অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সিদ্দিক আহমেদ ছিলেন আপাদমস্তক সৎ এবং স্বপ্নবান পুরুষ

0
.

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে প্রথম নামাজে জানাযা শেষে বর্ষিয়ান সাংবাদিক, বরেণ্য অনুবাদক, খ্যাতিমান সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সিদ্দিক আহমেদকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হয়। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত সর্বস্তরের মানুষ এই কীর্তিমান মানবকে কথামালায় এবং পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

সর্বস্তরের নাগরিক, চট্টগ্রাম-এর ব্যানারে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধানিবেদন আয়োজনটি শোক সভায় পরিণত হয়। পুরো এলাকাজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। শোক স্তব্ধ মানুষের ভীড়ে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে রচিত হয় বেদনাবিদুর পরিবেশ। সাংবাদিক, রাজনীতিক, কবি, সাহিত্যিক, সংস্কৃতিকর্মী, পেশাজীবীসহ সর্বস্তরের মানুষ একে একে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন-কান্নায় ভেঙে পড়েছেন কেউ কেউ। শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আর চোখের জলে শেষ বিদায়ে বক্তারা আমৃত্যু সৎ জীবন-যাপনকারী সিদ্দিক আহমেদের সাথে সোনালী স্মৃতি তর্পন করে বলেন, তিনি কখনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেন নি। অসত্যের কাছে কখনো অসহায় বোধ করেন নি।

শুধু তাই নয় তিনি যেমন মাথা উঁচু করে বেঁচেছেন ঠিক তেমনি অজস্র মানুষকে মাথা উঁচু করে বাঁচবার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। সিদ্দিক আহমেদ ছিলেন আপাদমস্তক সৎ এবং স্বপ্নবান পুরুষ। জীবনে তাঁর অনেক অপূর্ণতা ছিলো ঠিকই কিন্তু এসব নিয়ে কখনো আফসোস ছিল না। তিনি জীবনকে নিজের মতো করে উপভোগ করেছেন।

বক্তারা সিদ্দিক আহমেদের অনুপম আদর্শে নিজেদের জীবনে ধারণ এবং অন্যদের আলোকিত করার মাধ্যমে তাঁর স্মৃতিকে চিরজাগরুক রাখার আহবান জানিয়ে বলেন, তিনি ছিলেন বাতিঘর। বটবৃক্ষ। তাঁর অসময়ে চলে যাওয়া আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। জাতি একজন নিবেদিতপ্রাণ, আপাদমস্তক সৎ, সাহসী সাংবাদিক এবং প্রকৃত ভালো মানুষকে হারিয়েছেন।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক লেখক-সাংবাদিক শওকত বাঙালি’র সভাপতিত্বে ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাংবাদিক রিয়াজ হায়দারের পরিচালনায় সিদ্দিক আহমেদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং রুহের মাগফেরাত কামনা করে বক্তব্য করেন রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ.বি.এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, রাজনীতিবিদ কমরেড শাহ্ আলম, মৃণাল চৌধুরী, অশোক সাহা, বেলায়েত হোসেন, অধ্যক্ষ মোঃ জাহাঙ্গীর, কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন, নারীনেত্রী রেখা চৌধুরী, সাংবাদিক নেতা শহীদ উল আলম, তপন চক্রবর্তী, দিবাকর ঘোষ, সমরেশ বৈদ্য, কামাল পারভেজ, সৈয়দ আলমগীর সবুজ, রাশেদ মাহমুদ, আলোকময় তলাপাত্র, মিন্টু চৌধুরী, রমেন দাশ গুপ্ত, সেলিম আকতার পিয়াল, জনপ্রতিনিধি আবদুল জব্বার সোহেল, অধ্যাপিকা শীলা দাশ গুপ্ত, ড. কুন্তল বড়–য়া, ড. ইলু ইলিয়াছ, ডা. জিল্লুর রহমান, ডা. ভাগ্যধন বড়ুয়া, অধ্যাপক মুজিবুর রাহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন সোহেল, গণজাগরণমঞ্চের সদস্য সচিব ডা. চন্দন দাশ, প্রাবন্ধিক আমিনুর রশিদ কাদেরী, আবৃত্তিশিল্পী রাশেদ হাসান, আবৃত্তি জোট নেতা মোজাহিদুল ইসলাম, খেলাঘর মহানগর সাধারণ সম্পাদক এস.এম জাহিদ, কবি আশীষ সেন, কবি মনিরুল মণির, কবি দীলিপ কীর্তনীয়া, সংস্কৃতিকর্মী শরিফ চৌহান, যুব ইউনিয়ন সভাপতি রিপায়ন বড়ুয়া, ছাত্র ইউনিয়ন সাংগঠনিক সম্পাদক আতিক রিয়াজ, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা এস.এম রাশেদ প্রমুখ।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফ্রন্ট নেতা এম.এ মতিন, রেজাউল করিম, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের পরিচালক মো. শাহাজাহান মিঞা, শিক্ষাবিদ প্রফেসর ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ ও শুক্লা ইফতেখার, অধ্যাপিকা রোজী সেন, গশ্চি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হারুন, সাংবাদিক মহসীন কাজী, মোহাম্মদ ফারুক, নূর মোহাম্মদ টিপু, আহসানুল কবির রিটন, ঋত্বিক নয়ন, চৌধুরী আহসান খুররম, আলমগীর হায়দার, প্রীতম দাশ, মিঠুন চৌধুরী, অধ্যাপক বিকিরণ বড়–য়া, রাউজান পূজা উদ্যাপন পরিষদ নেতা ম্যালকম চক্রবর্তী, আলোকচিত্রী কমল রুদ্র, প্রাবন্ধিক শাহরিয়ার পারভেজ, সংস্কৃতিকর্মী প্রবাল দে, দেবাশীষ রায়, শ্যামল রুদ্র, শ্যামল পালিত, শ্যামল ধর, মণীষ ভট্টাচার্য্য, সৈয়দ মোহাম্মদ মোজাফফর, সাবেক ছাত্রনেতা ইকবাল কাজী, ইয়াসির আরাফাত, ছাত্রনেতা মো. সানোয়ার হোসেন নয়ন, জেলা নির্মূল কমিটি নেতা অ্যাডভোকেট প্রকৃতি চৌধুরী ছোটন, অসীত বরণ বিশ্বাস, মো. বেলাল হোসেন, সঞ্জয় দত্ত, টিপু সিংহ, মো. ইব্রাহিম, হৃদয় নাথ, নৃত্যশিল্পী প্রমা অবন্তি, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট নেতা খোরশেদ আলম, কবি আসিফ ইকবাল, সিদ্দিক আহমেদের বন্ধু সুধীর দাশ, মরহুমের বড় পুত্র তানিম আহমেদ সিদ্দিকী বুলবুল ও ছোট ছেলে টিপু প্রমুখ।

কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগর, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, সিপিবি, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরী, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, প্রমা, গণজাগরণমঞ্চ, কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন-ছাত্র ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

পরিবারের পক্ষে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বক্তব্য দেন মরহুমের মেঝ ছেলে অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান সিদ্দিক সাইফ। তিনি ক্যান্সার আক্রান্তদের জন্য চট্টগ্রামে একটি পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান এবং সিদ্দিক আহমেদের স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে সমাজসেবামূলক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য সাংবাদিক সিদ্দিক আহমেদ ফাউন্ডেশন গড়ার ঘোষণা দেন।