অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

কলেজ ভর্তি বানিজ্য ঠেকাতে ছাত্রলীগের অভিযোগ বাক্স স্থাপন

0
.

চলতি বছর চট্টগ্রাম মহানগরের কলেজ সমূহের একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি বানিজ্য বন্ধ ঠেকাতে চট্টগ্রাম মহানগর এলাকার ৬টি পয়েন্টে অভিযোগ বাক্স স্থাপন করার ঘোষনা দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, চট্টগ্রাম মহানগর।

বর্তমান সরকারের ঐতিহাসিক জাতীয় শিক্ষানীতি প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কার্যকর করার ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ হিসাবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম মহানগর আজ বুধবার নগরীর প্রেস ক্লাব চত্বরে বেলা সাড়ে ১২ ঘটিকায় “কলেজ ভর্তি দূর্নীতি” রুখে দিতে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এক মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে নগরীর ৬টি গুরুত্বপূর্ন এলাকায় “অভিযোগ বাক্স” স্থাপন কার্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষনা করেন।

নগরীর প্রেসক্লাবে বাতিঘর বইয়ের দোকান, চকবাজার মোড়ের মতি টাওয়ার, নগরীর জিইসি মোড়ের সানমার ওশ্যান সিটি, নগরীর আগ্রাবাদের হোটেল জামান, নগরীর নিউ মার্কেট মোড়ের ফুলকলি মিষ্টির দোকান ও বহদ্দারহাট মোড়ের ওয়েলফুডের শোরুমে নগর ছাত্রলীগের এই ৬টি অভিযোগ বাক্স সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

এই সময় নগর ছাত্রলীগের সমাবেশে বক্তারা বলেন “এ বছরের শুরুতে স্কুল ভর্তি অনিয়ম ঠেকাতে দীর্ঘ তিন মাস আমরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম মহানগর একই পন্থায় কাজ করেছি। নগরীর ৬টি স্থান অভিযোগ বাক্স বসিয়ে অভিভাবকদের সচেতন করার মাধ্যমে চট্টগ্রামের ৬৮ স্কুল ভর্তি অনিয়েম জড়িত থাকার প্রমান পেয়েছিলাম।

পরবর্তীতে তা জেলা প্রশাসন ও মাউশি সহ চট্টগ্রাম মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কাছে হস্তান্তর করেছি। জেলা প্রশাসন তা যাচাই বাছাই করে ৪৬ প্রতিষ্ঠানকে তলব করেছিল। অভিযুক্ত স্কুল সমূহকে নির্ধারিত ফি’র অতিরিক্ত গ্রহন করা টাকা ফেরতের নির্দেশ দিলে স্কুলে স্কুলে মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচী সহ অজস্র বিদ্যালয়ে পরিদর্শন করে নানামুখী তৎপরতায় লক্ষাধিক শিক্ষার্থীর পরিবারকে কোটি কোটি টাকা ফেরত নিয়ে দেওয়ার কাজে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে চট্টগ্রামের ছাত্রলীগ পরিবার।

স্কুল ভর্তি বানিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগে সরকার বর্তমানে চট্টগ্রামের ৬টি স্কুল বন্ধ করার যে ঘোষণা দিয়েছে তা যেমনি সাধুবাদ পেয়েছে ঠিক তেমনি শিক্ষা বানিজ্য প্রতিরোধে প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীক শাস্তির বিষয়টির পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান পরিচালনাতে সম্পৃক্তদের কিভাবে শাস্তির আওতায় আনা যায় তা খতিয়ে দেখার অনুরোধ করেন।

এ সময় নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু বলেন-আমরা ৬টি অভিযোগ বাক্সের মাধ্যমে অভিভাবকদের কলেজ ভর্তি বানিজ্য প্রতিরোধে সম্পৃক্ত করছি। আমরা মনে করি শেখ হাসিনার শিক্ষাবান্ধব সরকার শিক্ষা প্রশাসনের ঘুণে ধরা অব্যবস্থাপনায় আজ ঝাঁকুনি দিয়েছে। আর ঠিক এই সময় শিক্ষা বানিজ্য রুখতে ছাত্র শিক্ষক অভিভাবকদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা চট্টগ্রামের সকল কলেজের ভর্তি কার্যক্রমকে ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা নজরদারীর আওতায় নিয়ে আসব। ভর্তি কার্যক্রমের আবেদন পত্র শতভাগ অনলাইনে হতে হবে।

কলেজ ভর্তিতে অনলাইনে আবেদন করার পূর্বে ভর্তিচ্ছুদের অনুরোধ করব আপনার পছন্দের কলেজটি অনুমোদন বা স্বীকৃতি প্রাপ্ত কিনা তা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে যাচাই করুন। কলেজ ভর্তিতে যে কোন সমস্যার সম্মুখীন হলে কিংবা চট্টগ্রাম মহানগরে সরকার নির্ধারিত ৩০০০ টাকার অতিরিক্ত কোন কলেজ ভর্তি ফি সংগ্রহ করলে তা অভিযোগ আকারে আমাদের কাছে লিখে জমা দিন। আমরা অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রশাসনকে সম্পৃক্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।

এসময় সংগঠনের সাধারন সম্পাদক নূরুল আজিম রনি বলেন, চট্টগ্রামের কোন কলেজ একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি জন্য উন্নয়ন ফি নিতে পারবেনা। সর্বসাকূল্যে ৩০০০ টাকার উদ্ধে ভর্তি ফি সংগ্রহ করলে আমাদের জানাবেন। অনলাইনে ভর্তি ফর্ম পূরণে সময় নানা কৌশলের আশ্রয় নিয়ে কলেজগুলো আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষন করতে পারে।

এ বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখুন। ল্যাপটপ, ট্যাব, মাল্টিমিডিয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে কোন কলেজ প্রচারনা করলে আপনাদের বুঝে নিতে হবে সেই কলেজটি আপনাকে প্রতারণার ফাঁদ ফেলেছে। আমাদের কাছে এই বিষয়গুলো জানাবেন। কলেজের ড্রেস, বই, ডাইরীর অর্থ বাবদ অনেক কলেজ ভর্তিকালীন সময়ে আলাদা রশিদে টাকা গ্রহণ করেছে অতীতে। এই বিষয়টি স্পষ্টভাবে বানিজ্যকায়নের একটি ক্ষেত্র। ভর্তিকালীন সময়ে এরকম আলাদা রশিদে বা বিনা রশিদে অর্থ সংগ্রহ করলে আমাদের কাছে চিঠি লিখুন।

এমপিওভূক্ত স্কুল সমূহের অনেকগুলোতে কম্পিউটার ল্যাব, সরকারের বেতন ভুক্ত শিক্ষকদের নিশ্চয়তার বিজ্ঞাপন সাটিয়ে আপনাদের মস্তিস্কে স্কুলের প্রতি একটা কৃত্রিম আগ্রহ তৈরীর চেষ্টা করতে পারে যা পরবর্তীতে নানা খাতে টাকা সংগ্রহের মাধ্যম ও শিক্ষা বানিজ্য বলে বিবেচিত হবে। তাই বলছি সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক কলেজ ভর্তিতে ৩০০০ টাকার অতিরিক্ত একটা টাকাও আপনারা ভর্তি ফি হিসাবে প্রদান করবেন না।আপনাদের সকল অভিযোগ ছাত্রলীগের অভিযোগ বাক্সে জমা দিন।

এসময় নগর ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ওমরগণি এম.ই.এস কলেজ, ইসলামিয়া কলেজ, মিউনিসিপ্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অবকাঠামোগত দিক বিবেচনা করে সরকারীকরনের দাবী জানান।

এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নাঈম রনি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর, গোলাম সামদানী জনি, সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ আলম, খোরশেদ আলম মানিক, অর্থ সম্পাদক হাসানুল আলম সবুজ, স্কুলবিষয়ক সম্পাদক নিয়াজ মুহাম্মদ জুলফিকার, উপ-সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, শেখ সরফুদ্দীন সৌরভ, সহ-সম্পাদক রাহুল দাশ, সদস্য আরাফাত রুবেল, সালাহ উদ্দিন বাবু, সাজ্জাদ হোসেন, মহানগর ছাত্রলীগ নেতা বিকাশ দাশ, সিটি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা অনুপম ধর, এমইএস কলেজ ছাত্রলীগ নেতা আনিসুর রহমান, তোফায়েল আহমদ মামুন, ইসলামিয়া কলেজ ছাত্রলীগ নেতা সাহাবউদ্দিন আকিব, মোঃ রিয়াদ, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগ নেতা মোঃ মনির, আকলিমা আক্তার আখি, মহসিন কলেজ ছাত্রলীগ নেতা নাঈম উদ্দিন, মোস্তফা হাকিম ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলীগ নেতা ওয়াহিদুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।