অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সাংবাদিক সিদ্দিক আহমেদ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

1
.

সিদ্দিক আহমেদের জন্ম ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দ ৩১ জুলাই চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার গশ্চি গ্রামের মাতুব্বর বাড়ীতে । তাঁর পিতার নাম খলিলুর রহমান মাতুব্বর ও মাতার নাম গুলছেহের।

শিক্ষাজীবনেই সিদ্দিক আহমেদ প্রয়াত কমরেড আব্দুস সাত্তার ও কমরেড অমর সেনকে গুরু হিসেবে গ্রহণ করে বাম রাজনীতির দিকে ঝুঁকেন। স্বাধীনতার যুদ্ধের আগে তিনি ঢাকার খিলগাঁও স্কুলে শিক্ষকতা পেশা শুরু করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধ তিনি শিক্ষকতা পেশা ফেলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রচারপত্র বিলি করা শুরু করেন। পরে তিনি চট্টগ্রাম এসেও একই কাজ করেন। ষাটের দশকে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র “ একতা’য় কাজ করেন।

.

মুক্তিযুদ্ধ শেষ হলে ১৯৭৯ সালে তিনি তাঁর গ্রামের গশ্চি উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগ দেন। গশ্চি উচ্চ বিদ্যালয়ে কয়েকবছর শিক্ষকতা করার পর তিনি ১৯৯১ সালে প্রয়াত অধ্যাপক এম এ খালেদের হাত ধরে যোগ দেন দৈনিক আজাদীতে। আজাদী পত্রিকায় ২০১৫ সালে পেশাগত জীবনের ইতি টানেন । তবে তিনি কিছুদিন প্রকাশিতব্য দৈনিক চট্টগ্রাম সময়ের সম্পাদকও ছিলেন।

সিদ্দিক আহমেদ ছিলেন বাষট্টির ছাত্র আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণআন্দোলনের সক্রিয় কর্মী। ছাত্র জীবনে ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত সিদ্দিক আহমেদ ১৯৬৮ সাল থেকে ছিলেন সাহিত্যিক-সাংবাদিক রণেশ দাশগুপ্তের সান্নিধ্যে। তিনি কিছুদিন কৃষি কাজ ও কৃষক আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। তিনি শিশু সংগঠন খেলাঘরের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম বিপ্লব ও বিপ্লবী স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের প্রধান উপদেষ্ঠা ছিলেন।

চট্টগ্রামের সাংবাদিকতায় জগতে নবীন-প্রবীণ সবার ‘বন্ধু’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন সিদ্দিক আহমেদ। তিনি আড্ডায় মেতে উঠতেন বয়সের সীমা ডিঙ্গিয়ে। চট্টগ্রামের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতের সবার কাছে সিদ্দিক আহমেদ ছিলেন প্রিয় মানুষ। এলাকায়ও তিনি ‘ সিদ্দিক মাস্টার ’ হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন।

তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৯ টি। সেগুলো হলো- কবিতার রাজনীতি, খোলা জানালায় গোপন সুন্দরবন, পিকাসো, আপেলে কামড়ের দাগ, কিছু মানবফুল, পৃষ্ঠা ও পাতা, জল ও তৃষ্ণা, প্রভৃতি। তাঁর সম্মাদিত বই রয়েছে একটি। এছাড়া তাকে নিয়ে বের হয়েছে দুটি স্মারক গ্রন্থও। সিদ্দিক আহমেদ কবিতা অনুবাদ করেছেন ২০০ টির অধিক। আর কলাম লিখেছেন ৪০০ টির অধিক।

সিদ্দিক আহমেদ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন একুশে পদক, সিদ্দিক আহমেদ সম্মাননা স্মারক, উদীচী সম্মাননা, দুর্নিবার সম্মাননা, ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক ও মোহাম্মদ খালেদ ফাউন্ডেশন সম্মাননা, বৌদ্ধ একাডেমি সম্মাননা, খেলাঘর সম্মাননা, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সম্মাননা, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন সম্মাননাসহ নানা সম্মাননা পেয়েছেন। রাউজানের গশ্চি গ্রামে তিনি ‘ গশ্চি শিশুবাগ’ নামে একটি স্কুল গড়ে তোলেন।

ব্যাক্তিগত জীবনে সিদ্দিক আহমেদ চার সন্তানের পিতা। তাঁর ছেলেরা হলেন-তানিম আহমেদ সিদ্দিকী, অ্যাড. এস আর সিদ্দিকী ও সাইফ তানভীর সিদ্দকী। একমাত্র মেয়ে তাহমিনা সিদ্দীকা। তাঁর স্ত্রীর নাম মাহমুদা খানম।

১ টি মন্তব্য
  1. Azim Aunon বলেছেন

    ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন