অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

পটিয়ার সাবেক ওসি রেফায়েতের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারী ও দুর্নীতির অভিযোগ স্ত্রীর

1
সংবাদ সন্মেলনে বক্তব্য রাখছেন স্ত্রী নাছরীন। ফাইল ছবিতে ওসি রেফায়েত উল্লাহ।

চট্টগ্রামের পটিয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরী অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী নাছরিন আক্তার।

২৯ এপ্রিল শনিবার খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বামীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন তিনি।

নাছরিন জানান, মাদক ব্যবসায়ী, চোরাকারবারি ও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে তার স্বামী কোটি কোটি টাকার ব্যাংক হিসাব, ফ্ল্যাটসহ অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। আর ওই সম্পদের উৎস খতিয়ে দেখতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

সম্মেলনে লিখিত বক্তৃতায় তিনি আরো বলেন, ১৯৯৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার লাকসাম থানার সাতবাড়িয়া গ্রামের রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে বিয়ে হয় তার। বিগত দুই বছর আগে চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া থানার ওসি হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় রেফায়েত মাদকাসক্ত ও মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জড়িত হয়ে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করে এবং হ্যাপী চৌধুরী নামে এক নারীর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে।

ফাইল ছবি নাছরীন ও ওসি রেফায়েত।

বিষয়গুলো জানার পর প্রতিবাদ করায় আমাকে দিনের পর দিন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। হ্যাপী চৌধুরীও হয়রানি শুরু করে। একপর্যায়ে হ্যাপী বলে ১৮ বছর সংসার করেছেন এখন স্বামী ছেড়ে দিন আমি সংসার করব। হ্যাপী ও রেফায়েতের সম্পর্কের বিষয়ে পুরো চট্টগ্রাম জানে। এসবের প্রতিবাদ করায় রেফায়েত আমার বৃদ্ধ বাবাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলে।

শুধু তাই নয়, আমার কাছ থেকে আমার দুই মেয়ে রাইসা ও নানজীবাকেও কেড়ে নেয়। আমার সব গহনা ও অর্থ প্রতারণার মাধ্যমে কেড়ে নিয়ে আমাকে মারধর করে, পরে কুমিল্লার পুলিশ সুপারের কথার পরিপ্রেক্ষিতে আমি এক কাপড়ে চলে আসতে বাধ্য হই।

রুমা আরও বলেন, আমার স্বামী এতই লম্পট যে আমাদের বিয়ের আগেও সে বহু নারী কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ছিল। যশোর কোতোয়ালি থানায় এসআই পদে চাকরি করা অবস্থায় নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা আমি নিজে উপস্থিত থেকে মিটিয়ে দেই। সন্তানদের কথা চিন্তা করে মুখ বুজে সব সহ্য করি। কিন্তু তাতেও রেফায়েত শান্ত না হওয়ায় বাধ্য হয়ে গত ১৮ জানুয়ারি খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা করি।

মামলার পর থেকে রেফায়েত আমাকে ও আমার ভাই মো. মনিরুজ্জামানকে হত্যার হুমকি দিয়ে চলেছে। এমনকি সন্ত্রাসীও ভাড়া করেছে ৫ লাখ টাকা দিয়ে। এ মামলায় ৩০ এপ্রিল দিন ধার্য রয়েছে। এ মামলা তুলে নেয়ার জন্য সে খুলনায় এসে হুমকি দিয়ে চলেছে। সে বলেছে, ‘৩০ তারিখ যদি জেলে যাই তাহলে বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুর কাহিনি বানিয়ে ছাড়ব’।

সংবাদ সম্মেলনে নাছরিন আক্তার অভিযোগ করেন, চট্টগ্রামে থাকতে রেফায়েত উল্লাহ সোনার বারের ব্যবসা করতেন। তাকে এ সব খারাপ পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে বহুবার চেষ্টা করেও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। স্বামীর আচরণের কারণে তাদের ১৮ বছরের সংসার ভেঙে যাচ্ছে। দুই মেয়েকে জোর করে তার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে। মেয়েদের কথা চিন্তা করে তিনি দীর্ঘদিন স্বামীর নির্যাতন সহ্য করেছেন।

গত ১৮ জানুয়ারি খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন নাছরিন আক্তার। ওই মামলায় ৭ মার্চ রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। ৩০ এপ্রিল রবিবার এই মামলায় শুনানির দিন ধার্য আছে। এ মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর রেফায়েত উল্লাহকে চট্টগ্রাম পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

যদিও এসব অভিযোগ মানতে নারাজ রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরী। মামলা দায়েরের পর গত ২৩ জানুয়ারি নাছরিনের বাড়ির ঠিকানায় তালাকনামা পাঠিয়ে দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নাছরিনের কিছু কর্মকাণ্ড ধরে ফেলার পর তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে সে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে।’

১ টি মন্তব্য
  1. Btcl Al-Amin বলেছেন

    পুলিশের জন্য এটা কোন ব্যাপার না