে বহু দেশে এই (সিআইটিএফ) স্বীকৃতি রয়েছে।

বিগত সময়ের তুলনায় দেরিতে মেলা শুরুর বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে মেলা আয়োজনের জন্য একটি স্থায়ী ভেন্যুর দাবি করে আসছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেটা হয়ে উঠেনি। বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন পলোগ্রাউন্ড মাঠে মেলা আয়োজন করে আসছেন জানিয়ে মেলা কমিটির উপদেষ্টা মাহবুবুল আলম বলেন, এই মাঠে আরও একটি মেলা হয়। এছাড়া রেলওয়ের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠিত হয়। অন্যান্যবার আমরা ফেব্রুয়ারিতে মাঠ বুঝে পেলেও এবার পাইনি, ফলে নির্দিষ্ট সময়ে আরম্ভ করা সম্ভব হয়নি।

প্রিমিয়ার বুথ এর কাজ চলছে।

মেলা কমিটির চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নুরুন নেওয়াজ সেলিম জানান, চার লাখ বর্গফুটের অধিক জায়গাজুড়ে আয়োজিত মেলায় এবার ১৬টি প্রিমিয়ার গোল্ড প্যাভিলিয়ন, ৪টি মিনি মেগা প্যাভিলিয়ন, ৫টি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, ১০টি স্ট্যান্ডার্ড প্যাভিলিয়ন, ১৭২টি প্রিমিয়ার মেগা বুথ, ২২টি মেগা বুথ, ১০টি প্রিমিয়ার গোল্ড বুথ, ১৬ টি প্রিমিয়ার বুথ, ১৪টি স্ট্যান্ডার্ড বুথ, তিনটি রেস্টুরেন্টসহ ৩৫টি প্যাভিলিয়ন, পার্টনার কান্ট্রি থাই জোন, তিনটি আলাদা জোন নিয়ে ৪৫০ অধিক প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিচেছ। অন্যান্য বছরের মতো থাইল্যান্ড মেলার পার্টনার কান্ট্রি হিসেবে ৫ হাজার ৪০০ বর্গফুট জায়গা নিয়ে মেলায় অংশ নেবে।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে চেম্বারের অনেক কর্মকাণ্ডের মধ্যে বাণিজ্য মেলা অন্যতম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২৪ বছর ধরে দেশের শিল্পের প্রসার ও মান উন্নয়নে চেম্বার মেলার আয়োজন করে আসছে। বাংলাদেশে এসএমই খাতের বিকাশের লক্ষ্যেই মূলত মেলার আয়োজন।

মেলা কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, প্রতিবারের মতো মেলায় বাড়তি নিরাপত্তা বলয় থাকবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিকভাবে মেলায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। তাদের জন্য মেলা চলাকালীন সময় পর্যন্ত স্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি মেলায় ব্যাংক বুথও স্থাপন করা হয়েছে। মেলা চলাকালীন প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা মেলাস্থল পরিদর্শন করবেন।

বাণিজ্য মেলা চলবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। দর্শনার্থীদের জন্য টিকেটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা।