অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

কক্সবাজারে আড়াই কোটি টাকার সড়ক মেরামত কাজ ফেলে ঠিকাদার উধাও

0
.

কক্সবাজার সদরের উপজেলার উপকূলীয় ইউনিয়ন পোকখালীতে সংস্কারের নামে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে ২ কিলোমিটার রাস্তা খুঁড়ে মেরামত কাজ ফেলে উধাও হয়েছে ঠিকাদার। এতে করে এলাকার কোমলমতি শিক্ষার্থী, চাষী, শ্রমিকসহ হাজার হাজার মানুষ চলাচলে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। বর্ষার পূর্বেই সড়কটি সংস্কার করা না হলে আন্দোলনে নামারও হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, পোকখালীর উত্তর গোমাতলী এলাকার বদি আলম মৌলভীর বাড়ীর সামনে থেকে রাজঘাট ৫নং স্লুইস গেইট পর্যন্ত বিশ্ব্ ব্যাংকের অর্থায়নে কক্সবাজার এলজিইডি তত্ত্বাবধানে প্রায় আড়াই কোটি টাকার ব্যয়ে ২ কিলোমিটার সড়কটি উভয়পাশের গাইড ওয়াল, ৩৬ ইঞ্চি বালি, পিচ ঢালাইসহ আনুষাঙ্গিক কাজের বাজেট বরাদ্ধ হয়। ৯০ দিনের মধ্যে কাজ সম্পাদনের জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়।

গত এক মাস আগে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্টান কাজ শুরু করে। রাস্তার মাঠি খুড়া-খুড়িতেই শেষ। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের দায়িত্বে অবহেলা ও খামখেয়ালীপনার কারণে এক মাসেও ২০ শতাংশ কাজ শেষ করতে না পারায় এলাকাবাসী ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে। এমনকি কাজ শুরুর পূর্বেই সাইনবোর্ড টাঙানোর নিয়ম থাকলেও মানা হয়নি এখানে।

আরো জানা গেছে, রাজঘাট এলাকায় ২ হাজারের অধিক লবণ চাষী, দেড় হাজারের মত ছাত্রছাত্রী, রোগীসহ প্রায় ৮ হাজার জনগণকে চলাচল করতে হচ্ছে চরম দূর্ভোগ নিয়ে। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় স্থানীয়রা ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় শ্রমিক নেতারা জানান, সড়কটি খুঁড়ে ফেলে রাখায় কোন বড় লবণ ব্যবসায়ী এলাকায় আসতে অনিহা প্রকাশ করছে। ফলে কোটি কোটি টাকার লবণ রপ্তানী থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

স্থানীয় দেলোয়ার হোছাইন, আবদুর রহিম, জামাল উদ্দীন অভিযোগ করে জানান, উক্ত এলাকাটি এক ধরণের বাণিজ্যিক এলাকা হিসাবে স্বীকৃত। লবণ, মৎস্য চাষীদের একমাত্র আয়োর উৎস হচ্ছে এখান থেকে। এমনকি গোমাতলী উচ্চ বিদ্যালয়, মুনচেহেরীয়া বালিকা মাদ্রাসা, হোছাইনিয়া বালিকা মাদ্রাসা, উত্তর গোমাতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের দেড় হাজারের অধিক ছাত্রছাত্রীর যাতায়াতের বিঘœ ঘটছে। জরুরী কোন রোগীকে হাসপাতালে নিতে ২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে গাড়ীর জন্য বেগ পেতে হচ্ছে।

তারা আরো জানান, রোয়ানুর প্রভাবে ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়ে উক্ত এলাকাটি। সরকারী কোন বরাদ্ধ না থাকা সত্ত্বেও এলাকাবাসীর প্রচেষ্টায় রাস্তাটি বাঁধ দিয়ে রক্ষা করে। হঠাৎ করে ওইসড়কটি এলজিইডি টেন্ডার দিলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংস্কারের নামে রাস্তার একপাশের বুলডোজার দিয়ে কেটে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলে রাখে। এর ফলে সাধারণ একজন মানুষও হেটে যেতে কষ্টসাধ্য হচ্ছে।

স্থানীয় যুবলীগ নেতা জামাল উদ্দীন জানান, রাজঘাট এলাকার আজিম পাড়া, চরপাড়া, গাইট্টাখালী এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অসংখ্যা শিক্ষার্থী সহ প্রায় ৮ হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত চলাচল করে এ রাস্তা দিয়ে। বিগত দু’বছর পূর্বে এই রাস্তাটি টেন্ডার হয়। পরে গত একমাস আগে ঠিকাদার রাস্তা খুঁড়ে কাজ না করে লাপাত্তা হয়ে যায়।

স্থানীয় সাংবাদিক সেলিম উদ্দীন জানান, আসন্ন বর্ষা মৌসুমে গোমাতলী রাজঘাটবাসীকে ভোগতে হবে মরণ দশায়। এমনকি জেলা সদরের বিভিন্ন দপ্তরে প্রয়োজনীয় কাজকর্মে আসা যাওয়া করতেও সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হবে। এ এলাকার লোকজন চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি দ্রুত কাজ সম্পন্ন করে এলাকাবাসীর দূর্ভোগ লাঘব করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আহবান জানান তিনি।

কক্সবাজার এলজিইডি অফিসের উপ-পরিচালকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ দেবেন বলে জানান।