অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টিতে ব্যর্থ হলে গণ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন-দুদু

0
.

ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আতঙ্কিত সরকারের যে কোনো মুহূর্তে পতন ঘটতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।

তিনি আজ বুধবার সকালে (২৬ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে হাওর অঞ্চলকে জাতীয় দুর্যোগপূর্ণ এলাকা ঘোষণার দাবিতে জাতীয়তাবাদী দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন।

দুদু বলেন, ‘এই সরকার সকল দিক থেকে ব্যর্থ। ভারত সফরে দেশটিকে বাংলাদেশের সব কিছু বিকিয়ে দেয়ায় জনগণ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ সৃষ্টি হয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে তাদের পতন ঘটতে পারে। কারণ তাদের সময় ফুরিয়ে এসেছে।’

বিএনপি সরকারকে নির্বাচনের মাধ্যমে পরাজিত করতে চায় মন্তব্য করে শামসু্জ্জামান দুদু বলেন, ‘বিএনপি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন চায়, তার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে এই সরকারকেই। সেটি করতে ব্যর্থ হলে তুমুল গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে এই অবৈধ সরকারের পতন ঘটিয়ে খালেদা জিয়ার সরকার প্রতিষ্ঠিত করা হবে।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার পদত্যাগ দাবি করে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘সুনামগঞ্জ,কিশোরগঞ্জ,নেত্রকোনাসহ হাওর অঞ্চলের দুর্যোগ মোকাবেলায় মন্ত্রী এবং তার সচিব সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এই ব্যর্থতার দায়ে আমরা তাদের পদত্যাগ দাবি করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘হাওর অঞ্চলে বিপর্যয় সরকারের দুর্নীতির অংশ। যথা সময়ে তারা পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন-বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব,সাংবাদিক নেতা কাদের গনি চৌধুরী, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া,সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ,শহিদুল ইসলাম বাবুল, এবিএম মোশারফ হোসেন প্রমুখ।

হাওরাঞ্চলকে ‘দুর্গত এলাকা’ঘোষণার দাবি জানিয়ে কাদের গনি চৌধুরী বলেন, উন্নয়ন-বঞ্চিত এই হাওর এলাকার মানুষকে বরাবর বছরে একটি বোরো ফসলের ওপর নির্ভর করেই চলতে হয়েছে। আর সড়ক যোগাযোগ নেই বললেই চলে গোটা হাওর এলাকায়। ফলে বর্ষাকালে নৌকা ও হেমন্ত মওসুমে হেঁটে তাদের এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যেতে হয়। ঢাকাসহ অন্যান্য শহরে এবার মহা ধুমধামে বৈশাখের উৎসব পালন করছি, তখন হাওর এলাকার ঘরে ঘরে বিরাজ করছে কৃষকের কান্না।

তিস্তার পানির নায্য হিস্যা পাওয়ার ব্যাপারে যখন আমাদের কাকুতির শেষ নেই, তখন মমতা ব্যানার্জি বলছেন তিস্তাচুক্তি হলেও পানি পাওয়া যাবে না, কারণ তিস্তায় পানি নেই। ঠিক তখন তিস্তার পানিই বেড়ে বাংলাদেশে বৈশাখের আগেই প্রবেশ করে তলিয়ে দিয়েছে ক্ষেতের ফসল। উজানে বৃষ্টিপাত, ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢল এবং ওপারে গজলডোবার বাঁধের সবগুলো গেট ভারত খুলে দেয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

অপর দিকে আমাদের হাওর রক্ষাবাঁধগুলো নির্মাণে ঠিকাদারদের দুর্নীতির কারণে সময় মতো যথাযথভাবে নির্মিত হয়নি। ফলে এসব বাঁধ ভেঙে কিংবা বাঁধগুলো ডিঙিয়ে এবার সহজেই ঢলের পানি বোরো ফসলের ক্ষেতে ঢুকে পড়ে। আর এবার চৈত্রমাসেই ফসলের ক্ষেতে পানি ঢুকে পড়ায় বেশির ভাগ ফসলই ছিল কাঁচা বা আধপাকা। বলা যায়, এবারের বন্যার ক্ষতিটা আর সব বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি। সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় আগাম বন্যায় ৭৫ শতাংশ ফসল তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সুনামগঞ্জ জেলা। এ জেলায় প্রায় ৯০ শতাংশ ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সময় মতো বাঁধ নির্মাণ না করা, নদী ভরাট হওয়া, অসময়ে বৃষ্টিপাত, পাহাড়ি ঢল, প্রশাসনের অসহায়ত্ব ও আর্থিক দুর্নীতিকে ফসলহানির জন্য দায়ী করেন তিনি।